রাজনীতি কি কেবল কুকথা আর মিথ্যের বেসাতির মধ্যেই আটকে থাকবে?

বরুণ দাস

নিবন্ধের শিরোনামে উল্লিখিত এমন একটা বেয়াড়া প্রশ্ন ইদানিং মনের মধ্যে কেবল ঘুরপাক খাচ্ছে৷ পরিচিত বিশিষ্ট ও অ-বিশিষ্টজনদের সঙ্গে এনিয়ে অনেক আলোচনাও হয়েছে৷ কিন্ত্ত কোথাও কোনও সদুত্তর মেলেনি৷ অনেকেই যেমন হতাশ, তেমনি অনেকেই আবার আশাবাদি? তাদের বিশ্বাস, এর পরিবর্তন হবে৷ এভাবে বেশিদিন চলতে পারে না৷ মানুষ এর বিরুদ্ধে আজ না হোক, কাল রুখে দাঁড়াবেনই৷ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ ঘুরে দাঁড়ায়৷ সুদিন আবার আসবে৷ সুতরাং হতাশ হওয়ার কিছু নেই৷

সুদিন হয়তো নিশ্চয় আসবে৷ আশাবাদি হতে দোষ কোথায়? আশা নিয়ে শুধু চাষি নয়, সমাজের অন্যসব কর্মজীবী মানুষই বাঁচেন৷ আশাকে সমূলে বিসর্জন দিয়ে জীবন-চলা যায়না৷ তাই জীবন-প্রবাহের স্বাভাবিক ধর্ম মেনে নিরাশ হওয়ারও হয়তো কিছু নেই৷ আমাদের ধৈর্যশক্তি কম; তাই সামান্যতেই ভেঙে পড়ি৷ নিজের মধ্যেই বিতৃষ্ণা জন্মায়৷ ‘আর কিছু হওয়ার নয়’ বলে একরাশ হতাশা প্রকাশ করি৷ প্রাজ্ঞ ও জীবনদর্শী মানুষ আমাদের মতো পাঁচ পাবলিকের হতাশাগ্রস্থ দশা দেখে হয়তো-বা করুণা প্রকাশ করেন৷


আমরা হয়তো তা গ্রাহ্যের মধ্যে আনি না৷ আমাদের স্বাভাবিক বোধ ও বোধির অপ্রতুলতাই হয়তো এজন্য দায়ী৷ শ্রীমদ ভাগবত গীতার সেই অমোঘ বাণীকে মান্যতা দেওয়ার প্রয়োজনীয় মন ও মননই বা কোথায়? কী সেই অমোঘ বানি? ‘যা হয়েছে ভালো হয়েছে, যা বহচ্ছে তাও ভালো হচ্ছে এবং যা হবে তাও ভালোর জন্যেই হবে৷’ ‘ভালো’র সংজ্ঞা নিয়েই তো আমাদের মধ্যে ঘোরতর সংশয়-দ্বন্দ্ব জাগে অনিবার্য জিজ্ঞাসাও. অতীত বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের মূল্যায়নের ক্ষমতাই-বা কোথায়?

কিন্ত্ত রাজনৈতিক কলুষতাকে নিয়ে আবর্তিত বর্তমানকে পাশ কাটিয়েই-বা চলি কিভাবে? অনেকে হয়তো বলবেন, রাজনীতির জগতে আগে কী সব ধোয়া তুলসিপাতা ছিলেন? ‘সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ’ ছিলেন? [ভোট করানো নিয়ে প্রয়াত সিপিআইএম-এর ডাকাবুকো ‘জ্যোতিপ্রিয়’ মন্ত্রী কমরেড সুভাষ চক্রবর্তী-উবাচ] একে অন্যের বিরুদ্ধ কুৎসা করতেন না? একদল অন্যদলকে মিথ্যে রচননা করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেন না? অতীতের যেসহ কথা ও কাহিনি ভুলে গেলে চলবে? বিস্মৃতির হাওয়ায় গা-ভাসানো ঠিক নয়৷
তারা হয়তো দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে এও বলবেন, বর্তমানের পাশাপাশি অতীতের দিকে একটু ফিরে তাকান তো মশাই৷ সবকিছু ‘জলবৎ তরলং’ অর্থাৎ পরিষ্কার হয়ে যাবে. আপনার মতো অর্বাচিন কলমচিদের বিভ্রান্তি মোচন ঘটবে. অতীতকে বাদ দিয়ে বর্তমান অচল৷ এরপরেই হয়তো একরাশ হতাশা প্রকাশ করে তারা বলবেন, কী করে যে আপনাদের মতো বর্তমান-কাতুরে লোকেরা আজকের দিনে সাংবাদিকতা করেন ভেবে পাইনে. একমুখি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আর যা হোক, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা হয় না— জেনে রাখবেন৷

