ভোটের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ অভিষেকের
প্রশান্ত দাস ও খায়রুল আনাম: জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের পর এবার বীরভূমের সাংগঠনিক বৈঠক থেকে দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন অভিষেক৷ “লোকসভা ভোটে ফল খারাপ হলে সরতে হবে সেই নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের সভাপতি – কাউন্সিলরকে৷ গোটা পুর এলাকার ফল খারাপ হলে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানকে সরতে হবে৷ যে পুর এলাকার ফল খারাপ হবে, সেখানকার শহর সভাপতিকেও সরতে হবে৷ পাশাপাশি একই পঞ্চায়েতে যে বুথে ফল খারাপ হবে সেই বুথ সভাপতি এবং পঞ্চায়েত সদস্যকেও সরতে হবে৷ আর গোটা পঞ্চায়েতে ফল খারাপ হলে পঞ্চায়েত সভাপতি এবং পঞ্চায়েত প্রধানকে সরতে হবে৷ তেমনই ব্লকের ফল খারাপ হলে ব্লক সভাপতিকে সরতে হবে৷” এমনই কড়া নির্দেশ দেন অভিষেক নিজের দলীয় কর্মীদের৷ পাশাপাশি যুবরাজ স্পষ্ট করে বলেন, তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন৷
আগামী ২১ জুলাইয়ের আগেই ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হয়ে যাবে সেই দেখেই ২১ জুলাই এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ ভোটের পরিসংখ্যান টেনে অভিষেক বলেছেন, বীরভূমের দুটি লোকসভা আসন অর্থাৎ বোলপুর ও বীরভূমের পুরসভাকেন্দ্রিক বা শহরকেন্দ্রিক এলাকাগুলিতে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল, অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে তুলনামূলক ভালো ফল করেছিল তৃণমূল৷ বোলপুরে প্রায় ৮ হাজার, সাঁইথিয়াতে প্রায় ৬ হাজার ভোটে, রামপুরহাটে প্রায় ৪ হাজারের অধিক ভোটে, সিউড়িতেও প্রায় ৫ হাজার ভোটে পিছিয়ে রয়েছে জোড়াফুল৷ রাজ্য সরকার এই শহরগুলির উন্নয়নে কোনো রকম কার্পণ্য করেনি তাই এবারের নির্বাচনে এই ভুল বরদাস্ত করা হবে না৷ লোকসভা ভোটকেও নিজেদের ভোট অর্থাৎ কাউন্সিলর ভোট বলেই মানতে হবে৷ পঞ্চায়েত, ওয়ার্ড থেকে ব্লক প্রত্যেক স্তরেই সবুজ আবির উড়তে হবে, নয়তো দায়িত্বে থাকা দলীয় কর্মীদের সরে যেতে হবে, কড়া হুঁশিয়ারী অভিষেকের৷ আর এটি কেবল ‘নির্দেশ’ আকারেই থেকে যাবে না, বাস্তবে রূপায়িত হবে ২১শে জুলাইয়ের মধ্যেই৷
“আঠারো থেকে বিশ মাস অনুব্রত মন্ডল জেলে, তাও গরু পাচার হচ্ছে৷ গরু আসছে বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে”, বুধবার অনুব্রতহীন বীরভূমের সাংগঠনিক বৈঠক সেড়ে বেড়িয়ে এমনই দাবি করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়৷ এ প্রসঙ্গে নিজ বক্তব্যের প্রমানও দিয়েছেন তিনি৷ তাঁর ভাষায়, অনুব্রত মন্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে গরু পাচার মামলায়, কিন্ত্ত ১০ দিনে আগেও পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে অবৈধ ভাবে গরু আসছিলো বাংলায়, তা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ধরেছে৷ এদিকে এই দুই রাজ্যেই বিজেপি সরকার কিন্ত্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হলো না৷
চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে লোকসভা নির্বাচন৷ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা৷ এর আগেই ভোটের রণকৌশল নির্ধারণ করতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক বৈঠকে বসছেন অভিষেক৷ কেষ্টগড় বর্তমানে কেষ্টহীন, তাই এই কেন্দ্রকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল৷ পরিকল্পনা মাফিক বীরভূমে নেমেই প্রথমে যুবরাজ পুন্যক্ষেত্র তারাপীঠে পুজো দেন৷ মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে নেমে পড়েন রাজনৈতিক ময়দানে৷ প্রথমেই কোর কমিটির বৈঠক সারেন তারপর বোলপুর ও বীরভূম এই দুই কেন্দ্রের নির্বাচনী কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন অভিষেক৷