জেলার দুটি আসনেই জয়, চতুর্থবারেও সংসদে যাচ্ছেন শতাব্দী

খায়রুল আনাম: জেলা বীরভূমের বোলপুর ও বীরভূম দু’টি লোকসভা আসনেই প্রত্যাশা মতো জয় পেল শাসক শিবির তৃণমূল কংগ্রেস৷ এক সময় তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার দলীয় রাজনীতি থেকে শুরু করে যে কোনও ভোটের রণকৌশল তৈরী করতেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ গোরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে তিহাড় জেলে বন্দি হওয়ার পরে, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের শাসনকালে এই প্রথম লোকসভা ভোটে লড়লো তৃণমূল কংগ্রেস৷ তাই এবার ভোটের ফলাফল নিয়ে একটা প্রশ্ন উঠলেও তৃণমূল কংগ্রেসের জয় নিয়ে তেমন কোনও সংশয় ছিলো না৷ এবার তৃৃণমূল কংগ্রেস জেলার দু’টি লোকসভা আসনের কোনওটিতেই প্রার্থী করেনি৷ বোলপুরে লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস যেমন প্রার্থী বদল না করে বিদায়ী সাংসদ অসিতকুমার মালকে দ্বিতীয়বার প্রার্থী করে তেমনি বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে দলের তিনবারের তারকা সাংসদ শতাব্দী রায়কে চতুর্থবারের জন্য প্রার্থী করে সংসদে পাঠাতে বদ্ধপরিকর হয় শাসক শিবির৷ শতাব্দী রায়কে জেতাতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার জেলায় এসে নির্বাচনী সভা করে যান৷ অপর দিকে দলীয় প্রার্থীদের জেতাতে বিজেপির নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ থেকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে নিয়ে এসে জেলায় নির্বাচনী সভা করে গেলেও, বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী পিয়া সাহা ও বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে দেবতনু ভট্টাচার্যকে জেতাতে পারলো না বিজেপি৷ অপর দিকে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে বাম-কংগ্রেস জোটের সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধান আর বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে এই জোটের প্রার্থী কংগ্রেসের মিল্টন রশিদ তেমন কোনও দাগ-ই কাটতে পারলেন না৷

লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভোট ঝাঁপি ভরিয়ে শিল্পহীন জেলার মানুষ জেলার দু’টি লোকসভা আসন আবারও তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে তুলে দিলো দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনির বাস্তবায়নের স্বপ্ন বুকে নিয়ে৷ জয়ের পরে শতাব্দী রায় বীরভূমের মাটিকে প্রণাম করে বলেন, এই জয়ের কাণ্ডারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর বীরভূমের মানুষ৷ সেইসাথে তিনি জানিয়ে দেন যে, ভোট প্রচারের সময় তিনি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে যে সব অভাব-অভিযোগগুলি শুনেছিলেন, সেইসব জায়গায় তিনি গিয়ে সেইসব সমস্যা সমাধানের বিষয়ে উদ্যোগী হবেন৷ এদিন তিনি এক শ্রেণির টিভি চ্যানেলের সমালোচনা করে বলেন, যাঁরা তাঁকে এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের এবার তিনদিন টিভি চ্যানেল বন্ধ রেখে আত্মসমীক্ষা করার সময় হয়েছে৷