নিজস্ব প্রতিনিধি— সাংবাদিক বৈঠক করে ডিজির অপসারণ নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা ঘাসফুলের৷ রাজ্য পুলিশের ডিজির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে সরব তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ৷ সোমবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুনাল ঘোষ এবং মমতা বালা ঠাকুর৷ সেই বৈঠক থেকেই কুনাল বলেছেন, ‘কমিশনকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে বিজেপি!’
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিককে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে রাজীব কুমারকে ডিজির পদ থেকে সরিয়ে দিতে বলা হয়েছে৷ তবে এই সময় ডিজির দায়িত্ব সামলাবেন কে? রাজ্য পুলিশের নতুন ডিজি নিয়োগের আগে পর্যন্ত এই দায়িত্ব সামলাবেন রাজীবের ঠিক নীচের পদে যে অফিসার রয়েছেন তিনি৷
সাংবাদিক বৈঠক থেকে এ প্রসঙ্গেই মন্তব্য করেছেন কুনাল৷ তিনি বলেছেন, ‘এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলিকে বিজেপি দখল করে নিতে চাইছে৷ নির্বাচন কমিশনে বিচারবিভাগের শীর্ষ প্রতিনিধিকে সরিয়ে নিজেদের লোক বসানোর ব্যবস্থাপনা করেছে বিজেপি৷ ওরা নিজস্ব অ্যাজেন্ডা অনুযায়ী কাজ করছে৷ ভোট ঘোষণার পর প্রথমেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ৷ ডিজিকে সরিয়ে দেওয়া হল৷ বিজেপি আসলে এই ধরনের সংস্থাকে দখল করে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে৷’
বিজেপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ আগেও তুলেছে তৃণমূল৷ ইডি, সিবিআইয়ের মতো সংস্থাগুলিও বাদ পড়েনি ঘাসফুলের নিশানা থেকে৷ এ বার ডিজির অপসারণেও কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কুণাল৷ তিন মাস আগেই ডিজির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজীবকে৷ কিছু দিন আগে উত্তপ্ত সন্দেশখালিতেও গিয়েছিলেন তিনি৷ তাহলে মাস তিনেকেই মধ্যেই কেন তাঁর পদ থেকে তাঁকে অপসারিত করা হচ্ছে? প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে জোড়াফুল৷ নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের পেছনে যে পদ্মশিবিরের হাত আছে এমনটাই সন্দেহ করছে তৃণমূল৷
তবে তৃণমূলের এ ধরণের সন্দেহের কারণ কি? রাজীবের অতীত ঘেঁটে দেখলেই বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাবে৷ ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজীবকে তদানীন্তন পদ থেকে সরানো হয়েছিল৷ ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট ঘোষণার পর রাজীবকে ডেপুটেশনে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ গত ডিসেম্বরে রাজ্য পুলিশের নয়া ডিজি হিসাবে নিয়োগ করা হয় রাজীবকে, এবারের নির্বাচনের আগে ফের তাঁর অপসারণ৷ সাধারণত নিয়ম অনুযায়ী, ভোটের মুখে কমিশনের নির্দেশে এ ধরনের বদলি হলে ভোট শেষে তাঁকে পুনরায় আগের পদে বহাল করা হয়৷ কিন্ত্ত রাজীব এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী! তাঁকে পুনরায় ডিজি পদে নিযুক্ত করা হবে কিনা এমন কোনো নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে৷ ফলে, স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের মুখে রাজ্য পুলিশের ডিজি পদ থেকে অপসারণের ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে রাজ্য রাজনীতিতে৷