• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

৪২ জন সরকারি চিকিৎসকের বদলির নির্দেশ স্থগিত

বাংলার রাজ্যপাল আমাদের প্রতিবাদ সমর্থনকারী সদস্যদের অন্যায়ভাবে বদলি করেছেন

আর জি কর-এ জুনিয়র মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যেই ৪২ জন চিকিৎসককে বদলির নির্দেশ দিয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যায় সেই নির্দেশ স্থগিত করে দিল রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর ৪২ জন চিকিৎসকের এই বদলির নির্দেশ জারি করে। যার মধ্যে কলকাতা শহরের হাসপাতালগুলির মধ্যে ১১ জন এবং জেলার আরও ৩১ জন চিকিৎসক ছিলেন। যা নিয়ে রাজ্যজুড়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক কারণ খুঁজতে শুরু করে।

গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, ওই চিকিৎসকরা আরজিকর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাঁদের বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এজন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তোলা হয়। তাদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এটি ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ’। যদিও শাসক দলের দাবি, সরকারি বিধি মেনে বিষয়টিতে রাজ্যপালের সম্মতি চাওয়া হয়। যদিও এবিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দাবি করেন,’বিষয়টি নিয়ে আমি কিছুই জানি না। তাই আমার কিছু বলার নেই।’

এদিকে এই নির্দেশের পর বিষয়টি নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব একটি প্রতিক্রিয়া দেয়। এবিষয়ে শনিবার দলের সর্ব ভারতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন। তিনি বলেন, ‘আজ যদি হিটলার, স্তালিন, ইন্দিরা গান্ধী, কিম জং ইলের মতো স্বৈরাচারীরা থাকতেন, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাহবা দিতেন। যে চিকিৎসকরা আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে হাসপাতালে মহিলাদের নিরাপত্তার দাবি তুলেছিলেন, তাঁদেরকেই বদলি করে দেওয়া হল।’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায় ইউনাইটেড ডক্টর্স ফ্রন্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর চিকিৎসকরা। এই সংগঠন এবিষয়ে এক্স হ্যান্ডেলে একটি বিবৃতি পোস্ট করে। আক্রমণ করে রাজ্যের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে। সেই পোস্টে সংগঠন দাবি করে, ‘বাংলার রাজ্যপাল আমাদের প্রতিবাদ সমর্থনকারী সদস্যদের অন্যায়ভাবে বদলি করছেন। যাঁরা আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন, বেছে বেছে সেইসব চিকিৎসকদের বদলি করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে আমাদের ন্যায় বিচার ও নিরাপত্তার দাবিকে স্তব্ধ করা যাবে না। আমরা আমাদের লড়াইয়ে দৃঢ়সংকল্প এবং ঐক্যবদ্ধ।’

পাশাপাশি, এই বদলির নির্দেশের পর বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানায় অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্স-এর সাধারণ সম্পাদক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এখন সব ডাক্তারই এই ঘটনার প্রতিবাদে নেমেছেন। তার মধ্যে কেউ কেউ বেশি সক্রিয়। আমাদের প্রোমোশন আটকে আছে। এই রকম পরিস্থিতি চলছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে। তার মধ্যে আমাদের বদলির নির্দেশ কেন?’

রাজ্যজুড়ে তীব্র এই রাজনৈতিক জল্পনার মধ্যেই ৪২ জন চিকিৎসকের এই বদলির নির্দেশ স্থগিত করে দিল নবান্ন। এবিষয়ে সন্ধ্যায় নতুন করে বিবৃতি জারি করে রাজ্য। ফলে চিকিৎসক মহলে এলো স্বস্তির খবর।