নিজস্ব প্রতিনিধি — প্রথম দফার নির্বাচন শুরু হচ্ছে আজ৷ ঠিক তার আগের দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুনিয়ে দিলেন তাঁর চরম আশঙ্কার কথা৷ মোদি জিতলে এটাই দেশে শেষ নির্বাচন৷ কারণ এবার কেন্দ্রে মোদির নেতৃত্বে সরকার তৈরি হলে, দেশে আর ভোটদানের মতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থাকবে না৷ একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকেও সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছেন, সিপিএম-কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানেই বিজেপির হাত শক্ত করা৷ তাই ওদের একটিও ভোট না দিয়ে তৃণমূলকেই ভোট দিন৷
বৃহস্পতিবার বালুরঘাটে দলীয় প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের নির্বাচনী মঞ্চ থেকে এজেন্সি হামলা নিয়ে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বললেন, বিজেপি বিরোধীদের দেখলেই জেলে ভরছে৷ গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় আশ্রয় এখন জেল৷ এরপর মোদি ক্ষমতায় এলে ভোট ব্যবস্থাকেই তুলে দিয়ে বিরোধীদের সবাইকে জেলে ভরে দেবে৷ আর বাকিদের এনআরসি করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে৷
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং হেমন্ত সোরেনকে জেলবন্দি করেছে বিজেপি৷ সেখানেও তৃণমূল সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে৷ এজেন্সি দিয়ে বিরোধীদের গ্রেফতার করাই মোদি সরকারের ঘরানা বলে মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাংলাতেও এজেন্সি গিয়ে তৃণমূলের দুই মন্ত্রীকে জেলবন্দি করা হয়েছে৷ কিন্ত্ত তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি বলে আগেই জানিয়েছিলেন মমতা৷ গোটা দেশে বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বলে মনে করেন মমতা৷
এর আগেও তৃণমূল সুপ্রিমো কংগ্রেস-বামফ্রন্ট এবং বিজেপিকে জগাই-মাধাই-গদাই বলে কটাক্ষ করেছেন৷ এদিনও বলেন, পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে জগাই, মাধাই, গদাই একসঙ্গে কাজ করেছে৷ তাই ওদের আর একটিও ভোট দেবেন না৷
গত মঙ্গলবার বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সমর্থনে বালুরঘাটে নির্বাচনী সভায় তৃণমূলের সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ বৃহস্পতিবার সেই বালুরঘাটেই মোদিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বালুরঘাটের নামও ঠিক করে উচ্চারণ করতে পারেন না, বলেন বেলুরঘাট৷ এমনকী এখানকার যে সাংসদের নামটাও ঠিক করে বলতে পারেননি৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বঙ্গ সংস্কৃতির যোগাযোগের অভাব রয়েছে, সেকথা জানাতেই এইসব মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
প্রথম দফার ভোট শুরু হওয়ার ঠিক প্রাক্কালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে ইন্ডিয়া জোটের কথা শোনা যায়৷ বিজেপিকে রুখতে সর্বভারতীয় স্তরে ভোটের আগে ইন্ডিয়া জোট তৈরি হয়েছিল৷ সেই জোটের প্রসঙ্গ টেনে মমতা জানালেন, এবার আর বিজেপি নয়, ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্বেই সরকার গঠন হবে৷ আর সেই সরকারকে নেতৃত্ব দেবে বাংলা৷ কারণ বিজেপিকে ঠেকাতে পারে একমাত্র বাংলাই৷