জোট নির্ভর তৃতীয় মোদী সরকার মমতার মতোই জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের দিকে ঝুঁকতে চলেছে, ইঙ্গিত সংসদীয় বৈঠকে

দিল্লি, ৭ জুন:  জোট নির্ভর নতুন মোদী সরকার কোনদিকে ঝুঁকবে? দেশের পরিকাঠামো উন্নয়ন? আর্থিক সংস্কার? দুর্নীতি দমন? নাকি সরাসরি জনকল্যাণমূলক কোনও প্রকল্পের চিন্তা করছেন! এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বাড়ছে। কারণ, শুক্রবারের ভাষণে মোদী আগামী দিনে দেশে উন্নয়নের নতুন লক্ষ্যের কথা বলেন। যা থেকে থেকে ইঙ্গিত মেলে, আগামী দিনে মোদী দেশের পরিকাঠামো ও অর্থনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্যে না গিয়ে মমতার মতো জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের দিকে ঝুঁকতে চলেছেন। তিনি বলেন, “এনডিএ সরকারের কাজের কেন্দ্রবিন্দু গরিবের কল্যাণ। দক্ষ প্রশাসনের পাশাপাশি উন্নয়নই মূল লক্ষ্য। সমাজের তৃণমূল স্তরে গিয়ে কাজ করতে হবে।”

মোদির এই বক্তব্য থেকে এদিন একটি কথা খুবই স্পষ্ট হয়ে যায় তাঁর শরিক নির্ভর জোট সরকার ফের শক্তিশালী হওয়ার লক্ষ্যে দেশের গরিব মানুষের আস্থা অর্জনের কৌশল নিয়েছে। কারণ সদ্য সমাপ্ত হওয়া লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূলের বিপুল সাফল্য দেখে রাজনৈতিক মহলের মনে হয়েছে, দেশের মানুষের আর্থিক নিশ্চয়তা এই সাফল্যের মূল কারণ। আর সেজন্য মমতার লক্ষ্মীর ভান্ডার, সবুজসাথী, কন্যাশ্রী, সবুজশ্ৰী, কৃষকবন্ধুর মতো জনমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল্প প্রকল্পের মাধ্যমে জনপ্রিয় হওয়ার কৌশল অবলম্বন করতে চলেছেন মোদী। পাশাপাশি, কংগ্রেসের এবারের নির্বাচনী ইস্তাহারে দেশের গরিব মানুষের জন্য একটি বিশেষ প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছিল। কংগ্রেস নির্বাচনী ইস্তাহারে ঘোষণা করেছিল, তাঁরা কেন্দ্রের ক্ষমতায় এলে দেশের প্রতিটি পরিবারকে মাসে ন্যূনতম রোজগারের নিশ্চয়তা দেবে।

সেজন্য “মহালক্ষ্মী” নামে একটি প্রকল্প চালু করা হবে। যার মাধ্যমে কোনও শর্ত ছাড়াই দেশের গরিব পরিবারগুলিকে প্রতি বছর এক লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের আসন সংখ্যা ২২ থেকে বেড়ে ২৯ হয়েছে। অন্যদিকে বিরোধী দল বিজেপির আসন সংখ্যা ১৮ থেকে কমে ১২ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি সারাদেশে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা ৫২ থেকে বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ অর্থাৎ ৯৯ হয়ে গিয়েছে। এর থেকে রাজনৈতিক মহলের ধারণা হয়েছে, এইসব আর্থিক নিশ্চয়তা কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসকে নানা দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যেও বিপুল সাফল্য এনে দিয়েছে।


এদিন সংসদের সেন্ট্রাল হলে মোদির ভাষণে সেই গরিব কল্যাণের কথা উঠে আসে। তিনি তাঁর ভাষণে সাংসদদের বোঝান, সমাজের তৃণমূল স্তরে গিয়ে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ মানুষ সরাসরি লাভবান হতে পারে এমন কোনও প্রকল্পের ইঙ্গিত লক্ষ্য করা যাচ্ছে।