• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

২২৫ টাকার জন্য টানা ১৮ বছর আইনি লড়াইয়ে হাইকোর্টে জয় পেলেন বাস কন্ডাক্টর

নিজস্ব প্রতিনিধি— সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে টানা ১৮ বছর আইনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর জয় পেলেন৷ এ লড়াই ছিল সম্মান পুনরুদ্ধারে, লড়াই ছিল প্রাপ্য বকেয়া পাওয়ার৷ আদালত সুত্রে প্রকাশ, বরাহনগরের বাসিন্দা উত্তম কুমার ঠাকুর পেশায় একজন বাস কন্ডাক্টর৷ সিএসটিসির বরাহনগর কাশীপুর ডিপোতে কর্মরত ছিলেন৷ গত ২০০৫ সালের এক সকালে বাসের প্রথম যাত্রীকে টাকা খুচরো টাকা দেওয়ার

নিজস্ব প্রতিনিধি— সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে টানা ১৮ বছর আইনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর জয় পেলেন৷ এ লড়াই ছিল সম্মান পুনরুদ্ধারে, লড়াই ছিল প্রাপ্য বকেয়া পাওয়ার৷ আদালত সুত্রে প্রকাশ, বরাহনগরের বাসিন্দা উত্তম কুমার ঠাকুর পেশায় একজন বাস কন্ডাক্টর৷ সিএসটিসির বরাহনগর কাশীপুর ডিপোতে কর্মরত ছিলেন৷ গত ২০০৫ সালের এক সকালে বাসের প্রথম যাত্রীকে টাকা খুচরো টাকা দেওয়ার জন্য বাসের চালকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা খুচরো করেন তিনি৷ কিছুদূর বাস যাওয়ার পর মাঝ পথে সিএসটিসির কর্তব্যরত আধিকারিকরা চেকিংয়ের জন্য বাসে ওঠেন৷ আধিকারিকরা ২২৫ টাকা ক্যাশ বাক্সে বেশি পান তারা৷ কেন এই টাকা টিকিট বিক্রির থেকে বেশি হল? তা উত্তম বাবুর কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলেন৷ উত্তম বাবু তাদের জানিয়েছিলেন ৫০০ টাকা ড্রাইভারের কাছ থেকে খুচরো নিয়েছিলেন৷ সেই কথা মানেননি সিএসটিসির আধিকারিকরা৷ সিএসটিসির আধিকারিকরা উত্তম কুমার ঠাকুরের ব্যাগ বাজেয়াপ্ত করেন এবং তাঁকে শো কজ করে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন৷ কিন্ত্ত বিভাগীয় তদন্তের সময় তৎকালীন সেই বাস ড্রাইভারকে কেন কন্ডাক্টারের কাছে বাড়তি এই টাকা এল সেই প্রসঙ্গে কোন জিজ্ঞাসাবাদই করেননি কর্তব্যরত আধিকারিকরা বলে অভিযোগ৷ একতরফাভাবে উত্তমবাবুকে শুধু দোষী সাব্যস্তই নয় তার বেতন কমিয়ে দেওয়া হয় এবং তার সমস্ত বৈধ ভাতা বন্ধ করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়৷ সিএস টিসির চেয়ারম্যানের কাছে অ্যাপিল করেন উত্তমবাবু৷ কিন্ত্ত চেয়ারম্যান বা তার দফতর উত্তমবাবুর আপিল আবেদন শুনানি না করেই বিষয়টি দীর্ঘদিন ফেলে রাখেন বলে অভিযোগ৷ এরপরেই ২০০৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উত্তমবাবু৷ হাইকোর্টের নির্দেশেই সিএসটিসির অ্যাপিলেট সাইড উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে সিএসটিসির আধিকারিকদের যে নির্দেশ সেটাই বহাল রেখেছিল অ্যাফিলিয়েট সাইড৷ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উত্তম বাবু৷ সম্প্রতি হাইকোর্টের বিচারপতি পার্থ সারথী চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে উত্তম কুমার ঠাকুরের আইনজীবী জানান, -‘ উত্তমবাবুকে উপযুক্ত নথিপত্র না দিয়েই তার বক্তব্য না শুনে, একতরফা ভাবে সিএসটিসি কর্তৃপক্ষ তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে৷ শুধু তাই নয় সেদিন ঘটনার সময় উপস্থিত বাস ড্রাইভারকে কোনো রকম জিজ্ঞাসাবাদ করেনি সিএসটিসি’৷ অথচ উত্তম বাবুকে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিস রুলের ৫২ নম্বর ধারা না মেনেই একতরফাভাবে উত্তমবাবুর মাইনে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ বর্তমানে তাকে ১৫ হাজার টাকা বেতন কম দেওয়া হচ্ছে৷ হাইকোর্ট পরিবহন দফতরকে বারবার উত্তম ঠাকুরের ফাইল কোর্টে তলব করলেও পরিবহন দফতর তার কোন ফাইলই৷ আদালতে পেশ করতে পাচ্ছে না কেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন আশীষবাবু৷ তাহলে যাকে দোষী সাব্যস্ত করা হল আশ্চর্য্যজনকভাবে তারই ফাইল হারিয়ে গেল৷ সুতরাং সিএসটিসি কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছ ভাবে এই প্রক্রিয়া করেনি তাই তার বিরুদ্ধে ওটা সমস্ত অভিযোগ খারিজ খেয়ে দেওয়া হোক৷ রাজ্য পরিবহন দপ্তরের পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, সমস্ত পরিবহন দপ্তরের নিয়ম মেনে উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিন্ত্ত কিভাবে ফাইল হারিয়ে গেল সে বিষয়ে তিনি আদালতকে স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি৷ বিচারপতি পার্থসারথী চ্যাটার্জী নির্দেশ দেন উত্তম কুমার ঠাকুরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে খারিজ করে দেন৷