রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কমিশনে তৃণমূল

নিজস্ব প্রতিনিধি – আজ থেকে শুরু হলো নির্বাচন৷ কিন্ত্ত শান্ত হলো না বঙ্গীয় রাজনীতি৷ এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানালো রাজ্যের শাসক দল৷ তৃণমূলের অভিযোগ, প্রচার বন্ধের পরও ‘সাইলেন্ট পিরিয়ড’ -এ প্রথম দফার নির্বাচনী কেন্দ্রে বেআইনিভাবে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি৷ পাশাপাশি সরকারি কাজে অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ করছেন রাজ্যপাল৷ যা নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী বেআইনি৷ যদিও শেষ পর্যন্ত নিজ সিদ্ধান্তে বদল ঘটিয়েছেন রাজ্যপাল৷

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রথম দফার ভোট হচ্ছে উত্তরবঙ্গে৷ ১৯শে এপ্রিল অর্থাৎ আজ আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুডি় এই তিন জেলায় রয়েছে ভোট৷ ভোটের দিন কোচবিহারেই থাকতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল৷ তবে ভোটের দিন তাঁকে সেখানে যেতে স্পষ্টত বারণ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ নিয়মানুযায়ী, ভোটের প্রচার পর্বের শেষে নির্বাচনী কেন্দ্রগুলিতে চলে ‘সাইলেন্স পিরিয়ড’৷ সেই সময় নির্বাচনী কেন্দ্রে ভোটের কাজে যুক্ত প্রশাসনিক কর্তা ও কর্মীরা ছাড়া ওপর কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা প্রশাসনিক নেতৃত্বদের ঘোরাফেরা করা ‘আদর্শ আচরণবিধি’ এর বিরুদ্ধ৷ ভোটের দিন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান অর্থাৎ রাজ্যপাল নির্বাচনী কেন্দ্রে থাকলে বিধি ভঙ্গ হবে, তাই নির্বাচন কমিশন রাজ্যপালের সিদ্ধান্তে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷ তবে এবার কোচবিহার নয়, ভোটের মধ্যেই আলিপুরদুয়ার যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন রাজ্যপাল, অভিযোগ তৃণমূলের৷ কমিশন যেভাবে তাঁর কোচবিহার যাওয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে, এবারও যাতে সেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়, এমন আর্জি জানিয়েছে তৃণমূল৷

তৃণমূলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবারে কমিশনে পাঠানো চিঠিতে সরাসরি অভিযোগ করা হয়েছে, ‘রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস অতীতে উত্তরবঙ্গে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ তিনি ভোটের আগের দিন এবং ভোটের দিন আলিপুরদুয়ারে উপস্থিত থাকলে অবাধ নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে৷ ফলে তাঁর এই সফরকে ভোট প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ বলেই গণ্য করা উচিত৷’ যদিও কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্যপালের গতিবিধির উপরে কমিশনের পক্ষ থেকে নজর রাখা হচ্ছে৷ রাজ্যপাল যদি আলিপুরদুয়ার যাওয়ার চেষ্টা করেন, সেক্ষেত্রে বাগডোগরা বিমানবন্দরে অথবা আলিপুরদুয়ারে ঢোকার আগেই তাঁকে আটকাতে পারে কমিশন৷ তা না হলে আলিপুরদুয়ারে ঢুকতে দেওয়া হলেও রাজ্যপালকে কোথাও ঘুরতে দেওয়া হবে না বলেই কমিশন সূত্রে খবর৷ যদিও রাজভবন সূত্রে খবর, এই বিতর্কের জেরে উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস৷ এ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি চান না তাঁর দফতরের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হোক৷


ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় দফার নির্বাচনী কেন্দ্রের স্পর্শকাতর বুথ গুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা কোচবিহারে ১৯৬ টি, আলিপুরদুয়ারে ১৫৯টি এবং জলপাইগুডি়তে ৩৫৯ টি রয়েছে৷ এই কেন্দ্রগুলিতে বাড়তি সতর্কতা রাখার নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের৷ এদিকে, ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়েছে কোচবিহারের দিনহাটা থেকে শীতলকুচি৷ ভেটাগুডি়র বাজারে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে৷ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে ঘাসফুল শিবির৷ সবমিলিয়ে নির্বাচনের মধ্যেই বিভিন্ন ইসু্যতে ফের সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি৷