• facebook
  • twitter
Friday, 20 September, 2024

অভিজিতের বিরুদ্ধে ফৌজদারি পদক্ষেপের দাবিতে কমিশনে তৃণমূল

‘গণতন্ত্র তাঁকে শাস্তি দেবে’, তোপ শশী পাঁজার নিজস্ব প্রতিনিধি— বর্তমানে সন্দেশখালি ইসু্যতে ক্রমাগত ব্যাকফুটে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপি৷ আর তাতেই প্রবল অস্বস্তি বেড়েছে গেরুয়া শিবিরে৷ এই আবহে এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুৎসিত ও অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ আর তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এবার

‘গণতন্ত্র তাঁকে শাস্তি দেবে’, তোপ শশী পাঁজার

নিজস্ব প্রতিনিধি— বর্তমানে সন্দেশখালি ইসু্যতে ক্রমাগত ব্যাকফুটে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপি৷ আর তাতেই প্রবল অস্বস্তি বেড়েছে গেরুয়া শিবিরে৷ এই আবহে এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুৎসিত ও অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ আর তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস৷ আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ এবং মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে ফৌজদারি ধারায় মামলা রুজু করার আবেদন জানান হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে৷ ঘটনাটি বুধবার ঘটলেও বৃহস্পতিবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল৷ এক্স হ্যান্ডেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন একাধিক তৃণমূল নেতৃত্ব৷ শুক্রবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘটনায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা৷

নির্বাচন কমিশনকে লেখা অভিযোগপত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি লঙ্ঘন করায়’ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করা হোক৷ সেইসঙ্গে, দলের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সবরকমের নির্বাচনী প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হোক৷ তিনি যেন কোনও জনসভা বা পদযাত্রা করতে না পারেন৷ পাশাপাশি, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ সমস্ত বিজেপি নেতা যেন এই ধরনের ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং আপত্তিকর ও অবমাননাকর মন্তব্য’ করা থেকে বিরত থাকেন৷ তবে ঠিক কি বলেছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি? হলদিয়ার চৈতন্যপুরে সভা করতে গিয়ে রেখা পাত্রের কথা টেনে এনে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে৷ বলেছিলেন, ‘রেখা পাত্রকে কেনা হয়েছিল ২০০০ টাকায়! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত টাকায় বিক্রি হও?’

অভিজিতের এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে শশী বলেন, ‘তিনি দাবি করছেন যে তিনি একজন বঙ্গ-সন্তান এবং তারপর এই ধরনের মন্তব্য করছেন৷ এটা আমাদের সকলের লজ্জা৷ একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হিসাবে তাঁর জানা উচিত, আরপিএ অনুসারে একজন প্রার্থী কখনই আর একজন ব্যক্তি সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না৷ তাঁর মনে মহিলাদের প্রতি এই ধরনের বিদ্বেষমূলক ভাবনা থাকতেই পারে, কিন্ত্ত, একজন প্রার্থী হিসাবে এবং একজন মানুষ হিসাবেও একজন মহিলাকে উদ্দেশ্য করে এই ধরনের অবমাননাকর মন্তব্য করা চরম ভুল৷’ বিজেপির অন্য প্রবীণ নেতারা কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি, সেই বিষয়ও প্রশ্ন তুলেছেন ডা. শশী পাঁজা৷ তাঁর কথায়, ‘নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, শুভেন্দু অধিকারী সকলেই তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন৷ তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি তো দূর, বরং তাঁকে এই ধরনের মন্তব্য করে যাওয়ার ক্ষেত্রে আরও উৎসাহিত করছেন৷ স্পষ্টতই বিজেপি নেতৃত্ব তাঁর এই আচরণকে সমর্থন করে৷ এভাবে চলতে পারে না৷’ একই সূত্রে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শশী পাঁজা৷ তিনি বলেন, ‘তিনি (অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) একজন প্রার্থী, যাঁর নমিনেশন ফাইল হয়ে গিয়েছে৷ শপথ নিয়েছেন তিনি৷ তাঁর এমন মন্তব্য শোভা পায়? নির্বাচন কমিশনে আমরা আগেও অনেক বিষয়ে অভিযোগ করেছি৷ কিন্ত্ত এটি কি আদেও নির্বাচন কমিশন নাকি মোদি কমিশন? মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট নাকি মোদি কোড অফ কন্ডাক্ট?’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘তা সত্ত্বেও আমাদের এখনও ভরসা আছে নির্বাচন কমিশনের ওপর৷ আশা করবো এ বিষয়ে কমিশন পদক্ষেপ নেবে৷’ এরপরই অভিজিতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে শশী বলেন, ‘বিজেপি নেতৃত্বরা ভাবেন যে যত কদর্য ভাষা ব্যবহার করবেন ততো তাড়াতাড়ি ওপরে উঠতে পারবেন৷ বিচারব্যবস্থার সাথে যুক্ত মানুষেরা অর্থাৎ বিচারপতিরা জানুক একজন প্রাক্তন বিচারপতির কতটা নীচ ভাবনাচিন্তা! তাঁর এই মন্তব্য দেশের লজ্জা৷ এই শাস্তি তাঁকে পেতেই হবে৷ গণতন্ত্র তাঁকে শাস্তি দেবে, তিনি নির্বাচনে হারবেন৷ আর আদর্শ আচরণবিধি এবং শালীনতা ভঙ্গের অপরাধে নির্বাচন কমিশনও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে৷’