মোদি সরকারকে চাপে রেখে বিহারকে ‘বিশেষ মর্যাদা’ প্রস্তাব নীতীশের

পাটনা, ২৯ জুন– এনডিএ জোট শরিক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিজের গুরুত্ব ভালোভাবেই বোঝেন৷ সেই গুরুত্বকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে সুবিধা আদায় করতে হয় তাও তিনি জানেন৷ সেই সুযোগ বুঝেই এবার নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় একাধিক মন্ত্রকের পর এবার কেন্দ্রের কাছে বড় দাবি রাখল জেডিইউ৷ শনিবার দলের কার্যনির্বাহী বৈঠকে পেশ হল বিহারকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি৷ পাশাপাশি এই বৈঠক থেকেই জেডিইউ নেতা সঞ্জয় ঝাঁ-কে দলীয় সভাপতি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷

সাধারণত এই মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য সেই রাজ্যগুলি, যারা দুর্গম ভৌগলিক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। যেখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব অত্যন্ত কম, আন্তর্জাতিক সীমান্ত বিশিষ্ট এবং গরিব৷ এই ধরনের সমস্যা বিশিষ্ট রাজ্যই বিশেষ মর্যাদার আবেদন জানতে পারে৷ দীর্ঘদিন ধরেই এই অধিকারের দাবি তুলেছিল বিহার৷

দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে শনিবার আয়োজিত জেডিইউ-র এই বৈঠক৷ সেখানেই প্রস্তাব ওঠে মোদি সরকারের কাছ থেকে বিহারের জন্য বিশেষ মর্যাদা আদায়ের৷ সর্বসম্মতিতে সেখানে প্রস্তাব পাশ করে জেডিইউ৷ বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জেডিইউ-র এক বরিষ্ঠ নেতা বলেন, “বিহারকে বিশেষ ক্যাটেগরির মর্যাদা দেওয়ার দাবি নতুন নয়৷ বিহারের উন্নয়নের গতি আরও বাড়াতে এবং রাজ্যের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় বিশেষ ক্যাটেগরির মর্যাদা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷” এর পাশাপাশি জাতীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে প্রস্তাব পেশ হয় বিহারে নয়া সংরক্ষণ নীতি বাস্তবায়নের৷ সম্প্রতি বিহারে সংরক্ষণ কোটা বাডি়য়ে ৬৫ শতাংশ করা হয়েছে৷ এই সংরক্ষণ কোটার বাস্তবায়নে যাতে কোনও আইনি বাধা না পডে়, তার জন্য পদক্ষেপের কথা বলা হয়৷ এই কোটা ব্যবস্থা সংবিধানের নবম তফসিলে অন্তর্ভুক্তি চায় জেডিইউ৷


উল্লেখ্য, দেশের সংবিধানে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা ছিল না কোনওদিন৷ ১৯৬৯ সালে প্রথম এই অনুমোদন দেয় গাডগিল কমিটি৷ এভাবেই ১৯৬৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর, নাগাল্যান্ড ও অসমকে দেওয়া হয় বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা৷ পরে এই তালিকায় যুক্ত হয় মণিপুর, তেলেঙ্গানা, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলপ্রদেশ, মিজোরাম, অরুণাচলপ্রদেশ, ত্রিপুরা, সিকিম, মেঘালয়৷ নিয়ম অনুযায়ী বিশেষ মর্যাদা বিশিষ্ট রাজ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে কেন্দ্রীয় সরকার৷ করের ক্ষেত্রেও দেওয়া হবে বিশেষ ছাড়৷

দেশজুডে় লোকসভা নির্বাচনে এবার বিজেপি পেয়েছে ২৪০টি আসন৷ কেন্দ্রে সরকার গড়তে প্রয়োজন ২৭২ জন সাংসদের সমর্থন৷ নীতীশের জেডিইউ পেয়েছে ১২টি ও চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি পেয়েছে ১৬টি আসন৷ কেন্দ্রে সরকার টিকিয়ে রাখতে এই দুই দলের সমর্থন প্রয়োজন বিজেপির৷ রাজনীতির মহলের দাবি, এনডিএ সরকারে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করার পর দলের জাতীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে বিহারকে বিশেষ ক্যাটেগরির মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব পাশ করিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের উপর পরোক্ষে চাপ সৃষ্টি করলেন নীতীশ৷