নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবারেই দিল্লি রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সেখানে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাজেটের নিন্দা করলেও নীতি আয়োগের মতো বৈঠকে যোগদানের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। সেখানে তাঁর নিজস্ব মতামত তুলে ধরবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই বৈঠকে মমতার বক্তব্যে বিশেষভাবে গুরুত্ব পেতে পারে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয়। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের পাওনা-গন্ডা ও অবহেলার প্রসঙ্গও গুরুত্ব পেতে পারে মমতার বক্তব্যে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী রওনা দেওয়ার সময় দাবি করেন, নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও।
প্রসঙ্গত পূর্বে মমতার দিল্লি সফরের দিন বৃহস্পতিবার ধার্য হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠকে বসতে পারেন বলেও বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়। সেজন্য নবান্নের সচিবালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর শনিবার মমতা নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর ছড়ায়। কিন্তু সম্প্রতি কংগ্রেস শাসিত তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করায়, মমতা-মোদির বৈঠক নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। একাধিক সংশয় দেখা দেয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়েও। কারণ বিষয়টির সঙ্গে ইন্ডিয়া জোটের নৈতিক মতাদর্শ জড়িত রয়েছে। যেহেতু তৃণমূল ইন্ডিয়া জোটের শরিক, সেজন্য তৃণমূল সুপ্রিমো শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেন, তার ওপর তাকিয়ে ছিল দেশের গোটা রাজনৈতিক মহল।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জল্পনা ছড়ায়, মমতা দিল্লি সফর হয়তো বাতিল করতে পারেন। আবার কেউ কেউ দাবি করেন, মমতা শুক্রবার দিল্লি সফরে যাবেন। কারণ সেখানে দলের সাংসদদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের একটি সময় সূচি পূর্ব থেকেই নির্ধারিত হয়ে আছে। দলীয় সাংসদদের সঙ্গে মমতার বৈঠক। শুক্রবার দিল্লির বঙ্গভবনে এই বৈঠক রয়েছে মমতার। সেখানে চলতি বাজেট অধিবেশনে তৃণমূলের কী স্ট্র্যাটেজি থাকবে, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অভ্যন্তরে তৃণমূলের অবস্থান কী হবে, একাধিক সময়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের যে মতান্তর দেখা দিয়েছে সেখানে দাঁড়িয়ে কীভাবে সমঝোতা তৈরি হবে, এই বিষয়গুলো দলীয় সাংসদদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন মমতা।
পাশাপাশি দিল্লিতে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও শুক্রবার ঘরোয়া ভাবে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। তা ছাড়াও দিল্লিতে বিরোধী শিবিরের কয়েক জন নেতা-নেত্রীর সঙ্গেও তাঁর দেখা করার কর্মসূচি রয়েছে।সেই বৈঠক সেরে পরের দিন শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, বৈঠক হতে পারে ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য শরিক দলের নেতাদের সঙ্গেও।