বিচার চেয়ে পথে নামছেন আর জি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা

প্রতীকী ছবি

গত ৯ আগস্ট আর জি করের তরুণী চিকিৎসককে নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে তোলপাড় হয়েছে গোটা রাজ্য থেকে দেশ। এমনকি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাসিন্দারা এই জঘন্য ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ঘটনার পর গত ১৪ আগস্ট কলকাতা শহরে মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচি থেকে এই প্রতিবাদ আন্দোলন সারা দেশে যেন জন বিস্ফোরণের আকার নিয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘট থেকে শুরু করে দফায় দফায় বিভিন্ন সংগঠন ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের প্রতিবাদ লক্ষ্য করা যায় কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরে। সেই আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়তে চলেছে। এই অপরাধের সুবিচার চেয়ে এবার পথে নামছেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা মা। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি সেই কথাই ব্যক্ত করেছেন।

এদিন সদ্য সন্তানহারা বাবা-মা জানিয়েছেন, তাঁরা ছাত্রদের আন্দোলনের সঙ্গে সব সময়ই পাশে রয়েছেন। এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কান্না ভেজা গলায় কথা বলেন নির্যাতিতা তরুণীর মা। তাঁরা বলেন,’ছাত্র আন্দোলনের পাশে আমরা আছি। প্রয়োজন হলে আমরাও যোগ দেব। আমরা বিচার চাই। বিহিত চাই। নিরপেক্ষভাবে যে আমাদের ডাকবে, আমরা তাঁদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেব। আমরা ছাত্রদের সঙ্গে থাকতে চাই। আমাদের মেয়ে চলে গিয়েছে। মেডিক্যাল পড়ুয়াদের এখন আমরা ছেলেমেয়ে মনে করছি। আমরা সবসময় ওদের পাশে থাকব।’

প্রসঙ্গত গত ৭ আগস্ট থেকে টানা ৩৬ ঘন্টার ডিউটি দেওয়া হয় ওই নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসককে। ৮ আগস্ট তাঁর নাইট ডিউটি ছিল। এরপর মাঝরাতে অর্থাৎ রাত দুটো নাগাদ তিনি বিশ্রামে যান হাসপাতালেরই একটি কক্ষে। পরদিন সকালে সেমিনার হল থেকে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয়। সেসময় তাঁর দেহে বহু ক্ষত দেখা যায়। এবং দেহটি প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে অনুমান করেন, তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। যদিও মৃত মহিলা চিকিৎসকের বাড়িতে বিষয়টি প্রথমে জানানো হয়নি। মৃতার বাবা মা-কে প্রথমে অসুস্থ আছে বলে খবর দেওয়া হয়। তাঁরা উদ্বিগ্ন অবস্থায় আর জি কর হাসপাতালে এলেও প্রথমে তাঁদের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়নি। প্রথমে বলা হয়, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এরপর বেশ কয়েক ঘন্টা পর তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।


এদিন সাংবাদিকদের সামনে সেকথা উল্লেখ করে আর জি কর হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁরা অভিযোগ করেন, ঘটনার পর দশদিন কেটে গেলেও এখনও খুনের কোনও কিনারা হয়নি। সিবিআই-এর তদন্তে তেমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়নি। যদিও সিবিআই-এর তদন্তে আস্থা না হারালেও ধৈর্য হারাচ্ছেন বলে দাবি করেন তরুণী চিকিৎসকের বাবা। তদন্তকারী সংস্থার কাছে তাঁদের একটাই আর্জি, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কূলকিনারা করুক।’