• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

নির্মলার বাজেটে অবহেলিত রেল সুরক্ষা

দিল্লি, ২৩ জুলাই: তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে নতুন মোদি সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ সংসদে। অন্ধ্রপ্রদেশ ও বিহার বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা পায়নি। তা সত্ত্বেও শরিক দল টিডিপি ও জেডিইউ-কে সন্তুষ্ট রাখতে এই দুই রাজ্যের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের পেশ করা বাজেটে। কিন্তু দেশের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থায় প্রধান ও

দিল্লি, ২৩ জুলাই: তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে নতুন মোদি সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ সংসদে। অন্ধ্রপ্রদেশ ও বিহার বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা পায়নি। তা সত্ত্বেও শরিক দল টিডিপি ও জেডিইউ-কে সন্তুষ্ট রাখতে এই দুই রাজ্যের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের পেশ করা বাজেটে। কিন্তু দেশের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থায় প্রধান ও পণ্য পরিবহনে অন্যতম ভরসা রেল। নির্মলার কেন্দ্রীয় বাজেটে সেই রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা অবহেলিতই থেকে গেল। অথচ দেশবাসীর কাছে এখনও তরতাজা করমণ্ডল এক্সপ্রেস থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ও ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের মতো দুর্ঘটনার বিভীষিকা। বার বার সেইসব ভয়ঙ্কর স্মৃতি রেলের যাত্রীদের সামনে মৃত্যুঘন্টা বাজিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।

আরও চাঞ্চল্যকর ঘটনা হল, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (NCRB)-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত দশ বছরে দেশে শুধুমাত্র রেল দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় আড়াই লক্ষের বেশি মানুষ। দেশবাসী আশা করেছিল, দেশের সিংহভাগ মানুষের নির্ভরযোগ্য গণপরিবহন ব্যবস্থার সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দেব কেন্দ্র সরকার। কিন্তু, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাজেট দেখে হতাশ হলেন নিয়মিত রেলযাত্ৰী থেকে শুরু করে গোটা দেশবাসী। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সামান্যই বাড়ানো হল রেলের বরাদ্দ। রেলের সুরক্ষার জন্য যে ‘কবচ’ প্রযুক্তি বা বা স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা পদ্ধতি ‘অটোমেটেড ট্রেন প্রোটেকশন সিস্টেম’ নিয়ে উদাসীন মোদি সরকার। এটি সেন্সর ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা। ট্রেনের ব্রেকিং সিস্টেম বা ড্রাইভার জরুরি অবস্থায় ট্রেন থামাতে ব্যর্থ হলে ট্রেনটি নিজে থেকেই থেমে যাবে। ফলে যে কোনও ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পাবে ট্রেন। এটিকেই রেল প্রযুক্তির ভাষায় ‘কবচ’ বলা হয়ে থাকে।

অথচ বাজেট ২০২৪ যাত্রীদের দাবি পূরণে নতুন কোনও দিশা দেখাতে পারল না মোদি সরকার। ফলে রেলযাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন নিয়ম মাফিক ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রেলে ২ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করেছেন। বিগত অর্থবর্ষে এই বরাদ্দ ছিল ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬০০ কোটি। অর্থাৎ মাত্র ২০ হাজার কোটি টাকার মতো বেশি। এই নিয়ে বিরোধীরা আক্রমণ করেছে মোদি সরকারকে। তাঁদের অভিযোগ, এনডিএ শরিকদের মন পেতে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। সেজন্য নীতীশ কুমারের বিহার এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর অন্ধ্রপ্রদেশ কোটি কোটি টাকার প্যাকেজ পেয়েছে। অথচ রেলের মতো জাতীয় প্রকল্পে বাজেটে প্রাপ্তি যৎসামান্য।

প্রসঙ্গত ইতিমধ্যেই সাউথ সেন্ট্রাল রেলওয়ে দ্বারা ‘কবচ’ প্রযুক্তিটির ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে রেল। ‌বারবার রেল দুর্ঘটনায় বিরোধীরা দাবি করছিল, ‘কবচ’ দিয়ে সুরক্ষিত করা হোক বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক। তবে রেল বাজেটে বড় অঙ্ক বরাদ্দ না হলে এই প্রকল্প চালু করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই এই বাজেট ঘোষণার দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। কিন্তু অর্থমন্ত্রী নির্মলা দেশবাসীকে হতাশ করলেন।