টিকিট মেলেনি : দলের দুই প্রাক্তন সাংসদকে প্রচারে না পেয়ে তৃণমূলে অস্বস্তি

আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ৮ এপ্রিল– একদিকে বিজেপি অন্যদিকে সিপিএম, দুই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এরাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস-এর প্রচার এখন তুঙ্গে৷ পূর্ব বর্ধমান জেলার দুটি আসনেও কোন খামতি নেই৷ সব জায়গায় অবশ্য শীর্ষ নেতারা বার বার ঐক্যবদ্ধ লড়াই আর প্রচারে সামিল হবার কথা বলছেন৷ আর এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মহিলা সভানেত্রী শিখা সেনগুপ্ত, যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ৷ কিন্ত্ত তারই মধ্যে এক ভিন্ন ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বর্ধমানের লোকসভা আসনের বিদায়ী দুই সাংসদকে৷ একজন মমতাজ সংঘমিতা ও অন্যজন সুনীল মন্ডল৷ কোন প্রচারে সেভাবে তাদের দেখা না মেলায় ক্ষোভ এখন দলের অন্দরেই৷ তবে এ নিয়ে এখনই কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা৷ দুজনই এবার দলের টিকিট পাননি৷

তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনে এবার লড়াইয়ের ময়দানে কীর্তি আজাদ৷ প্রাক্তন এই ক্রিকেটারকে দল টিকিট দেওয়াতে গতবারের প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা বাদ পডে়ছেন৷ যদিও গত লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেস কে সামান্য ব্যাবধানে পরাজিত করে৷ তার আগের বারে দলের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন মমতাজ সংঘমিতা৷ অন্যদিকে বর্ধমান পূর্ব আসনে এবার গতবারের বিজয়ী সুনীল মন্ডল কে বাদ দিয়ে দল ডা. শর্মিলা সরকার কে প্রার্থী করেছে৷ আর দুই আসনেই দলের সব শ্রেণির নেতা নেত্রীরা প্রচারে দিন রাত এক করে লড়াইয়ের ময়দানে৷ কিন্ত্ত তারই মাঝে প্রাক্তন দুই সাংসদকে প্রচারে না মেলায় এক শ্রেণির নেতা নেত্রী ও কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ এখন তুঙ্গে৷ বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে আলাপ আলোচনা চললেও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে কেউই রাজি হননি৷ তবে ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েকজন নেতৃত্বের দাবি প্রার্থী ঘোষনার আগে পর্যন্ত তাও দু একটা দলীয় কর্মসূচিতে তাদের দেখা মিলতো৷

কিন্ত্ত যেই দল অন্যদের টিকিট দিয়েছে সেই তারা কোন কর্মকান্ডে নেই৷ এটা মেনে নেওয়া যায় না বলে দাবি তাদের৷ এব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতারা বিশেষ করে কলকাতার কেন্দ্রীয় নেতারা নজর রাখছে বলেও দাবি করেন তারা৷


সুনীল মন্ডল ও মমতাজ সংঘমিতা কে নিয়ে যখন দলে জোর চর্চা, ঠিক তখনই দলের সঙ্গে তারা দুরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ অনেকেরই৷ সুনীল মন্ডল আগে বাম দলের বিধায়ক ছিলেন৷ পরে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর দলবদল করেন৷ পরে তৃণমূল কংগ্রেস তাকে বর্ধমান পূর্ব আসনের প্রার্থী মনোনীত করে৷ গতবার ওই আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন৷ তবে এবার ওই আসনে দল আর তাকে টিকিট দেবে না, এরকমই শোনা যায় রাজনৈতিক মহলে৷ তবে প্রাথীদের নাম ঘোষনার শেষ মূহুর্তে তাকে বেশ কয়েকটি দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায়৷ বিশেষ করে বর্ধমান পূর্ব আসনের বিধানসভা ভিত্তিক কর্মসূচিতে অবশ্যই উপস্থিতি থাকতো৷ এ দাবি দলের অন্দরেই৷ আর তার পরেই দলের কোনো প্রচার কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে না বলে প্রশ্ন উঠেছে৷ এদিকে মাঝে একবার সুনীল মন্ডল বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন৷ পরে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসেন৷ তাই দল তাকে টিকিট দেয়নি, আবার প্রচারেও নেই এই দুই অংক মেলাতে চাইছেন অনেকেই৷ যদিও সুনীল মন্ডল ঘনিষ্ঠরা ওই জল্পনা উডি়য়ে দিয়েছেন৷ অন্যদিকে মমতাজ সংঘমিতা এখনই সে ভাবে দলের মনোনীত প্রার্থীর সমর্থনে না নামলেও আগামী দিনে তাকে পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অনেকেই৷ তবে সব নিয়ে ওই দুই বিদায়ী সাংসদের ভূমিকায় চাপান উতোর রয়েই গেছে৷ এদিকে যতদিন যাচ্ছে দুই তৃণমূল প্রার্থী তাদের প্রচারে ভিন্নতা আনতে নানা কর্মসূচি নিয়েছেন৷ এদিন কীর্তি আজাদকে দেখা গেল ঘোড়ার পিঠে চেপে গ্রামের রাস্তায় ভোটার দের মাঝে৷ অন্যজন ডাঃ শর্মিলা সরকার কালনার একটি গ্রামীণ হাটে জলসত্র খুলে সকলকে ঠান্ডা জল ও সরবৎ খাওয়াতে ব্যাস্ত৷