• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

হঠাৎই অভিষেকের কপ্টারে আয়কর তল্লাশি!

প্রতিবাদ তৃণমূলের নিজস্ব প্রতিনিধি— তৃণমূলের বারংবারের অভিযোগ, নির্বাচনের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে অপব্যবহার করছে বিজেপি৷ সেই অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিতও হয়েছে বহুবার৷ রবিবারের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হলো না৷ রবিবার বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টারে আয়কর হানা! উল্লেখ্য, আজ অর্থাৎ সোমবার ওই কপ্টারে হলদিয়া যাওয়ার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের৷ সেই মতো রবিবার ওই

প্রতিবাদ তৃণমূলের

নিজস্ব প্রতিনিধি— তৃণমূলের বারংবারের অভিযোগ, নির্বাচনের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে অপব্যবহার করছে বিজেপি৷ সেই অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিতও হয়েছে বহুবার৷ রবিবারের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হলো না৷ রবিবার বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টারে আয়কর হানা! উল্লেখ্য, আজ অর্থাৎ সোমবার ওই কপ্টারে হলদিয়া যাওয়ার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের৷ সেই মতো রবিবার ওই কপ্টারের ট্রায়াল রান চলছিল বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে৷ সেই সময় ওই কপ্টারে আচমকাই তল্লাশি চালান আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা৷

তৃণমূল সূত্রে অভিযোগ, আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা ওই কপ্টারে তল্লাশি অভিযান চালানোর সময়ে অভিষেকের নিরাপত্তারক্ষীদের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেন এবং কপ্টারের ভিতরে রাখা প্রতিটি ব্যাগ খুলে দেখেন৷ কোন কারণের ভিত্তিতে এই তল্লাশি অভিযান তা নিরাপত্তারক্ষীরা জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেওয়া হয়না আধিকারিকদের তরফ থেকে৷ নিরাপত্তারক্ষীরা ভিডিও করতে গেলে তাদের রীতিমতো বাধা দেওয়া হয় এবং ভিডিও ডিলিট করার জন্য বাধ্য করা হয়৷ এভাবেই নিরাপত্তারক্ষীরা আয়কর আধিকারিকদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন৷ এমনকি দীর্ঘক্ষণ কপ্টারটিকে আটক করে রাখা হয়, ট্রায়াল রানের অনুমতি দেওয়া হয়না আয়কর আধিকারিকদের তরফ থেকে৷ তৃণমূলের অভিযোগ, বচসা চলাকালীন অভিষেকের কপ্টারটিকে বেআইনিভাবে আটকে রাখার হুমকিও দেন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হেলিকপ্টারের ভিতরে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালিয়েও শেষ পর্যন্ত কিছুই পাওয়া যায়নি৷

এই ঘটনায় সরব হয়ে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এক্স বাণে বিদ্ধ করেছেন বিজেপিকে৷ তিনি টু্যইট করে লিখেছিলেন, ‘‘এনআইএ-র ডিজি এবং এসপিকে সরানোর বদলে আজ নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপি তাদের ধামাধারী আয়কর দফতরের আধিকারিকদের পাঠিয়েছিল আমার হেলিকপ্টারে তল্লাশি চালাতে৷ যদিও তাতে কোনও লাভ হয়নি৷ কারণ, কিছুই পাওয়া যায়নি৷ জমিদাররা যতই বাংলায় বলপ্রয়োগ করুক না কেন, বাংলার প্রতিরোধকে দুর্বল করা যাবে না৷’’ নববর্ষের বিকেলে আয়কর দপ্তরের এহেন কাণ্ডে স্বভাবতই তোলপাড় হয়ে গিয়েছে বঙ্গীয় রাজনৈতিক মহল৷ দলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন থেকে রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সকলেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধে বিজেপি বিরোধী তোপ দেগেছেন৷

দলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘‘বেপরোয়া লোকজন কি কপ্টারে কিছু ফল এবং মাছের স্যান্ডউইচ পেয়েছে?’’ তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ আয়কর আধিকারিকদের ‘হাল্লা রাজার সেনা’ এর সাথে তুলনা করে বলেছেন, ‘‘এটি কোন প্রতিহিংসার রাজনীতি হচ্ছে? বিজেপি হারছে, তাই কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে এভাবেই বেআইনিভাবে, পৈশাচিকভাবে তান্ডব করতে, গুন্ডামি করতে বাধ্য করছে৷ আমরা এই কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা করছি৷’’ রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যকি খুঁজছেন আপনারা? আর কে পাঠিয়েছে আপনাদের কে? এটি এখন একদম স্পষ্ট, বিজেপি ঘাবড়ে রয়েছে এবং তাঁরা পরাজিত হচ্ছে বলেই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে এভাবেই অপব্যবহার করছে৷ এ রাজ্যের ডিএম, এসপিকে হটানো যায়৷ এনআইএ-র ডিরেক্টরকে কেন সরানো যায় না? এ জন্য কমিশনে গিয়েছিলাম আমরা৷ এভাবে স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়, যেখানে বিরোধীদের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেওয়া হচ্ছে না৷ কিন্ত্ত তা সত্ত্বেও তৃণমূল কংগ্রেস লড়বে৷’’ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে বলেন, ‘‘মোদী এবং শাহ এখন নির্লজ্জভাবে আয়কর বিভাগ ব্যবহার করে একজন প্রার্থীকে ভোটের মাত্র ৫ দিন আগে অবাধে প্রচার করা থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করছে৷ নির্বাচন কমিশন বরাবরের মতো যে ব্যক্তি তাঁদের বেছে নিয়েছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে নিয়োগ দিয়েছেন, তাঁদেরকে সেবা দিচ্ছেন এবং চোখ বন্ধ করে রেখেছেন৷’’ পাশাপাশি বিজেপিকে ‘বাংলা-বিরোধী’ বলে এক্স হ্যান্ডলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ৷ জানিয়েছেন, কোনও কৌশলই তৃণমূলকে থামাতে পারবে না৷ এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এনিয়ে পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে পারে দল৷

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভা ভোট ঘোষণার পর থেকেই দেশের অবিজেপি রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বিরোধীদের চাপে রাখতে চাইছে বিজেপি৷ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি হোক কিংবা ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতারি তারই প্রমান৷ পাশাপাশি বাংলাতেও একাধিক তৃণমূল নেতৃত্বের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি, আবার কখনও তৃণমূল নেতৃত্বদের ডেকে পাঠাচ্ছেন নির্বাচনের মুখে৷ আর রবিবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে তল্লাশি চালানো হল অভিষেকের হেলিকপ্টারে৷ সব মিলিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি৷