নিত্যানন্দ ঘোষ
ভারতবর্ষের অষ্টাদশ সাধারণ লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে চর্চিত জাতীয় কংগ্রেস দলের নির্বাচনী ইস্তেহার৷ ভারতবর্ষের সবচেয়ে পুরনো দল ও কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকা জাতীয় কংগ্রেস দলের ইস্তেহারের বক্তব্য সাধারণ মানুষকে যেমন আকৃষ্ট করেছে, একই সঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দলগুলির মধ্যে এটিই সবচেয়ে বেশি চর্চিত৷ একদা যে কংগ্রেস দলকে জমিদার-বুর্জোয়াদের দল বলা হতো, সেই দলই যে দেশে বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটিয়ে দিতে এইরকম এক শাণিত অস্ত্র বর্তমানে দশ বছর ধরে (পরপর দু’বার ক্ষমতা দখল করে) ক্ষমতায় থাকা শাসক দলের বিরুদ্ধে উঁচিয়ে ধরবে ভাবা যায়নি৷ ভাবা যায়নি এই জন্য যে, যে কংগ্রেস দলের প্রতিনিধিরা (নির্বাচিত) আয়ারাম-গয়ারাম হয়ে রাজ্যে রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হয়ে সরকার বদল করেছে (গোয়া, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, মেঘালয় ও বর্তমানে হিমাচলপ্রদেশ ঝুলে আছে) সেই দলই এমন বিপ্লবী ইস্তেহার প্রকাশ করবে ভাবা যায় না৷ ইস্তেহারটি দেখে এবং পড়ে কেন্দ্রের জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান শরিক বিজেপি নেতৃত্ব বিশেষ করে তারা যার নামে ভোট চাইছে (মোদি কি গ্যারান্টি) সেই নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদিজিও ভয় পেয়েছেন৷ তাঁর নামে ভোট চাওয়ায় যে আর চমক থাকছে না দেশবাসী একপ্রকার বুঝে গিয়েছেন৷ সেই কারণেই হয়তো বা কংগ্রেস দলের ২০২৪-এর সাধারণ লোকসভা নির্বাচনে প্রস্ত্তত ইস্তেহারকে মোদিজি লক্ষ্যবস্ত্ত করেছেন৷ মোদি ম্যাজিক উবে গেলে তাদের তো সমূহ বিপদ৷ তাই মিথ্যা বলেও শত্রু তৈরি করতে হয়!
কংগ্রেস দলের পক্ষে ২০২৪-এর নির্বাচনী ইস্তেহারটি তৈরির প্রধান দায়িত্বে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী বর্ষীয়ান নেতা পি চিদাম্বরম৷ তিনি একটি বাংলা দৈনিকে সাপ্তাহিক কলাম (উত্তর সম্পাদকীয়) লিখে থাকেন৷ পরপর দু’সপ্তাহের তাঁর লেখার শিরোনাম ছিল– ‘কংগ্রেসের ইস্তেহার মোদির হাতে মহিমান্বিত’ ও ‘চব্বিশের আসল নায়ক মোদিজির স্বীকৃতি’৷ স্মর্তব্য, ২০১৯ সালের সাধারণ লোকসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস ৫৪ পৃষ্ঠার ইস্তেহার প্রকাশ করেছিল কিন্ত্ত বিজেপি সেটিকে চর্চায় আনেনি বিষয়বস্ত্ত মোটামুটি এক থাকা সত্ত্বেও৷ তার মানে এটি বুঝে নিতে অসুবিধা হচ্ছে না যে, এবারকার কংগ্রেসের ইস্তেহার ২০১৯-এর তুলনায় আরও বলিষ্ঠ, উন্নত, স্বচ্ছ ভাবনার, বিশ্লেষণাত্মক ও আমজনতার চাহিদা অনুায়ী তৈরি হয়েছে যাতে করে শাসকদল (বিজেপি সহ এনডিএ’র অন্যান্য শরিক) সত্যিই ভয় পেয়েছে৷ একটি দল যখন ব্যক্তির গ্যারান্টি (মোদি কি গ্যারান্টি) বলে (মূল গ্যারান্টি রামমন্দির তৈরি– যা হয়ে গিয়েছে, ৩৭০ ধারা বাতিল, তাও শেষ, বাকি রইল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন– সিএএ লাগু করা– এই লেখা প্রেসে যাওয়ার আগে পর্যন্ত মাত্র ১৪ জনকে তা তুলে দেওয়া হয়েছে) নির্বাচনী প্রচার করে জ্বলন্ত সমস্যা থেকে মুখ ফিরিয়ে তা কতদিন মানুষকে অন্ধকারে রাখতেপারে? তাই মোদি কি গ্যারান্টি ঘোর সংকটে৷
কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা পি চিদম্বরম জানিয়েছেন, ২০১৯ থেকে তাঁরা ২০২৪-এর নির্বাচনী ইস্তেহার তৈরির প্রস্ত্ততি নিয়েছেন৷ পটভূমি তৈরিই ছিল৷ পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাহুল গান্ধির নেতৃত্বে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র (অভিজ্ঞান)৷ কী ছিল সেই যাত্রার উদ্দেশ্য? তাঁকে মোদিজি যতই পাপ্পু বলে ডাকুন না কেন, তাঁর এই সংকল্পে (ভারত জোড়ো যাত্রা) কোনও খাদ ছিল না৷ অবিচল থেকেছেন তাঁর সংকল্পে৷ ভারতবর্ষের কোনও রাজনীতিক (ডান, বাম, মধ্য বাম, বিপ্লবী বা অতি বাম) করে দেখাতে পারেননি এই ভারত জোড়ো যাত্রা৷ এমন কি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধিও এভাবে এতদিন ধরে দক্ষিণ থেকে উত্তরে পদব্রজে মানুষের অভাব-অভিযোগ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেননি, বোঝেননি বা শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে মেশেননি৷ ‘নো ইওর পিউপল নো ইওর কান্ট্রি’ এই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই রাহুল গান্ধি দু’দফায় (প্রথম দফায় ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ দ্বিতীয় দফায় পশ্চিম ভারত থেকে পূর্ব ভারত (‘ভারত ন্যায় যাত্রা’ — পদব্রজে নয়, খোলা গাড়িতে) যাত্রা সংঘটিত করেছেন৷ সাধারণ মানুষের সমস্যা, অভাব অভিযোগ এবং কী বা কোন পরিস্থিতির মধ্যে তাঁরা জীবনযাপন করছেন, তা নিজের চোখে দেখেছেন৷ তাঁদের আশা-আকাঙ্খা যা পূরণ হয়নি, সেসবও তিনি দেখেছেন, নথি তৈরি করেছেন, দলীয় সম্মেলনে (উদয়পুরে তিন দিনের সম্মেলন বা কনক্লেভ) সেই অভিজ্ঞতা তিনি নেতাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন৷ পরে মধ্যপ্রদেশের রায়পুরে এআইসিসি সম্মেলনে ওই সমস্ত সমস্যা যা দেশবাসী মুখোমুখি হয়েছেন, সেই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ ওই আলোচনা থেকে নানা নীতি গ্রহণের নির্ভরযোগ্য ও সংহত মঞ্চ গড়ে তোলা এবং সাধারণ লোকসভা নির্বাচনে শাসক দলকে মোকাবিলা করার পক্ষে সহায়ক হয়েছে৷
চিদাম্বরমজি জানিয়েছেন, উদয়পুরে তাঁরা ‘নব সংকল্প অর্থনৈতিক নীতি’ তৈরি করেছিলেন এবং রায়পুরে গরিব মানুষের পাশে থাকার নীতি গ্রহণ করেছেন৷
কংগ্রেসের ২০২৪-এর ইস্তাহারটি ৫ এপ্রিল প্রকাশিত হয়, যেটির নাম দেওয়া হয় ‘ন্যায়পত্র’৷ জনগণের জ্বলন্ত সমস্যাগুলি মোকাবিলা করতে ৪৬ পৃষ্ঠার ইস্তেহার৷ চিদাম্বরমজি জানাচ্ছেন, ‘ন্যায়পত্রে’র ৪৬ পৃষ্ঠা জুড়ে বর্ণিত হয়েছে জনগণের বিশাল অংশের জন্য নস্যাৎ হয়ে যাওয়া ‘ন্যায় বিচার’ প্রদানের নানান দিক৷ ‘ন্যয় বিচার’ শব্দটি সেখানে (ইস্তেহারে) গৃহীত হয়েছে বিবিধ অর্থে৷ তার মধ্যে রয়েছে সামাজিক ন্যায়বিচার, যুবদের জন্য ন্যায়বিচার, মহিলাদের জন্য ন্যায়বিচার, কৃষকদের জন্য ন্যায় বিচার এবং শ্রমিকদের জন্য ন্যায়বিচার৷ সর্বোপরি কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি৷
এখন দেখা যাক ‘ন্যায়চক্রে’র ন্যায় বিচারের মূল মূল বিষয়গুলি—
হিষ্যেদারি ন্যায়: সামাজিক, অর্থনৈতিক ন্যায় এবং জাতি ও তফসিলি উপজাতিদের জন্য বিশেষ বাজেট যাতে সমান অংশীদারিত্বে আওতায় তারা আসে৷ বন অধিকারের দাবি এক বছরের মধ্যে নিষ্পত্তিকরণ এবং যে অঞ্চলে তফসিলি জাতি বসবাস করেন সেই অঞ্চলকে তফসিলিভুক্ত অঞ্চল বলে গণ্য করা৷ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ উর্ধ্বসীমা তুলে দিয়ে সংবিধান সংশোধন করে আরও বেশি সংরক্ষণ৷
কিসান ন্যায় : কৃষিপণ্যের নূ্যনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা প্রদান৷ কৃষিঋণ মকুবের পরামর্শ গ্রহণে কমিশন গঠন, শস্য উৎপাদনে ক্ষতি ঠেকাতে বিমা গ্যারান্টি, স্থিতিশীল আমদানি-রফতানি পরিকল্পনা এবং কৃষি সরঞ্জামের উপর কোনও জিএসটি লাগু করা হবে না৷
যুব ন্যায়: কেন্দ্রীয় সরকারের ৩০ লক্ষ শূন্যপদ পূরণ৷ শিক্ষিত যুবকদের এক বছর শিক্ষানবিশি থাকার সুযোগ ও বছরে এক লক্ষ টাকা প্রদান, প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করতে আইন প্রণয়ন৷ ঠিকা শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং যুবদের জন্য ৫,০০০ কোটি টাকার স্টার্টআপ ফান্ড৷
নারী ন্যায়: প্রতিটি দরিদ্র পরিবারকে বছরে এক লক্ষ টাকা, নারীদের জন্য সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থায় ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ, আশা, অঙ্গনওয়াড়ি ও মিড ডে মিলের কর্মীদের দ্বিগুণ আয় বৃদ্ধি, গ্রামীণ মহিলাদের আইনি অধিকার প্রদান, কর্মরত মহিলাদের জন্য দ্বিগুণ আবাস (হস্টেল) তৈরি৷
শ্রমিক ন্যায়: স্বাস্থ্যের অধিকারের আইন যার দ্বারা সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিচর্যার সকলে সুযোগ পান, জাতীয় নূ্যনতম মজুরি দিন প্রতি ৪০০ টাকা, শহর এলাকায় কাজের নিশ্চয়তা আইন প্রণয়ন, অসংগঠিত ক্ষেত্রে জীবনবিমা ও পথ দুর্ঘটনা বিমার সুযোগ এবং সরকারের কেন্দ্রীয় কর্মস্থলে চুক্তিভিত্তিক কর্মসৃষ্টি বন্ধ করা৷
এছাড়াও অগ্নিবীর প্রকল্পের বিলুপ্তির কথাও ইস্তেহারে বলা হয়েছে৷ আর্থ-সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষা কেন জাতীয় কংগ্রেস করতে চাইছে, তাও স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে ইস্তেহারে৷ কংগ্রস দেশব্যাপী আর্থ-সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষার মাধ্যমে কত জাতি এবং উপজাতি আছে এবং তাঁরা কীরকম আর্থ-সামাজিক অবস্থায় দিন গুজরান করছেন, তা তুলে ধরে তাঁদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নিশ্চয়তা প্রদান করবে৷ সংরক্ষণের ৫০ শতাংশ ঊর্ধ্বসীমাও বৃদ্ধি করা হবে৷ সমস্ত জাতি এবং সম্প্রদায়ের যাঁরা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া তাঁদের কোটাও বৃদ্ধি করা হবে৷ এসসি, এসটি ও ওবিসি’দের জন্য ব্যক্তি মালিকানাধীন সংস্থায় সংরক্ষণ লাগু করার জন্য আইন তৈরি করার কথাও ইস্তেহারে বলা হয়েছে৷ মৎস্যজীবীদেরও জাতিগত সমীক্ষার আওতায় এনে তাঁদের উল্লেখ থাকবে৷
জাতিগত সমীক্ষা নিয়ে বিজেপির কোনও মাথাব্যথা নেই, তা তাদের ইস্তেহারে বিষয়টির অনুল্লেখ থেকেই স্পষ্ট৷ তৃণমূল কংগ্রেসের ইস্তেহারেও এটির উল্লেখ নেই৷ সমাজবাদী পার্টি ২০২৫ সালের মধ্যে জাতি-সমীক্ষা সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি ইস্তেহারে রেখেছে৷ সিপিআইএম ইস্তেহারেও জাতিগত সমীক্ষার কথা উল্লেখ আছে৷ কেন্দ্রীয়ভাবেএকটি আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যে জনবিন্যাসের চরিত্র বুঝে পরিকল্পনা ব্যয় ধার্য করে তা করার কথা বলা হয়েছে৷ সিপিআইএমলে (লিবারেশন) তাদের ইস্তেহারে ৭ নং অনুচ্ছেদে ‘সামাজিক কল্যাণ ও প্রকল্পের প্রসার’ শিরোনামে প্রথম বিন্দুতে বলেছে একটি ‘সর্বভারতীয় জাতিগণনা’ পরিচালনা করতে হবে এবং তার ভিত্তিতে সংরক্ষণের পরিধি প্রসারিত করতে হবে৷ পাঁচ নম্বর বিন্দুতে বলেছে, এসসি/এসটি সাব প্ল্যান, ২০১৩, এসসি/এসটি নিপীড়ন নিবারণ আইন, ১৯৮৯/১৯৮৫, এবং ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জারস (হাতে করে বর্জ্য সংগ্রহকারী) আইন, ২০১৩, অবশ্যই কঠোরভাবে বলবৎ করতে হবে এবং বিষয়টি নিয়মিত নজরদারিতে রাখতে হবে৷ এই বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই তাদের ইস্তেহারে অন্য মাত্রা দিয়েছে, যা অন্যান্য দলের ইস্তেহার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ ওই দলের (সিপিআইএমএল লিবারেশন) ইস্তেহারে ওই একই শিরোনামে শেষ তিন বিন্দু উল্লেখ অপ্রাসঙ্গিক হবে না৷
