নিজস্ব প্রতিনিধি— নৈহাটীর বড়মার আশীর্বাদ নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক৷ জীবনের যেকোনো বড়ো পরীক্ষার আগেই বড়মার কাছে ছুটে যান পার্থ, এবার মায়ের আশীর্বাদ নিয়েই নামলেন ভোটযুদ্ধের ময়দানে৷ সোমের সকালে বড়মার পুজো সেড়ে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে বারাসাত জেলাশাসকের দফতরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন পার্থ ভৌমিক৷ এদিন মনোনয়ন জমা করে বেড়িয়ে নাম না করেই ইঙ্গিতে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বি তথা ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং কে আক্রমণ পার্থর৷ এদিন ‘গুন্ডারাজ মুক্ত ব্যারাকপুর’ গড়ে তোলার শপথ নিলেন পার্থ৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যারাকপুরের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই৷ আমার ব্যারাকপুরের মানুষের কাছে সবিনয়ে আবেদন নিবেদন যে আমায় ব্যারাকপুরের মানুষের জন্য একবার কাজ করার সুযোগ দিন৷ আমি ব্যারাকপুরকে গুন্ডারাজ মুক্ত ব্যারাকপুরে পরিণত করবো, উন্নততর ব্যারাকপুরে পরিণত করবো৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দেখানো পথে ব্যারাকপুরের উন্নয়ন করার চেষ্টা করবো৷’ উল্লেখ্য, অর্জুন সিং সাংসদ থাকাকালীন প্রায় সময়ই উত্তপ্ত হতে দেখা গিয়েছে ব্যারাকপুর, ভাটপাড়া এলাকাকে৷ কখনও বিক্ষিপ্ত ভাবে ওই এলাকায় চলেছে গোলাগুলি, কখনও উদ্ধার হয়েছে বোমা৷ এবারের নির্বাচনের মুখেও ব্যারাকপুর থেকে উদ্ধার হয়েছে তাজা বোমা, যদিও পুলিশি তৎপরতায় তা নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়েছে৷ এবার সেই ব্যারাকপুরে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিই দিলেন পার্থ৷
এদিন কেবল ব্যারাকপুরকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন তা নয়, পাশাপাশি পার্থর কণ্ঠে ধরা পড়লো এক আবেদনের সুর৷ তাঁর এই আবেদন সাধারণ মানুষের কাছে৷ তাঁর ভাষায়, ‘ব্যারাকপুরের মানুষ আমায় একবার সুযোগ দিক৷ যদি ব্যারাকপুরের মানুষ আমায় নির্বাচিত করে, তবে এক উন্নততর ব্যারাকপুর আমি তাদের উপহার দেবো৷’ পার্থ ভৌমিক কে কেন্দ্র করে এদিন লক্ষ করা যায় কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়৷ তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে বেরোয় মহা মিছিল৷ কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রাখা হয় উত্তর ২৪ পরগনা জেলাশাসকের দফতর৷ ব্যাপক মানুষের ভিড়ের কারণে ট্রাফিক সমস্যা বা পথঘাটে যানজট যাতে তৈরি না হয় সেদিকেও দেওয়া হয় নজরদারি৷ এদিন পার্থ ভৌমিকের সাথে ছিলেন ব্যারাকপুর লোকসভার একাধিক বিধায়কও৷ ‘আগামী ৪ জুন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে ১ লাখের বেশি ভোটে জয়যুক্ত হবেন পার্থ ভৌমিক, পারলে লিখে নিন,পারলে আজই আমরা বিজয় মিছিল করতে পারি’, এমনটাই বলেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী৷ বড়মায়ের পুজো দিয়ে দিন শুরু করে, শান্তিপূর্ণ ভাবে মনোনয়ন জমা করে এবং উন্নত ব্যারাকপুর তৈরির প্রতিজ্ঞা নিয়ে দিন শেষ করেন পার্থ৷ পার্থকে কেন্দ্র করে তৈরী হওয়া জনপ্লাবনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তাঁরা আমাকে যেভাবে গ্রহণ করছেন, আমি ব্যারাকপুরবাসী তথা প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ৷’ ব্যারাকপুর যে বাংলার বাকি কেন্দ্রগুলির থেকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও হাইভোল্টেজ কেন্দ্র তা বলার অবকাশ রাখে না৷ পার্থ ভৌমিকের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন বিজেপির অর্জুন সিং৷ অর্জুনও বারংবার বদলেছেন দল৷ বর্তমানে তিনি ব্যারাকপুর কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী৷ অর্জুনের গড়ে অর্জুনকেই এবার টক্কর দিতে রাজনৈতিক ময়দানে নেমেছেন পার্থ৷ সুতরাং পার্থ বনাম অর্জুনের লড়াইয়ে কে এগিয়ে থাকে সেটিই এখন দেখার বিষয়৷