নিজস্ব প্রতিনিধি— রাজ্যের প্রথম দফার নির্বাচনের দিনই কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হিংসার ছবি ধরা পড়েছে৷ নিশীথ-উদয়নের কেন্দ্র কোচবিহারে চলেছে বেলাগাম হিংসার ঘটনা৷ কোথাও বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন, কোথাও আবার জখম হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব৷ তা সত্ত্বেও বিজেপির দাবি, ‘ভোটযন্ত্র খারাপ হওয়া ছাড়া বুথে গিয়ে গোলমাল হওয়ার তেমন কোনো অভিযোগ সেই অর্থে নেই৷ রাজ্য পুলিশ মরা কান্না কেঁদেছে৷’ শুক্রবার বিজেপি ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই দাবি করলেন দলের সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য এবং রাজ্য বিজেপির নির্বাচন কমিটির প্রধান শিশির বাজোরিয়া৷ তাঁদের দাবি, ‘তিনটি কেন্দ্রে নির্বাচন ছিল৷ এই কেন্দ্রের ভোটাররা বিপুল উৎসাহে সকাল থেকে ভোট দিয়েছেন৷ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ২০১৯ সালের রেকর্ডটিও টপকে যাবে এইবার৷ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা বলছে এই তিনটি আসনেই বিজেপি জিততে চলেছে৷ প্রথম দফার ভোটে তৃণমূলকে বিজেপি ৩-০ গেম দিচ্ছে৷’
জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভোটযন্ত্র খারাপ হওয়া ছাড়া বুথে গিয়ে গোলমাল হওয়ার তেমন কোনো অভিযোগ সেই অর্থে নেই৷ এটি সম্ভব হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতার কারণেই৷ ওয়েব ক্যামেরাও কাজ করেছে৷ এরপরও যদি কোনো স্থানে পুনঃনির্বাচনের প্রয়োজন হয়, তাও করা যাবে বলে খবর নির্বাচন কমিশন সূত্রে৷ এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসক শিবিরের দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে তিনি বলেন, বেশ কিছু স্থানে বিশেষ করে কোচবিহার জেলায় রাজ্যের শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকা রাজ্য পুলিশ মরা কান্না কেঁদেছে৷ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের শাসনে নির্বাচনের দিন তৃণমূলের কান্নাকাটি দেখে কেবল ওই তিন আসনের ভোটাররা নন, গোটা বাংলার ভোটাররাও পুলকিত৷ ওয়ার্ক রুমের ফোন নম্বরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফোন এসেছে৷ তাদের দাবি, পরবর্তী দফা গুলিতেও তৃণমূলের এমন কান্নাকাটি তারা দেখতে চান৷ সাধারণ মানুষের শাসক দলের গুন্ডাদের প্রতিরোধ করে ভোটকেন্দ্রে যাওয়াটা কাজ নয়, সেই কাজ নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর৷ তাই পরবর্তী দফা গুলিতে তাদের আরো তৎপর হতে হবে৷
প্রথম দফার নির্বাচন থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে বিজেপি নেতৃত্বরা বলেন, দ্বিতীয় দফা থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর আসল পরীক্ষা৷ উৎসবের মেজাজে মানুষকে ভোটদান কেন্দ্রে নিয়ে আসা এবং শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করানো নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর দায়িত্ব৷ জেলার সাংগঠনিক রিপোর্ট আসার পর বিজেপির তরফ থেকে জানানো হবে কোন বুথে পুনঃনির্বাচন করানো উচিৎ, যদিও এই দাবি প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই ভোট প্রক্রিয়া ব্যহত হয়ে গিয়েছে এমন কোনো কারণে নয়৷ পাশাপাশি এদিন বিজেপির তরফ থেকে করা অভিযোগ সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেন জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোথাও কোথাও ভোটারদের ভয় দেখানো, বুথে সমস্যা সৃষ্টি করা ইত্যাদি কারণে মোট ৪২১টি অভিযোগ জানানো হয়েছে বিজেপির তরফে৷ এর মধ্যে তিনশোটির বেশি অভিযোগ রয়েছে কোচবিহার জেলা থেকেই৷ জলপাইগুড়ি থেকে এসেছে ৪৫টি অভিযোগ, আলিপুরদুয়ার থেকে এসেছে ৭৩ টি অভিযোগ৷ এ বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে৷