জম্মু-কাশ্মীরে ভোট প্রচারে গিয়ে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। রবিবার রাজনাথ বলেন, পাকিস্তান সরকার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের ‘বিদেশি’ বলে কিন্তু ভারত তাদের নিজেদের দেশের নাগরিক মনে করে।
জম্মুর রামবানে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় রাজনাথ বিজেপি-পিডিপি সরকারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, মেহবুবার নেতৃত্বাধীন সরকার থাকাকালীন আমরা নির্দোষ-অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করেছিলাম। কিন্তু সমস্যা হল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি পিডিপির সহানুভূতি রয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষদের শান্তিপূর্ণভাবে বাঁচার অধিকার আছে।
পাকিস্তান সরকারকে আক্রমণ করে রাজনাথ বলেন, সম্প্রতি একটি হলফনামায় পাকিস্তানের সলিসিটর জেনারেল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের ‘বিদেশি’ বলেছেন। আমরা তাদের ‘বিদেশি’ বলছি না। ওরা আমাদের দেশের নাগরিক। ওরা আসুক এবং আমাদের সঙ্গে যোগ দিক। জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গঠন হওয়ার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা ভারতে আসতে চাইবেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, তিনি প্রথমবারের মতো রামবানে এসেছেন কিন্তু এখানকার মানুষ তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। রাজনাথ বলেন, আমি আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। ১০ বছর পর জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে। সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে এখানকার ফলাফলের দিকে। আমি সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলাম। প্রবাসী ভারতীয়রা আমাদে জিজ্ঞাসা করেছেন, জম্মু-কাশ্মীরের ফলাফল কী হতে চলেছে? আমি তাঁদের বলেছি, জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপি সরকার গঠন করবে।
মোদী সরকারের সুশাসন এবং উন্নয়নের কথা রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যে ঘুরেফিরে এসেছে। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার সময় ভারতের অর্থনীতি বিশ্বে একাদশ স্থানে ছিল। আর আজ ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে উঠে এসেছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে। সামনে থাকবে শুধুমাত্র চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার মোট আসনসংখ্যা ৯০, যার মধ্যে ৪৭টি আসন রয়েছে কাশ্মীরে, বাকি ৪৩টি জম্মুতে। এর মধ্যে ৯টি তফশিলি উপজাতি এবং ৭টি আসন তফশিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত।
উপত্যকায় এবার তিন দফায় নির্বাচন হবে। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর, ২৫ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর ভোটগ্রহণ। আর ৪ অক্টোবর ভোট গণনা হবে।
জম্মু ও কাশ্মীরে শেষবার বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল ২০১৪ সালে, তখন তা রাজ্য ছিল। ২০১৯ সালে আইনসভা-বিশিষ্ট কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষিত হওয়ার পরে এই প্রথম ভোট হতে চলেছে।
২০১৪ সালের নির্বাচনে পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) ২৮টি আসনে জয়লাভ করে। ভারতীয় জনতা পার্টি পায় ২৫টি আসন, ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং কংগ্রেস যথাক্রমে ১৫টি এবং ১২টি আসনে জয়লাভ করে।