জাতীয় পুরস্কার জয়ী পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী প্রয়াত

বাসভবনে ২০ আগস্ট, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর রিজেন্ট এস্টেটের প্রয়াত হয়েছেন জাতীয় পুরস্কার জয়ী চিত্রপরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। গত এপ্রিল মাস থেকে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় তিনি ভুগছিলেন। তবে চিকিৎসার পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। ইচ্ছা প্রকাশও করেছিলেন নতুন ছবি করার। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

আশির দশক থেকে একের পর এক ছবি করে তিনি যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ‘ময়নাতদন্ত’ (১৯৮০), চোখ (১৯৮৩), দেবাশিস (১৯৮৫) ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত ছবিগুলির অন্যতম।

তথ্যচিত্র নির্মাণের মধ্যে দিয়ে তিনি প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন। ‘মুক্তি চাই’ (১৯৭৭) তাঁর প্রথম তথ্যচিত্র। পরে সঙ্গীতশিল্পী দেবব্রত বিশ্বাসকে নিয়ে তথ্যচিত্র ‘দেবব্রত বিশ্বাস’ (১৯৮৩) এবং সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গীত নিয়ে তথ্যচিত্র ‘দ্য মিউজিক অফ সত্যজিৎ রায়’ (১৯৮৪) তৈরি করেন। কবি-সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়েও তথ্যচিত্র ‘সুনীল সাগরে’ নির্মাণ করেন।


১৯৮২ সালে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে ‘চোখ’-এর জন্য তিনি পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। ‘নন-ফিচার ফিল্ম’ বিভাগে শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবেও ১৯৮৪ সালে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তাঁর ‘দ্য মিউজিক অফ সত্যজিৎ রায়’ তথ্যচিত্রের জন্য।
তাঁর প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘ময়না তদন্ত’-র জন্য ১৯৮০ সালে পেয়েছিলেন ‘ইন্দিরা গান্ধি পুরস্কার’। এছাড়াও রাষ্ট্পতি পুরস্কার ও এনএফডিসি-র স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর ‘চোখ’ ছবির পোস্টার এঁকেছিলেন সত্যজিৎ রায়।

চিত্র পরিচালক শতরূপ সান্যাল উৎপলেন্দুর স্ত্রী (তঁাদের দুই কন্যা চিত্রাঙ্গদা ও ঋতাভরী টলিউডের প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। তবে উৎপলেন্দু ও শতরূপ দীর্ঘদিন ধরেই আলাদা ভাবে বসবাস করতেন। উৎপলেন্দুর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনেছিলেন শতরূপ।

উৎপলেন্দু স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষায় পাশ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সে সময় পুরুলিয়ায় আদিবাসীদের সঙ্গে বেশ কিছুদিন কাটিয়ে ছিলেন। যদিও শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও সিনেমার প্রতি ছিল তাঁর গভীর আবেগ তাই আর এখানেই তিনি নিজের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন।