রাত পােহালেই নন্দীগ্রামে মেগা প্রেস্টিজ ফাইট। কারণ এখানে সম্মুখ সমরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার একদা বিশস্ত সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী। আর তাই এই কেন্দ্রের ভােটকে শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ করাই এখন কমিশনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই বলাইবাহুল্য এখানকার নিরাপত্তা নিয়ে কমিশন কোনও আপস করবে না।
তাই বুধবার থেকেই নন্দীগ্রামে শুরু হয়েছে নাকা চেকিং, ভিডিওগ্রাফি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহ্নিীর টহল চলছে। হেলিকপ্টারে নজরদারি চালাচ্ছে কমিশন। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। দিল্লি থেকে নন্দীগ্রামের ভােটের উপর নজরদারি চালাচ্ছে সুদীপ জৈন।
কমিশনের নির্দেশে প্রয়ােজনে সেক্টর অফিসার বাড়ানাে হবে। জানা গিয়েছে। মাইক্রো অবজারভারদের সংখ্যা বাড়ানাে হচ্ছে। অন্য এলাকা থেকে কোনও গাড়ি নন্দীগ্রামে ঢুকলে পুলিশ ও কমিশনের অফিক্সারেরা তাঁদের গাড়ি চেক করছে। এরই সঙ্গে ওই সমস্ত লােকেদের বাড়ির ঠিকানা এবং গাড়ির নম্বর সব নােট করে নেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, নন্দীগ্রামের ১৭ টি গ্রামপঞ্চায়েতের ৩৫৫ টি বুথকে আগেই স্পর্শকাতর হিসাবে ঘােষণা করা হয়েছিল। বেশ কিছু বুথকে আবার অতি স্পর্শকাতর হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে। নন্দীগ্রামের প্রতিটি বুথেই থাকবে মাইক্রো অবজারভার এবং এখানকার প্রতিটি বুথে তিনজন করে পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছে। মাইক নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় জানানাে হচ্ছে ১৪৪ ধারা জারি হওয়ার কথা।
বুধবার সন্ধ্যে ৬ টা থেকে আগামী শুক্রবার রাত ১২ টা পর্যন্ত জারি থাকবে এই ১৪৪ ধারা। অর্থাৎ বুধবার রাত থেকে ভােটপর্ব না মেটা পর্যন্ত নন্দীগ্রামে কোনওপ্রকার জমায়েত করা যাবে না দুটোর বেশি বাইক একসঙ্গে বেরােলে গ্রেফতার করা হবে।
শুধু তাই নয়, কেবলমাত্র নন্দীগ্রামের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এসপি পদমর্যাদার অফিসার নিয়ােগ করেছে কমিশন। পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই পুলিশকর্তা প্রবীণ ত্রিপাঠি এবং নগেন্দ্র ত্রিপাঠির হাতে।
কমিশন সূত্রের খবর, মােট ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ভােট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। সেই সঙ্গে থাকবেন রাজ্য পুলিশের কর্তারাও। মুখ্যমন্ত্রী এর মধ্যেই অভিযােগ করেছেন, বাইরে থেকে বহিরাগতরা ঢুকে নন্দীগ্রামের ভােটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
কমিশন সূত্রের খবর, মমতার এই অভিযােগকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। নন্দীগ্রামে ঢােকার চারটি পথ চন্ডীপুর, তল্লা, তেখালি ও খেজুরির বটতলায় নাকা চেকিং করছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সন্দেহজনক ব্যক্তিদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
তবে দেখা যাচ্ছে নন্দীগ্রামে প্রবেশের একাধিক রাস্তা এখনও অরক্ষিত। তালপাটি খালের উপর প্রায় ৫০ টি কালভার্ট আছে, যা দিয়ে অবাধে নন্দীগ্রামে প্রবেশ করা যায়।