কথাগুলো হয়তো একেবারেই মিথ্যে নয়৷ সত্যের অনু-পরমানু ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে বক্তাদের কথাগুলোর মধ্যে৷ জীবনে চলার পকদন্ডি পথে তারা অনেককিছু দেখেছেন. অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন৷ থরে থরে সঞ্চিত জীবনের সেই অভিজ্ঞতা থেকেই উচ্চারণ করছেন কথাগুলো৷ একে অগ্রাহ্য করা মানেই সবজান্তা নয়৷ তাকেও তিলে তিলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়৷ ‘মানুষের পাঠশালা’ই হলো আমাদের প্রকৃত শিক্ষার প্রদান অঙ্গন৷

উল্লেখ্য, প্রতিদিন খবরের কাগজ বা টিভিতে যারা খবর দেখেন বা শোনেন, তারা নেতা-নেত্রী-মুখপাত্র-মন্ত্রীদের কথাবার্তা শুনে তাজ্জব বনে যান৷ অন্যদলের নিন্দামন্দ কিংবা কুৎসা করতে গিয়ে যেসব অমার্জিত ভাষা এবং অপ্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন-তা শুনে চমকে উঠতে হয়৷ প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাজারো-লক্ষ মানুষের সামনে মিথ্যার ফুলঝুরি ছোটান৷ রাজ্য কিংবা কেন্দ্রের দায়িত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে আসীন হয়ে এমন সব মিথ্যে আর অসংসদীয় কথা বলেন যা ভাবলে রীতিমত শিউরে উঠতে হয়৷

কিংবা সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দলের সবজান্তা মুখপাত্ররা যেভাবে সত্যের অপলাপ ঘটান তা পৃথিবীর নবম আশ্চর্যের মধ্যে স্থান করে নিতে পারে অনায়াসে৷ শুধু সত্যের অপলাই নয়, যে ভাষা ও ভঙ্গিতে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন-তা কোনও সভ্য শিক্ষিত মানুষের ভাষা হতে পারে না৷ রাজনৈতিক সচেতনতা তো মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা; কিন্ত্ত এখন দেখা যাচ্ছে, এগিয়ে তো নয়ই, বরং কদম কদম পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷
আজকের রাজনীতি মানুষকে শালীনতাবোধকে জলাঞ্জলি দিতে শেখায়৷

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলতেন, শুধু জ্ঞান থাকলেই হবে না; ‘কাণ্ডজ্ঞান’ থাকতে হবে৷ কাণ্ডজ্ঞানটাই আসলে মানুষকে সঠিক পথে চলতে শেখায়৷ বছর কয়েক আগে দমদম এয়ারপোর্ট সংলগ্ন শরৎ পার্কে চেতনা-ও-প্রেরণার এক ভক্ত সম্মেলনের অনুষ্ঠানে কতা প্রসঙ্গে বলেছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বরিষ্ঠ সন্ন্যাসী স্বামী পূর্ণত্মানন্দজি মহারাজ৷ আমাদের অনেকরই হয়তো প্রথাগত শিক্ষাজনিত কারণে যথেষ্ট জ্ঞানট্যান আছে৷ কিন্ত্ত যেটা একেবারেই নে‌ি-তা হলো, কাণ্ডজ্ঞান৷ এই কাণ্ডজ্ঞানটারই আজ বড়ো অভাব৷
শাসক ও বিরোধিপক্ষ [বা অপেক্ষমান শাসকদল]-এর নেতারা সাংবাদিক সম্মেলন, প্রকাশ্য মঞ্চ কিংবা টিভির সান্ধ্য আসরে একে অন্যের দিকে যেভাবে কাদাছোঁড়াছুড়ি করেন-তা কোনও সভ্য সমাজে আশা করা যায় না৷ অধিকাংশের বক্তব্যের মধ্যেই রাজনীতির গন্ধ নেই, আছে কেবল নিম্নমানের খিস্তি-খেউর৷ সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতি পুরোপুরি নির্বিকল্প চাতুর্যের আশ্রয় নেন তারা-তা ভেবে অবাক হতে হয়৷
খোদ প্রধানমন্ত্রী কিংবা স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে সেভাবে দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভেদ-বিদ্বেষ-বিভাজন ছবিয়ে দিতে সামান্যতম কুণ্ঠাবোধ করেন না-তা শুধু সীমাহীন লজ্জারই নয়, রীতিমতো আতঙ্কেরও সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে থেকে এমন দুর্বিনীত আচরণ কোনওভাবেই মেনে নেওায়া যায় না৷ ওইসব অকথা-কুকথা বলার পরও দলীয় সমর্থকদের কাছ থেকে হাততালিও পান তাঁরা৷ মতবাদ নির্বিশেষে দলীয় সমর্থকদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দলীয়করণের দিকে টেনে নেওয়ার কুফল ফলতে চলেছে৷

