• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

কারকারেকে নিয়ে মন্তব্য করেও পিছু হঠলেন প্রজ্ঞা

২৬/১১ মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডের(এটিএস)প্রধান হেমন্ত কারকারেকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় বিপাকে পড়েছেন পদ্ম প্রার্থী।

সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং(Photo: IANS)

মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞাকে নােটিশ পাঠাল নির্বাচন কমিশন।২৬/১১ মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডের(এটিএস)প্রধান হেমন্ত কারকারেকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় বিপাকে পড়েছেন পদ্ম প্রার্থী।শেষমেশ এই মন্তব্যকে ঘিরে সারা দেশে বিতর্কের সূত্রপাত হয়,যার ফলে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা।পাশাপাশি,২৬/১১-র মুম্বই হামলার ঘটনার নায়কের উদ্দেশে করা সমস্ত মন্তব্য তিনি ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন প্রজ্ঞা।

এর আগে প্রজ্ঞার বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয় সারা দেশে।অভিযোগ আসার পর প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে এই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক।ঘটনার তীব্র নিন্দা করে আইপিএস অফিসারদের সংগঠন।আবার এই গােটা বিতর্কিত বিষয়ে প্রজ্ঞা থেকে দূরত্ব বজায় রাখে তার নিজের দল বিজেপিও।দলের বক্তব্য ছিল,বিজেপি কারকাবেকে সবসময় শহিদের মর্যাদা দিয়ে এসেছে।বিজেপি এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে,সাধ্বী প্রজ্ঞা কোনও ব্যক্তিগত কারণে এই ধরনের মন্তব্য করে থাকতে পারেন।

ভােপালের এক অনুষ্ঠানে  প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর যাঁকে সবাই সাধ্বী প্রজ্ঞা বলেই জানেন তিনি বলেন, হেমন্ত কারকারের মৃত্যু হয়েছিল তাঁর অভিশাপে। তাঁর কথায়,’আমি বলেছিলাম তুই ধ্বংস হয়ে যাবি।তারপর দু’মাস কাটেনি।জঙ্গিদের গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়’।

বিজেপি প্রার্থীর এই মন্তব্যকে ঘিরে তদন্ত শুরু করেছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক। প্রজ্ঞার মন্তব্যের জন্য তীব্র নিন্দা করেছে আইপিএস অফিসারদের সংগঠন।২০০৮সালে ২৯সেপ্টেম্বর মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডে তদন্তভার পড়ে মুম্বই পুলিশের এটিএস অফিসার হেমন্ত কারকারের হাতে।সাধ্বী প্রজ্ঞা, লেফটেন্যান্ট কর্নেল শ্রীকান্ত পুরােহিত সহ বেশ কয়েকজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণে ষড়যন্ত্রের চার্জশিট দিয়েছিলেন তিনি।তারপরই সাধ্বী প্রজ্ঞা সহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

সাধ্বী প্রজ্ঞা এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নিহত এটিএস অফিসারের উদ্দেশ্যে বলেন,আপনারা বিশ্বাস করবেন না,কিন্তু আমি বলেছিলাম তাের সর্বনাশ হবে।তার দুমাসের মধ্যেই জঙ্গিরা তাকে হত্যা করে।সাধ্বী প্রজ্ঞার এই মন্তব্যের জেরে কার্যত উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন সভাস্থলে উপস্থিত সাধু-সন্তরা হাততালি দিয়ে তার বক্তব্যকে সমর্থন করেন।প্রসঙ্গত,মালেগাঁও বিস্ফোরণে এক নম্বর অভিযুক্ত সাধ্বীকে ২০১৫ সালে ক্লিনচিট দিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ।তদন্তকারীদের যুক্তি ছিল,সাধ্বীর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু আদালতে তাতে সায় দেয়নি। আদালতের বক্তব্য ছিল, এনআইএ’র বক্তব্য ছিল, এনআইএ’র বক্তব্য মেনে নেওয়া কঠিন, কারণ বিস্ফোরণে সাধ্বীর মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল।

তবে,‘মােকা’ আইনে দােষী সাব্যক্ত না করে ইউএপিএ ধারায় শাস্তি ঘােষণা করেছিল আদালত।২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পান সাধ্বী।এরপরই লােকসভা ভােটের মুখে বিজেপিতে যােগ দিয়েছেন তিনি।ভোপাল কেন্দ্রে তাঁকেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি।

সাধ্বী প্রজ্ঞার বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য কড়া মনােভাব দেখিয়েছেন মধ্যদেশের নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক।তিনি জানিয়েছেন,নিহত এটিএস অফিসার হেমন্ত কারকারকে নিয়ে ভােপালের বিজেপি প্রার্থী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুরের মন্তব্যের অভিযােগ জমা পড়েছে।বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে।

মালেগাঁও বিস্ফোরণে অন্যতম অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞাকে এনআইএ ২০১৫ সালে ক্লিনচিট দেয়।তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রমাণ চার্জসিটে দিতে পারেনি এনআইএ।তবে নিম্ন আদালত প্রজ্ঞাকে মুক্তি দিতে চায়নি।আদালতের বক্তব্য ছিল,ঘটনাস্থল থেকে সাধ্বী প্রজ্ঞার মােটর সাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।জামিনে মুক্তি পেলেও সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে বিচার চলছিল।স্বাস্থ্যের কারণে ২০১৭সালে বোম্বে হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দিয়েছিল।

সাধ্বী প্রজ্ঞাকে বিজেপি ভোপাল থেকে প্রার্থী করেছে।সাধ্বী প্রজ্ঞার বিবৃতিকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির শেহনওয়াজ হুসেন।’যাঁরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের আমরা শহিদ বলি।আমাদের উচিত নয় তাঁদের দেশভক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা’ বলে মন্তব্য করেন হুসেন।