নিজস্ব প্রতিনিধি— বারাসাতে জেলা শাসকের দফতরে নমিনেশন জমা দিয়ে বেড়িয়ে ফের রাজনৈতিক বাকযুদ্ধের ময়দানে নামলেম বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর এবং বনগাঁর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস৷ ঠাকুরবাড়ি পুজো দিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান বিশ্বজিৎ দাস৷ ঠাকুরবাড়ি পুজো দেওয়া নিয়ে একাধিকবার শান্তনু ঠাকুরের সাথে মতবিরোধ হয়েছে একাধিক তৃণমূল নেতৃত্বের৷ বাদ যাননি তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ও৷ এবার শান্তনুর আক্রমণের তির বিশ্বজিৎ দাসের দিকে৷ এই প্রসঙ্গেই বিশ্বজিৎ দাস কে কটাক্ষ করে শান্তনু বলেন, ‘একাধারে মতুয়া ভক্ত সমাজকে দেখাতে হবে আমি পরম ভক্ত, ওপর পাশে ঠাকুরবাড়ির সন্তানদেরই গালিগালাজ করবে৷ ঠাকুরবাড়ি না এলে ওঁদের উদ্ধার হবে না আবার ঠাকুরবাড়ি লোকেদেরই জেল খাটাবে৷’ যদিও এ প্রসঙ্গে চুপ করে থাকেননি বিশ্বজিৎ৷ তিনিও শান্তনুর বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে বলেন, ‘ওই বাড়ির সন্তানরা যে মহাপুরুষ হবেন তাঁর কোনও মানে নেই৷ হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ ঠাকুরের পরবর্তীতে তাঁদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি প্রমাণ করে দিয়েছেন তাঁদের (বিজেপির) বিধায়ক অসীম সরকারই৷’
দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের দিন শেখ শাহজাহানের গড় থেকে উদ্ধার হল একের পর এক আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিদেশি অস্ত্রও৷ সন্দেশখালি থেকে উদ্ধারকৃত এই আগ্নেয়াস্ত্র আদতে ভোটের সময় ব্যবহার করবে তৃণমূল, মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে এমনই দাবি করলেন শান্তনু ঠাকুর৷ শেখ শাহজাহানকে আক্রমণ শানিয়ে শান্তনু বলেন, “আমি তো বলে দিয়েছিলাম অনেক আগে, ও মায়ানমারে গেছে শক্তি জোগাতে৷ শক্তি জোগানো শেষ, স্ট্রাকচার তৈরী, এখন ধরা পড়েছে! তাঁর সাথে প্রশাসনের সম্পূর্ণ মদত আছে৷ ” এর পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিশ্বজিৎও৷ তিনি বলেন, “মাথার ঠিক নেই তাঁর৷ প্রচন্ড গরম পড়েছে৷ আগে তিনি ঠিক হোক, তারপর তার জবাব দেবো৷ ” এদিন উভয় প্রার্থীকে ঘিরেই রাস্তায় তৈরী হয় জনপ্লাবন৷ তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের অনুগামীরা এবং তৃণমূল কর্মীসমর্থকেরা এদিন ১৪৪ ধারা ভেঙেই ডিএম অফিস চত্বরে প্রবেশ করে৷ যদিও এই বিষয়টিকে ‘মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছাস’ বলেই গণ্য করেছেন বিশ্বজিৎ৷ এদিন মানুষের ব্যাপক উচ্ছাস, জনসমর্থন বিশ্বজিতের জয়ের নিশ্চয়তা বহুগুন বৃদ্ধি করেছে৷ তাঁর ভাষায়, “জয় টা কেবল সময়ের অপেক্ষা৷”
শুক্রের দুপুরে উভয় প্রার্থীই জেলা শাসকের দফতরে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান ঢাক ঢোল বাজিয়ে, বিপুল জনসমর্থন নিয়ে৷ দুই প্রার্থীর সাথেই বেরোয় মহা মিছিল৷ কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রাখা হয় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শাসকের দফতর৷ উভয়ই মতুয়া সম্প্রদায়কে সামনে রেখে নিজ মনোনয়ন পত্র জমা দেন৷
এদিন তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যসভা সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর, অশোকনগরের বিধায়ক তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী, বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ প্রমুখ৷ অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে ছিলেন বনগাঁ বিজেপি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মন্ডল, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া, গাইঘাটার বিধায়কের ভাই সুব্রত ঠাকুর প্রমুখ৷