উত্তরবঙ্গে ফের ট্রেন দুর্ঘটনা! এক্স বার্তায় উদ্বেগ প্রকাশ মমতার

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সেই চেনা রাঙাপানিতে ফের আতঙ্কের ছাপ। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার বিভীষিকা এখনও কাটিয়ে ওঠেনি ভারতবাসী। গত ১৭ জুন ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষে ১০ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। দেড় মাসের মধ্যে ফের বুধবার রাঙাপানি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়লো মালগাড়ি। ধারাবাহিক রেল দুর্ঘটনায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় মঙ্গলে এক্স বার্তায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলেও এবার যেন তাঁর পোস্টে উদ্বেগের ছাপ। বুধবার দুপুরে মমতা নিজ এক্স হ্যান্ডেলে এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, “আজ (বুধবার) আরও একটি রেল দুর্ঘটনা, উত্তরবঙ্গের একই ফাঁসিদেওয়া/রাঙাপানি এলাকায়, যেখানে মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে সবচেয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। যা ঘটছে তা নিয়ে আমরা খুব উদ্বিগ্ন!” একই জায়গায় ফের কী করে দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

যদিও এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে রেলের তরফে স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানিতে লাইনচ্যুত হয়েছে মালগাড়ির দুটি কামরা। এই দুর্ঘটনার জেরে স্বাভাবিকভাবেই ওই লাইনে ব্যাহত রেল পরিষেবা। রেল সূত্রের খবর, বুধবার রাঙ্গাপানির নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেডের শেডের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল ট্রেনটি। সেই সময় মালগাড়ির দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ঘটনার পরই শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। তবে একের পর এক রেল দুর্ঘটনার জেরে ‘রেল যাত্রাকে যম যাত্রা’র সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছেন রেলযাত্রীদের একাংশ। গত ৬ সপ্তাহে একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু এবং শতাধিকের জখম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে গতবছর ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যার ভয়াবহতা এখনও বর্তমান ভারতবাসীর মনে। মাস দেড়েক আগের রাঙাপানিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা এবং মঙ্গলবারে ঝাড়খণ্ডের ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি উস্কে বুধের ঘটনা যেন রেল-চিন্তাকেই প্রকট করছে। প্রত্যেক দুর্ঘটনার সময়ই রেলের তরফে একটি যন্ত্র তথা প্রযুক্তির কথা বলা হয়। তার নাম ‘কবচ’। যে যন্ত্র দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘাত বা পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারার মতো ঘটনা রুখে দেবে। ওই কবচের ভূমিকা নিয়েও অতীতে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। পূর্বে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন অ্যান্টি কলিউশন ডিভাইস লাগিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। “সেই ডিভাইস কোথায় গেল?” সেই প্রশ্নও মমতা তুলেছিলেন। তবে এবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ নয় কিংবা কোনো প্রশ্ন তোলা নয়, এক্স বার্তায় উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গেলো মুখ্যমন্ত্রীকে।