আমরা আর কতটা নিজেকে নিচে নামিয়ে আনব? শুধুমাত্র ভোটে জিতে ক্ষমতা দখলের আশায় দলের প্রথমশ্রেণির নেতানেত্রীরাই-বা আর কতোটা নিজেদেরকে আশালীন হিসেবে তুলে ধরবেন? রাজনীতিকেরা সীমাহীন দুর্নীতির পাশাপাশি উচ্চারণের অযোগ্য যে কদর্য ভাষায় প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে পাড়ার পাতি মান্তানদের মতো জামার কলার কিংবা হাতা গুটিয়ে আস্ফলন করছেন, চূড়ান্ত বিষোদগার করছেন-তা মান্যতা পেয়ে যাচ্ছে ভোটের ফলাফল দেখে৷ মানুষ মেনে নিয়েছেন নেতানেত্রীদের কুৎসিৎ আচরণ৷
ভয়ের কিংবা বিপদেগর জায়গায়া ঠিক এখানেই৷ প্রশ্ন জাগে, এ কোন দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি আমরা? পাঠকের হয়তো স্মরণে আছে-অতীতের কথা স্মরণ করতে বলছিলেন কেউ কেউ৷ সেই অতীতের দিকে তাকালে খুব কী একটা সুসময় চোখে পড়ে? এই কলমচির ওপর রাগ করে যেন আবার ঠোঁট ওল্টাবেন না মাননীয় কমরেডগণ৷ ফেলে আসা চৌত্রিশও কিন্ত্ত বড়ো ‘সুখের সময়’ ছিল না৷ ব্রিগেডের প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে সফেদ পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে পক্ককেশধারী স্বয়ং কমরেড মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কী বলেছিলেন?

‘আমরা ২৩৫ আর ওরা শুধু ৩৫৷’ ক্ষমতার কী আস্ফালন? ক্ষমতার কী বীভৎস দম্ভ? ক্ষমতার কী দাপট? সংস্কৃতি মনষ্কতাকেও কেমন দাবিয়ে দেয়৷ এবার ক্ষমতার আস্ফলন-দম্ভ-দাপট ছেড়ে আসা যাক ক্ষমতার ভাষার দিকে তৎকালীন বিরোধিনেত্রীর প্রতি বয়স্ক কমরেড-সাংসদ অনিল বসু, পার্টির কৃষকফ্রন্টের সর্বোচ্চ নেতা বিনয় কোঙার এবং সিপিআইএম-এর খোদ রাজ্য সম্পাদক কমরেড অনিল বিশ্বাসের সেই কুৎসিৎ-কথাগুলো মনে আছে আমাদের নিশ্চয়ই৷ এসব কী আদৌ কমরেড-সুলভ আচরণের মধ্যে পড়ে?
সংসদীয় গণতন্ত্রে ভোটের অঙ্ক বা জয়-পরাজয়ের ফলাফলটাই কিন্ত্ত সব নয়. ন্যায়-নীতি-নৈতিকতারও একটা অলিখিত আলাদা জয়গা আছে. যেটা লিখিত অংশের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়৷ কিন্ত্ত আমরা গণতন্ত্রের বড়াই কল‌েও গণতন্ত্রের সেই ন্যায়-নীতি-নৈতিকতার অংশটুকুকে স্বীকৃতি দিতে একেবারেই নারাজ৷ গণতন্ত্রের যেটুকু অংশ আমার পক্ষে যাবে-সেটুকুই আমরা মেনে চলতে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছি৷ গণতন্ত্রের বাকিটুকু বর্জন করতে মোটেই দ্বিধান্বিত নই. পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের সীমাহীন লজ্জা বোধহয় এখানেই.

