নিজস্ব প্রতিনিধি — লোকসভা ভোটে বড় রকমের সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল৷ আসনসংখ্যা এবং ভোটের হার– দুটোই বেড়েছে গতবারের তুলনায়৷ এই সাফল্যের নেপথ্যে অবশ্যই রয়েছে সরকারি পরিষেবা বন্টন৷ দুর্নীতির অভিযোগ থেকে শুরু করে কুৎসা-অপপ্রচার বিরোধীদের কোনও অস্ত্রই কাজে আসেনি৷ জনাদেশ গিয়েছে তৃণমূলের পক্ষেই৷ ফলাফল প্রকাশের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন৷ আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল৷ আরও ভালোভাবে কাজ করতে হবে৷ সেই প্রতিশ্রুতিকে কাজে লাগাতে প্রশাসনকে আরও চাঙ্গা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী৷ সেই কারণে আগামী মঙ্গলবার ১১ জুন, বিকলে চারটেয় নবান্নে এক মেগা বৈঠক ডেকেছেন তিনি৷ সেখানে উপস্থিত থাকবেন সব দফতরের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, দফতরের প্রধান সচিব, বিভাগীয় প্রধান, জেলাশাসক, পুলিশ সুপাররা৷
এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি তুলে নেওয়ার পরে সোমবারই বেশ কিছু অফিসারদের পুরনো পদে ফিরিয়ে আনা হবে৷ যাঁদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কিছু জেলাশাসক, অফিসার, পুলিশ কর্তারা৷ যাঁদের নির্বাচন কমিশন ভোটের আগে পদ থেকে সরিয়েছিল৷ এই হারানো পদ ফিরে পাওয়া প্রাথীর মধ্যে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার৷
সোমবার হারানো পদ ফিরিয়ে দেওয়ার পরের দিনই নবান্নের এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বিভিন্ন দফতরের অফিসারদের সঙ্গে কথা বলবেন৷ সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের নিরিখে বিভিন্ন দফতরের কাজ নিয়ে বিশ্লেষণ করতে পারেন৷ সেই সূত্রে কেউ পেতে পারেন প্রশংসা, কারো ভাগ্যে তিরস্কারও জুটতে পারে৷ এই নিয়ে জল্পনা চলছে নবান্নের অন্দরে৷ কারণ সূত্রের খবর, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতায় নেমেছিলেন নবান্নের অভ্যন্তরেরই বহু পদস্থ কর্মচারী৷ প্রশাসনিক স্তরে কাজ করা অনেকেই সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করে গিয়েছেন৷ সেসব জল্পনা নিয়ে ওয়াকিবহাল মুখ্যমন্ত্রী৷ সেই কারণে মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়৷
এই মুহূর্তে নবান্নের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ অর্থের সংস্থান৷ এমনিতেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার খাতে অর্থের জোগান দিতে রাজ্যের কোষাগারের ওপর চাপ বেড়েছে. তার ওপর নির্বাচনের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকার গ্রামীণ আবাস প্রকল্পে বকেয়া অর্থ দিক বা না-ই দিক, ১১ লক্ষ মানুষকে আবাসের জন্য অনুদান দেওয়া হবে৷ সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হলেও অর্থের সংস্থান করা দরকার৷ মঙ্গলবারের বৈঠকে তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে৷
যদিও নবান্ন কর্তারা মনে করছেন, কেন্দ্রের দিকে থেকে যে আর্থিক বঞ্চনা ভোগ করছে বাংলা, সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে এইবার৷ কেন্দ্রের জোট সরকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই বন্ধু চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং নীতীশ কুমার থাকায় এবার বাংলার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়তে পারে৷