৬৷ বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের সমস্ত জনপরিসরে ও পরিবহণে সমান প্রবেশাধিকার চাই৷ শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে ৫ শতাংশ আসন তাঁদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে, তাঁদের উপার্জনের পের কোনও কর আরোপ করা চলবে না, তাঁদের ব্যবহার্য সহায়ক প্রযুক্তি ও যন্ত্রাদির জন্য সরকারি অর্থানুকুল্যের পর্যাপ্ত সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে৷
৭৷ প্রবীণ নাগরিক, বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি এবং বিধবাদের মাসে ১০ হাজার টাকা পেনশনের নিশ্চয়তা দিতে হবে, যা মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ)-র সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে৷
৮৷ সাচার কমিটি ও রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের সুপারিশগুলি সার্থক ও সময়ানুগ রূপায়ণ চাই৷
উল্লেখ্য, আরজেডিও জাতি সমীক্ষার পক্ষে ইস্তেহারে উল্লেখ করেছে৷ নীতীশ কুমারের জেডিইউ, আরজেডি ও কংগ্রেস-বামেরা মিলে যখন মহাগঠবন্ধন সরকার গঠন করেছিল, সেই সময় বিহারই প্রথম রাজ্য, যেখানে আর্থ-সামাজিক জাতিগণনা সমীক্ষা সংগঠিত হয়৷
শ্রমিকদের নূ্যনতম মজুরি ৪০০ টাকা প্রতিদিন অর্থাৎ মাসে ১২ হাজার টাকার কথা কংগ্রেস ইস্তেহারে বলা হলেও সিপিআই(এম) মাসে ২৬ হাজার এবং সিপিআইএমএল লিবারেশন মাসে শ্রমিকদের ৩৫ হাজার টাকা জাতীয় নূ্যনতম মজুরির কথা বলেছে৷ তৃণমূল অবশ্য এক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে৷
বিজেপি ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ সাংসদ ও রাজ্য বিধানসভায় বিল পাশ করে আইন করলেও তা লাগু করার বিষয়ে উদাসীন থেকেছে৷ কংগ্রেস কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলেছে নারীদের৷ সিপিআই(এম) ও সিপিআই (এমএল) লিবারেশন এলজিবিটিকিউদের অধিকারের (সম) কথা বলেছে৷ লিবারেশন তাদের আইনি সুরক্ষা ও সহায়ক ব্যবস্থাপনা রাখার কথা বলেছে৷ রূপান্তরকামী গোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার কথাও লিবারেশন বলেছে৷ তারা কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের হেনস্থা বন্ধ করতে বিশাখা গাইডলাইন কঠোরভাবে বলবৎ করার কথা বলেছে৷ জাস্টিস ভার্মা কমিটির রিপোর্টের সমস্ত সুপারিশ কার্যকর করার কথাও লিবারেশন বলেছে৷ কর্মস্থলে যৌন হেনস্থা বন্ধে এ রাজ্যে নাগরিক মঞ্চ আন্দোলনরত৷ যেমন আন্দোলনরত অসরকারি সংস্থা সংহিতা৷ আইএনডিআইএ জোট শরিকরা দেশ বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও ও গণতন্ত্র বাঁচাও দাবিতে ইস্তেহারে ঐক্যমত্য দেখিয়েছে৷ জাতীয় কংগ্রেস জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের উল্লেখও রেখেছে ইস্তেহারে৷ শস্যের নূ্যনতম সহায়কমূল্য পেতে কৃষকদের জন্য আইনি নিশ্চয়তা প্রদানের কথা কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিআই, সিপিআইএম এবং সিপিআই(এমএল) লিবারেশন ইস্তেহারে উল্লেখ রেখেছে৷ সামগ্রিক বিচারে জাতীয় কংগ্রেসের ২০২৪-এর নির্বাচনী ইস্তেহার প্রগতিশীল হয়েছে একথা বলাই যায়৷