সন্দীপ ঘোষকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করা হোক, দাবি তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের

আর জি কর-এর সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূলে সাংসদ জহর সরকারের। যা নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নতুন করে জল্পনা। তিনি এই অধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করার দাবি জানিয়েছেন। রাজ্য সভার সাংসদ জহর সরকার বলেন, সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে রাজ্য সরকার আগেই তদন্ত করতে পারতো। এবিষয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে সন্দীপ ঘোষের সময়ে আরজিকর হাসপাতালে যে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খোলেন। এবিষয়ে তদন্তের জন্য যে সিট গঠন করা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমের সেই পোস্টে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। আর এই মন্তব্যের মাঝেই রাজ্য সরকারের কাছে এবার সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করার বিষয়টি গুরুত্ব পেতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

পাশাপাশি আর জি কর মেডিক্যাল-এ নিহত নির্যাতিতা চিকিৎসকের নাম-পরিচয় প্রকাশ নিয়েও অভিযুক্ত হলেন সন্দীপ ঘোষ। তিনি ঘটনার পর বিবৃতি দিতে গিয়ে ওই মহিলা চিকিৎসকের নাম-পরিচয় ফাঁস করেন বলে অভিযোগ। এজন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল কলকাতা পুলিশ। এবিষয়ে চলতি সপ্তাহেই তাঁর বিরুদ্ধে একটি নোটিস দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। কর্তব্যরত ওই ডাক্তার ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানতে সন্দীপকে চার দিনে পাঁচবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রথম ৪ দফায় প্রায় ৫০ ঘন্টা ধরে জেরা করা হয়। এরপর মঙ্গলবার আরও একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। সিবিআই খতিয়ে দেখতে চাইছে, এই ঘটনায় সন্দীপ ঘোষের কী ভূমিকা ছিল।

আর জি কর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ থাকাকালীন বিস্তর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সন্দীপের বিরুদ্ধে। চিকিৎসক খুনে সিবিআই তদন্তের মধ্যেই, আর জি কর মেডিক্যালে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে সিট গঠন করেছে রাজ্য সরকার। এবার পৃথক মামলা রুজু করে সন্দীপ ঘোষকে নোটিস দিতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। এদিকে আর জি কর-এর প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলী সন্দীপের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ছাত্রদের ফেল করানো থেকে শুরু করে তাঁদেরকে বসিয়ে মদ খাওয়ানোর মতো কাজে যুক্ত ছিলেন সন্দীপ ঘোষ। এছাড়া আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের টেন্ডারের ২০ শতাংশ কমিশন খাওয়ার অভিযোগ করেন আখতার আলী। তিনি বলেন, ‘পরে যখন ওনার সঙ্গে আমার বিতর্ক হয়, তখন আমি এটা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে গিয়ে একটা রিভেঞ্জ জানিয়েছিলাম।’


এদিকে তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকার তদন্ত করলেও দোষ, না করলেও দোষ। আসলে আমাদের বিরোধীরা কী চায়?’ তিনি বলেন, অন্যান্যদের ন্যায় উটের মতো মাটিতে মুখ বুজে থাকার স্বভাব আমাদের রাজ্য সরকারের নেই। পশ্চিমবঙ্গ সরকার সদিচ্ছা রাখে, কোথাও যদি অভিযোগ আসে, সেই অভিযোগ কংক্রিট হলে তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। এমনকি ২০২১ সালের ঘটনারও তিন বছর পরে অর্থাৎ ২০২৪ সালে তদন্ত হচ্ছে বলে দাবি করেন দেবাংশু। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি নিজেদের দুর্নীতির তদন্ত আজ অবধি করতে পারেনি। আর সিপিএম তো দিনের পর দিন এই দুর্নীতিকে আশকরা দিয়ে গিয়েছে।