নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুর, ২৭ এপ্রিল— আসানসোলে নির্বাচনী সভা শেষে শনিবার বিকালে হঠাৎতই মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে এসে পৌছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার বহরমপুর স্টেডিয়ামে নামে৷ সেখানে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়, বেলডাঙ্গায় বিধায়ক হাসানুজ্জামান, বহরমপুর, যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পাপাই ঘোষ, বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মহম্মদ আবসিনা প্রমুখ৷ মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টার থেকে নেমে গাড়িতে ওঠেন৷ জানালা দিয়ে বহরমপুর সহ জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্র নিয়েই কিছুক্ষণ কথা বলেন উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে৷ এরপর মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর কনভয় যায় স্টেডিয়াম সংলগ্ন শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি হোটেলে৷ সেখানেই রাত্রিবাস সহ তিনদিন থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রীর৷ রবিবার সকালে বহরমপুর থেকে মালদায় যাবেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী৷ সেখানে তার নির্বাচনী জনসভা রয়েছে৷ মালদা থেকে তিনি ফের বহরমপুরে ফিরে আসবেন৷ সোমবার সভা করবেন ভগবানগোলা এবং খড়গ্রামে৷ তারপর তিনি কলকাতায় ফিরে যাবেন৷
নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদেজর সঙ্গে নেত্রীর আসন্ন লোকসভা নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে৷ তিনি কিছু প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন৷ মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের তিনজন প্রার্থীই যাতে জয়ী হয়, বিশেষ করে বহরমপুরে ইউসুফ পাঠান যাতে বিপুল ভোটে জয়ী হন, সেটা সবাইকে দেখতে বললেন৷ আমাকে বহরমপুর টাউনটা দেখতে বলেছেন৷ গোটা জেলায় যেখানে যে সমস্ত নেতৃত্ব রয়েছে, যারা যারা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে, সবাইকে নিজের এলাকা দেখতে বলে গেছেন৷ আগামী সোমবার পর্যন্ত তিনি বহরমপুরে থাকবেন৷ তাঁর কয়েকটি রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে৷’
প্রসঙ্গত, আসানসোলের সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর হঠাৎই বহরমপুরে আসা এবং তিনদিন এখানে থাকার পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক তাৎপর্য৷ এবারে রাজ্যের অন্য জেলাগুলির মতো মুর্শিদাবাদ জেলাও নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে৷ এই জেলায় একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রেস্টিজ লড়াই হতে চলেছে৷ বহরমপুর কেন্দ্রে লড়ছেন পাঁচবারের সাংসদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী৷ তার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস দাঁড় করিয়েছে জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে৷ দু’জনের কাছেই এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে লড়াই করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের গতবারের জয়ী সাংসদ তথা মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত কাছের নেতা বলে সুুপরিচিত আবু তাহের খান৷ তার বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমেছেন বাম-কংগ্রেসের গতবারের জয়ী সাংসদ তথা মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত কাছের নেতা বলে সুপরিচিত আবু তাহের খান৷ তার বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমেছেন বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম৷ এই দু’জনের কাছেও এই ভোট অত্যন্ত প্রেস্টিজের বলেই মনে করছেন রাজনীতি সচেতন মানুষ৷ জঙ্গিপুর কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে গতবারের জয়ী প্রার্থী শিল্পপতি খলিলুর রহমানকে৷ এখানে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন কংগ্রেসের মুর্তুজা হোসেন৷ তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা আব্দুস সাত্তারের আত্মীয়৷ ফলে এই কেন্দ্রটিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