• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ভোটের পরই ‘নবজোয়ার-২ কর্মসূচি’

ধূপগুড়ি থেকে অভিষেকের ‘নতুন তৃণমূল’-এর ব্যাখ্যা নিজস্ব প্রতিনিধি— শুক্রবার উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ির মাটিতে দাঁড়িয়ে নবজোয়ার-২ কর্মসূচির ডাক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের৷ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ধূপগুড়ির বিধায়ক ঠিক করবেন ধূপগুড়ির মানুষই, বার্তা অভিষেকের৷ এই প্রসঙ্গেই অভিষেকের কণ্ঠে শোনা যায় ‘নতুন তৃণমূল’ এর ব্যাখ্যা৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘মানুষ যেভাবে তৃণমূলকে দেখতে চায় সেভাবেই নতুন রূপে গড়ে

ধূপগুড়ি থেকে অভিষেকের ‘নতুন তৃণমূল’-এর ব্যাখ্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি— শুক্রবার উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ির মাটিতে দাঁড়িয়ে নবজোয়ার-২ কর্মসূচির ডাক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের৷ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ধূপগুড়ির বিধায়ক ঠিক করবেন ধূপগুড়ির মানুষই, বার্তা অভিষেকের৷ এই প্রসঙ্গেই অভিষেকের কণ্ঠে শোনা যায় ‘নতুন তৃণমূল’ এর ব্যাখ্যা৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘মানুষ যেভাবে তৃণমূলকে দেখতে চায় সেভাবেই নতুন রূপে গড়ে উঠবে তৃণমূল৷ যাঁরা জীবন বিপন্ন করে মানুষকে পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর হবেন, তাঁদের নিয়ে গড়ে উঠবে তৃণমূল৷’’ তিনি নবজোয়ার-২ কর্মসূচি সম্পর্কে আরো বলেন, ৪ঠা জুন নির্বাচনের ফল প্রকাশ হবে৷ এই জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়িতে জুন মাসের শেষে আমি আবার আসবো৷ আপনাদের একটা ফোন নম্বর দিয়ে যাবো৷ সেই নম্বরে সরাসরি ফোন করে জানাবেন ধূপগুড়ি বিধানসভা থেকে কাকে বিধায়ক হিসেবে দেখতে চান, তাঁকেই মনোনীত করা হবে৷ ধূপগুড়ির বিধায়ক ধূপগুড়ির মানুষ ঠিক করবে৷ দরকার পড়লে আমি নিজে বৈঠক করে ড্রপ বক্স রেখে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে আপনাদের থেকে মতামত নেবো৷ পাশাপাশি পৌরসভার ক্ষেত্রেও তাই হবে৷ এক্ষেত্রে নবজোয়ারের মতোই প্রত্যেক ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ড্রপ বক্স রাখা হবে, মানুষ সেখানেই নিজের মতামত দেবেন কাকে কাউন্সিলর হিসেবে দেখতে চান৷’’

