‘চরিত্রের ঠিক নেই’, বিধায়কদ্বয়ের শপথ ইস্যুতে রাজ্যপালকে কটাক্ষ ফিরহাদের
নিজস্ব প্রতিনিধি: দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথগ্রহণ জট অব্যাহত। বরাহনগর উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং ভগবানগোলা উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী রেয়াত হোসেনের শপথগ্রহণ ঘিরে বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্য-রাজভবনের জটিলতা চলছে। এবার অভিনেত্রী তথা বিধায়িকা সায়ন্তিকা নিজেই চিঠি লিখলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেই বিধায়ক পদে শপথ নিতে চান সায়ন্তিকা, বোসকে লেখা চিঠিতে তাই জানালেন বিধায়িকা। সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিন বিধানসভায় এসেছিলেন তিনি। স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সায়ন্তিকা। সেখানেই তাঁর শপথগ্রহণ ঘিরে তৈরি হওয়া জটিলতা প্রসঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন স্পিকার বিমানের সঙ্গে। এরপরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপালকে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি জানান সায়ন্তিকা। তাঁর চিঠি পাঠানোর কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি জয়ী হওয়ার পর দু’সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। আমার হাতে মাত্র দেড় বছর সময় রয়েছে বরাহনগরের মানুষের জন্য কাজ করে দেখানোর। অথচ, এখনও শপথ নিতে না পারায় বিধায়ক হিসেবে কাজ শুরু করতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়েই আমি রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছি।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমি বিধানসভার সদস্য, এখান থেকেই আমাকে কাজ করতে হবে। তাই আমি চাই স্পিকার আমাকে শপথগ্রহণ করান। তাই আমি রাজ্যপালকে চিঠি লিখে সেই বিষয়ে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেছি।”
অন্যদিকে রেয়াত হোসেন জানিয়েছেন, রাজভবন থেকে তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় জানানো হয়েছিল যে মেল করে তাঁকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আসার আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সোমবার সকাল পর্যন্ত তিনি শপথগ্রহণ সংক্রান্ত কোনও মেল পাননি! ফলে রাজভবনের খামখেয়ালিপনা অথবা দায়িত্বহীনতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাই এই শপথগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা কাটাতে তিনিও স্পিকার বিমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। এই ইস্যুতে রাজ্যপালের কড়া সমালোচনা করতে গিয়ে তাঁর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “স্পিকারের অধিকার খর্ব করে নির্বাচিত সিস্টেমকে অপমান করা হচ্ছে। গায়ের জোরে কেন্দ্রের অঙ্গুলিহেলনে এই রাজ্যপাল বাঁদরের নাচ নাচছেন, তাঁর চরিত্রেরও কোনও ঠিক নেই। আর তিনি মানুষের দ্বারা নির্বাচিত বিধায়কদের শপথগ্রহণে বাধা দিচ্ছেন!” উল্লেখ্য, দুই নবনির্বাচিত বিধায়কদের ২৬ জুন রাজভবনে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের কে শপথবাক্য পাঠ করাবেন সেই নাম উল্লেখিত ছিল না রাজভবনের ওই চিঠিতে। সোমবার সায়ন্তিকার জবাবি চিঠিতে স্পষ্ট হয়ে যায়, তিনি কোনও ভাবেই রাজভবনে শপথ নিতে যেতে ইচ্ছুক নন। রেয়াত হোসেনও সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী নন। সায়ন্তিকার সাথে সাক্ষাতের পর স্পিকার বিমান বলেছেন, “আমার মনে হয় নতুন বিধায়কদের শপথ নিতে না পারার জন্য বহুলাংশে রাজভবনের ভূমিকা রয়েছে। বিধায়কদের শপথগ্রহণ একটি সাংবিধানিক পরম্পরা। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আমাদের এই সব দেখতে হচ্ছে। রাজ্যপাল যদি আগ্রহী হন, তা হলে উনি বিধানসভায় এসে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে যান, আমরা সব বন্দোবস্ত করে দেব।” বর্তমানে দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ ঘিরে জটিলতা প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন স্পিকার এবং রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।