নিজস্ব প্রতিনিধি– রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার বাডি়তে বুধবারে হঠাৎ হাজির তৃণমূলত্যাগী বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়৷ শশীর প্রয়াত শ্বশুর রাজনীতিক অজিত পাঁজার ছবিতে মাল্য দান করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন তাপস৷ নির্বাচন চলাকালীন হঠাৎ কি উদ্দেশ্যে মন্ত্রীর বাড়ি গেলেন তৃণমূলত্যাগী বিজেপি প্রার্থী? এই প্রশ্ন উঠতেই জল্পনায় ইতি টেনেছেন শশী৷ শশীর সঙ্গে তাপস সৌজন্য বিনিময় করলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি বিজেপি প্রার্থীর৷
এ প্রসঙ্গে শশী পাঁজা বলেন, “সকালে তিনি তাঁর অফিসে বসেছিলেন৷ তাঁর শ্যামপুকুর বিধানসভা এলাকার বিষয়ে বৈঠক করছিলেন৷ হঠাৎ তিনি দেখেন তাপস রায় ঢুকছেন৷” স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে শশীও বিজেপি প্রার্থীকে তাঁর বাডি়তে স্বাগত জানিয়েছেন৷ এরপর শশীর শ্বশুর অজিত পাঁজার ছবিতে মালা দিয়ে নমস্কার করে বেরিয়ে যান তাপস৷ কিন্ত্ত হঠাৎ অজিত পাঁজার প্রতিই শ্রদ্ধা নিবেদন কেন? এ বিষয়ে শশী জানিয়েছেন, অজিত পাঁজা তাপসের গুরু ছিলেন৷ তাই ওঁনাকেই শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন৷ তবে শশীর সঙ্গে কোনো কথাই হয়নি তাপসের, এমনটাই দাবি মন্ত্রীর৷
এ প্রসঙ্গে তাপস বলেন, “আমার সৌভাগ্য হয়েছিল অজিত পাঁজার সান্নিধ্য পাওয়ার৷ ১৯৭৯ সাল থেকে এই বাডি়তে আমার নাগাডে় যাতায়াত ছিল৷ জয়া বৌদির (অজিত পাঁজার স্ত্রী) স্নেহ-আদর পেয়েছি৷ এ বাডি়র সকলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক৷ তাই তাঁকে প্রণাম করতে এসেছিলাম৷ শশী পাঁজার সঙ্গেও দেখা হল৷ একজন কাউন্সিলরের সঙ্গেও দেখা হয়েছে৷” তাপস আরও বলেন, তিনি শশী পাঁজার কাছেও ভোট প্রচার করেছেন৷ তাঁর ভাষায়, “আমার কাজই তো তাই৷ কলকাতা উত্তরের ১৫ লক্ষ মানুষের কাছে যাওয়া৷”
তবে সম্পূর্ণ বিষয়টি ঘিরে জল্পনার দানা বাধে যখন তাপস বলেন, কলকাতা উত্তরের ১৫ লক্ষ মানুষের কাছেই তিনি যাবেন শুধু দুজন বাদে৷ তবে সেই দুজন কারা তা স্পষ্ট করেননি তিনি৷ বরং এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “দুজন কারা সেটা বলব না, বুঝে নিন৷” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শশী পাঁজার বাড়িতে যাওয়ার আগে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে দেখা করতে গত সোমবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফ্ফর আহমেদ ভবনে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাপস৷ বিমান বসুর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাপস বলেন, “আমি বিমানদার আশীর্বাদ নিলাম৷ উনি আমাদের রাজ্যের সর্বজ্যেষ্ঠ, সৎ এবং নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক নেতা৷” তবে তিনি কোন দুজনের সাথে সাক্ষাৎ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা খোলসা করেননি৷ তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন তাপস৷ ভোট বৈতরণী পেরোতেই কি গুরুজনদের আশীর্বাদ নিতে তাঁদের বাড়ি যাচ্ছেন তাপস নাকি অন্য কোনো অভিপ্রায়, সেটি স্পষ্ট নয়৷ যদিও তাপসের ভাষায়, কেবল আশীর্বাদ নেওয়া নয়, ভোট প্রচারও অন্যতম উদ্দেশ্য৷