এদিন ধূপগুড়ির ঝুমুর সেতু সংলগ্ন মাঠের ব্যাপক জনজোয়ার প্রমাণ করে উত্তরবঙ্গের মাটিতে জোড়াফুল ফুটবে৷ অভিষেকের ভাষায়, ‘‘জলপাইগুড়ির মাটি জুমলাবাজদের মাটি নয়৷ আমি জানিনা এই দৃশ্য দেখার পর বিজেপির নেতাদের ঘুম হবে কিনা! তবে এইটুকু বলতে পারি, দিল্লিতে ভূমিকম্প হয়েছে এই সভা দেখার পর৷’’ এদিনের সভা থেকে তৃণমূল সেনাপতি তাঁর পূর্ব প্রতিশ্রুতি রক্ষার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ধূপগুড়িকে মহকুমা করে দেওয়ার কথা দেওয়া হয়েছিল সেটি হয়েছে৷ এবার মহকুমাকে আরো এক ধাপ উন্নত করার পথে চালিত হন অভিষেক৷ তিনি ধূপগুড়ির সভা থেকে দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘‘তিন মাসের মধ্যে ৬০ বেডের ধূপগুড়ি হাসপাতালকে ১০০ বেডের ধূপগুড়ি মহকুমা হাসপাতালে পরিণত করে দেখাবো৷’’ পাশাপাশি তিনি কিছু প্রতিশ্রুতি দেন৷ এক, হলদিবাড়ি শহরে প্রায় দেড়শো মিটার একটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজের প্রয়োজন রয়েছে৷ নির্বাচন শেষ হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে মেখলিগঞ্জে এই ব্রিজ তৈরী করবে তৃণমূল৷ দুই, ক্রান্তি ব্লকের সাথে মাল ব্লক সংযোগকারী ব্রিজটি একশো থেকে দেড়শো কোটি টাকার খরচে তৈরী করে দেওয়া হবে চলতি বছরের মধ্যেই৷ এই প্রসঙ্গেই সাধারণ মানুষের এই ব্রিজ সংক্রান্ত সমস্যাকে তুলে ধরে জয়ন্ত রায় কে কটাক্ষ করেন অভিষেক৷ তিনি বলেন, ‘‘জয়ন্ত রায়কে আপনারা ভোট দিয়েছিলেন ২০১৯ সালে৷ এক বুক আশা নিয়ে৷ কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে? এক ফুট ব্রিজও বানাতে পেরেছেন?’’ নির্বাচনের পর বাংলার বুক থেকে বেপাত্তা হয়ে যায় গেরুয়া শিবির৷ সেই প্রসঙ্গে অভিষেক আক্রমণ করতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী একটি নোটিফিকেশন করে সরকারের তরফ থেকে বলুক প্রতি এক মাসে জলপাইগুড়িতে আসবেন, তাহলে আমি তৃণমূলের হয়ে ভোট চাইতে যাবো না৷’’

পাশাপাশি এদিন ভারত যে সবক্ষেত্রেই নিম্নগামী তার পরিসংখ্যানগত প্রমান তুলে ধরেন ধূপগুড়ির মঞ্চ থেকে৷ বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা সূচক, বিশ্ব ক্ষুধা সূচক, গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স, দুর্নীতি অনুধাবন সূচক, গণতন্ত্র সূচক এইসবেই ভারতের অবস্থান পিছিয়ে ২০১৪ সালের তুলনায় অর্থাৎ বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর, এর ব্যাখ্যা দেন অভিষেক৷

এক নীতিগল্পের মাধ্যমে এবার কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন অভিষেক৷ তাঁর মতে, বিজেপিকে নেংটি ইঁদুর থেকে বিড়াল, বিড়াল থেকে কুকুর, কুকুর থেকে বাঘ বানিয়েছে সাধারণ মানুষই৷ আগামী ১৯ তারিখ এই বাঘগুলোকে পুনরায় নেংটি ইঁদুরে পরিণত করার সুযোগ পাবেন মানুষ৷

অভিষেকের ভাষায়, ‘‘এমনভাবে বোতাম টিপবেন যাতে দিল্লিতে বসে থাকা বাংলা বিরোধীদের পায়ের তলার মাটি সরে যায়৷ আগামী ৪ঠা জুন ভোট বাক্স খুলবে৷ সেদিন বিজেপির নেতারা যেন পদ্মফুলের জায়গায় চোখে সর্ষে ফুল দেখেন৷’’ পাশাপাশি এদিন বিজেপিকে অভিষেকের দেওয়া ‘ওপেন চ্যালেঞ্জ’ এর কথাও মনে করিয়ে দেন৷ তুলে ধরেন তৃণমূলের প্রকল্পগুলির খতিয়ান৷ চলতি বছরেই আবাসের ব্যবস্থা করে দেবে রাজ্য সরকারই, এটিও পুনরায় স্পষ্ট করে বলেন অভিষেক৷ একশো দিনের কাজের টাকাও রাজ্য সরকারই প্রদান করেছে, তাও বলেন অভিষেক৷ ফের প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন সাধারণ মানুষের দিকে ‘‘কার গ্যারান্টি নেবেন? দিদি নাকি মোদী?’’ এর ইতিবাচক উত্তর টাও পান সভাস্থল থেকেই৷ ‘‘আমার কাছে ডায়মন্ড হারবার যা, জলপাইগুড়িও তাই৷ আমার কাছে দক্ষিণ কলকাতা যা, জলপাইগুড়িও তাই’’, ধূপগুড়ির জনস্রোতের উদ্দেশ্যে এমনই বার্তা দেন তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়৷