আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ১৯ মে– একই মহকুমায় একদিকে অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো ভেঙে বিপত্তি আর অন্যদিকে জেটি নির্মাণে সুবিধা পূর্ব বর্ধমানের কালনাতে৷ আর জেটি নির্মাণে এবারের ভোট বাক্সে তৃণমূল কিছুটা হলেও সুবিধা পেয়েছে বলে দাবি৷ কালনা মহকুমার পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভায় ভাগীরথী নদী পারাপারের জন্য ছ’টি নতুন জেটি তৈরি হয়েছে৷ রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কালীনগর, উদয়গঞ্জ, মনমোহনপুর ও কিশোরীগঞ্জের কয়েকহাজার মানুষ খুশি৷ ফলে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের দখলে থাকা বিভিন্ন গ্রামে এবার জয়ের ব্যবধান অনেকটাই বাড়বে বলে শাসকদলের নেতারা আশাবাদী৷ সোমবার ওই সব এলাকায় মানুষজন তাদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে তৃণমূল নেতা নেত্রীরা দাবি করছেন৷ অন্যদিকে আবার ভিন্ন চিত্র নসরৎপুরে৷ এখানে ভোটের আগে থেকেই এলাকায় খডি় নদীর উপর সেতু ভেঙ্গে এখনও একটানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের৷ তার বিরূপ প্রভাব কি ফেলেছে ভোটে, সেটাও এখন রাজনৈতিক চর্চার বিষয় হয়ে দাঁডি়য়েছে৷
কালনার পূর্বস্থলী-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এবং স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উদ্যোগে এসমস্ত বিচ্ছিন্ন দ্বীপে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে৷ আগামী দিনে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া সহ আরও উন্নয়ন হবে৷ এই বিধানসভা আসনের কালনা-১ ব্লকের ধাত্রীগ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে কালীনগর ও উদয়গঞ্জ৷ পূর্বস্থলী-১ ব্লকের নসরৎপুর পঞ্চায়েতে পড়ে মনমোহনপুর ও কিশোরীগঞ্জ৷ এই চারটি গ্রামই কালনার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন৷ ভাগীরথী নদীর ওপারে এসমস্ত গ্রাম গুলি রয়েছে৷ এখানকার মানুষকে চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা ও অন্য প্রয়োজনে নদী পেরিয়ে ধাত্রীগ্রাম ও সমুদ্রগড় এলাকায় আসতে হয়৷ কয়েক দশক ধরে এই সমস্ত গ্রামের মানুষ বাঁশের মাচান দিয়ে নৌকায় নদী পারাপার করতেন৷ সম্প্রতি পরিবহণ দপ্তরের উদ্যোগে তিনটি ফেরিঘাটে ছয়টি স্থায়ী জেটি তৈরি হয়েছে৷ কালীনগর ও উদয়গঞ্জের জন্য একটি এবং মনমোহনপুর ও কিশোরীগঞ্জের জন্য একটি করে জেটি তৈরি হয়েছে৷ ঝুঁকিপুর্ণ বাঁশের মাচান দিয়ে যাতায়াতের দিন শেষ হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা খুশি৷
তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি কয়েক দশক ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত ছিল এই সমস্ত গ্রাম৷ রাজ্যে পালাবদলের পর রাস্তাঘাট, পানীয় জল ও বিদু্যৎ সহ নানা সরকারি সুবিধা এসমস্ত গ্রামে পৌঁছে গিয়েছে৷ গ্রামবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে বাঁশের মাচানের বদলে স্থায়ী জেটির দাবি জানিয়ে আসছিলেন৷ এবার সেই দাবিও পূরণ হওয়ায় তাদের ভোট পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী তৃণমূল নেতৃত্ব৷ গ্রামের বাসিন্দারা জানান স্বাধীনতার পর থেকে গ্রাম উন্নয়ন হয়নি৷ রাস্তাঘাট, বিদু্যৎ, পানীয় জল পরিষেবা তেমন ছিল না৷
রাস্তাঘাট কাঁচা ছিল৷ পানীয় জলের জন্য ভরসা ছিল কয়েকটি টিউবওয়েল৷ আজ গ্রামে পিচের রাস্তা, পাড়ায় পাড়ায় ঢালাই রাস্তা হয়েছে৷ তবে কালনা মহকুমারই নান্দাই অঞ্চলের নসরৎপুরে কয়েকদিন আগে খডি় নদীর উপর বাঁশের সাঁকো ভেঙ্গে পডে়৷ ফলে দুদিকের পাডে়র বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষজন চরম দুর্ভোগে পডে়ছেন৷ স্কুল কলেজ ব্যাবসা ও অনান্য কাজ কর্মে বের হয়ে যাতায়াতের জন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে জানানো হলেও কোন সুরাহা হয়নি৷ সূত্রের খবর ভোট থাকায় ওই সেতু মেরামতের কাজ আটকে আছে৷