সুস্থ গণতন্ত্রে সরকারপক্ষ ও বিরোধিপক্ষ-উভয়েই সমান গুরুত্ব পাওয়ার কথা৷ এটাই সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত্তি বা অনন্য বৈশিষ্ট্য৷ কিন্ত্ত বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, কী রাজ্য, কী কেন্দ্র-সরকারপক্ষ বিরোধিদের, বিরোধিপক্ষ সরকারকে যেকোনওভাবে হয়রান ও হেনস্থা করতে অতি-ব্যস্ত৷ তবে পুলিশ-প্রশাসন হাতে থাকার জন্য বিরোধিপক্ষকে হয়রান ও হেনস্থা করার জন্য সরকারপক্ষেরই সুবিধে অপেক্ষাকৃত বেশি এবং সেই অনৈতিক সুবিধে তারা প্রায়শই নিচ্ছেনও৷ সম্প্রতি আইনি ‘রক্ষাকবচ’ কথাটি এসেছে একারণেই৷
বাস্তবের পরিপ্রেক্ষিতে আজ আর বলতে কোনও দ্বিধা নেই, গণতন্ত্রকে হত্যা করে তার শবদেহ বহন করে চলেছি আমরা৷ সজীব গণতন্ত্র নয়, গণতন্ত্রের শবদেহকে নিয়েই আমরা গর্ববোধ করি৷ ‘মরা হাতি লাখ টাকা’র মতো গণতন্ত্রের শবদেহই আমাদের কাছে এখন বেশি গ্রহণযোগ্য৷ এ নিয়ে আর সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই৷ আসলে পঙ্গু গণতন্ত্রই যেন বেশি আদরণীয় হয়ে উঠেছে এদেশের শাসকদলের কাছে৷ অথচ আমরা নির্বিকার. আমাদের কোনও বিকার নেই৷ শবদেহ তো কী আছে-এমন একটা উদাসীন ভাব৷
বলাবাহুল্য, গণতান্ত্রিক পরিসরের বিকাশ ও শ্রীবৃদ্ধি ঘটানোর জন্য নাগরিক সচেতনতা ভীষণভাবেই দরকার৷ কিন্ত্ত আমাদের মধ্যে সেই প্রয়োজনীয় সচেতনতাবোধ কোথায়? দলীয়করণের ফলে আমাদের মধ্যে সেই নাগরিক সচেতনতা লোপ পেয়েছে৷ আমরা পছন্দ-সই দলের আগমার্কা লেজুর হয়ে কেবল ঘুরপাক খাচ্ছি৷ দলীয় নেতৃত্ব যা বলছেন, তাই মুখ বুজে মেনে নেওয়াটাই আমাদের একমাত্র কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এরফলে ভালোমন্দ উচিত অনুচিত বোধটুকুও ক্রমশঃ হারিয়ে ফেলেছি৷ আমরা এখন কাঠ-পুতলি নয়, রোবটের মতো৷

এই সুযোগে মতবাদ নির্বিশেষে রাজনৈতিক দলগুলো যা নয়, তা-ই করে যাচ্ছে নায়াসে৷ তারা জেনে গেছেন-তাদের অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ার কেউ নেই৷ এই দলীয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরুতে না পারলে আমাদের সমূহ সর্বনাশ৷ রাজ্য কিংবা দেশ সেই সর্বনাশের দিকেই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে৷ রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিপথগামী হয়ে কোথায় গিয়ে যে দাঁড়াচ্ছে-তা বোধহয় কেউ জানেন না৷ সাম্প্রতিক এক ভিডিও ক্লিপিংসে বিরোধিদের প্রতি শাসকদলের প্রধানের যে দু’অক্ষরের অপ-শব্দটি ব্যবহার হতে শোনা গেল-তা অত্যন্ত লজ্জার৷