নিজস্ব প্রতিনিধি— নন্দীগ্রামে খুন পরবর্তীতে উত্তপ্ত এলাকা৷ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, আইসি ‘খুনি’দের সঙ্গে মিটিং করেছেন, তাঁকে ‘মজা দেখাবেন’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে দাবি তোলেন, অবিলম্বে সাসপেন্ড করা উচিত আইসিকে৷ এই মর্মে তিনি নন্দীগ্রাম থানায় আবেদনপত্রও লিখে আসেন৷ এদিকে, বিজেপি কর্মীর খুনের পরিপ্রেক্ষিতে নন্দীগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠাল বিজেপি৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত হিসেবে দেবকুমার রায় নামে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে আটক করা হয়েছে৷ নন্দীগ্রাম নিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে বিজেপি৷ গত বুধবার রাতে এলাকায় গন্ডগোলের মাঝে পডে় মৃতু্য হয়েছে নন্দীগ্রামের বিজেপি কর্মী রথীবালা আডি়র৷ গুরুতর আহত তাঁর ছেলে সঞ্জয়ও৷ তা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তপ্ত নন্দীগ্রাম৷
আগামী ২৫ মে, শনিবার নন্দীগ্রাম তথা তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে লোকসভা ভোট৷ তার ঠিক আগে বিজেপি কর্মীর খুন স্বাভাবিকভাবেই ভোট পরিস্থিতির পারদ চডি়য়েছে৷ সকাল থেকেই রাস্তা অবরোধ করে, টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে নামেন বিজেপি কর্মীরা৷ বিকেলের দিকে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয়ে ওঠে৷ নন্দীগ্রাম থানায় ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব দেখান শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর অনুগামীরা৷ থানায় ঢোকার আগে সেখানে দাঁড়ানো কেন্দ্রীয় বাহিনীর কয়েকজন জওয়ানের সঙ্গে বচসায় জড়ান শুভেন্দু৷ এর পর থানায় ঢুকে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে তিনি বলেন, ”খুনিরা থানায় এসেছিল৷ যারা খুন করেছে, রথীবালা আডি় শুধু সঞ্জয় আডি়র মা নন, তিনি আমার মা৷ খুনিদের সঙ্গে এখনই মিটিং করেছেন৷ আমি জানতে চাই, খুনির সঙ্গে এখনই মিটিং করেছেন কেন? মজা দেখাব আইসিকে!” এধরনের কথা বলে রীতিমতো হম্বিতম্বি করতে থাকেন৷ থানায় বসে অভিযোগপত্র লিখে জমা দেন৷ বেরিয়ে আবার হাসপাতালে যান আহতদের দেখতে৷
নন্দীগ্রামে ভোটের ঠিক আগে এই রাজনৈতিক হত্যার ঘটনায় কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি৷ তাদের দাবি, নন্দীগ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে৷ এবিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক কমিশন৷ অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের পালটা তোপ, ভোটের আগে নন্দীগ্রামকে অশান্ত করার ছক কষছে বিজেপি৷ তাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় শুভেন্দু বলেন, নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ খুনিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে৷ নিহত রথিবালা আডি়র মেয়ে আর ছেলে কোর্টে যাবে মায়ের খুনের বিচার চাইতে৷ তিনি আরও বলেন, পশ্চিমঙ্গের তফসিলি জাতির মানুষের কোনও সম্মান নেই৷ ইচ্ছেকৃতভাবে খুন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷ তিনি আরও বলেন, ‘মজা দেখাব আইসিকে!’ রথীবালা আডি়র মৃতু্যর পরই বিজেপির স্থানীয় নেতা মেঘনাদ পাল গোটা ঘটনার দায় চাপিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে৷
