জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিলেন মমতা ও শতাব্দী

সেতুর  ভগ্ন স্বাস্থ্য মেরামত করে তৈরী হবে বিকল্প সেতু 
খায়রুল  আনাম: জেলা বীরভূমের উপর দিয়ে যাওয়া ১৬০ কিমি দৈর্ঘ্যের  রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম জাতীয় সড়ক জেলার গুরুত্বপূর্ণ  দুবরাজপুর, সিউড়ি, মহম্মদবাজার, মল্লারপুর,  রামপুরহাট, নলহাটির মতো জনবহুল এলাকার ভিতর দিয়ে গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের  সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বজায় রাখতে এই সড়কের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এমন কী, পানাগড়ে  ভারতীয় সেনাবাহিনীর  গুরুত্বপূর্ণ  যে ঘাঁটি রয়েছে, তারাও  ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে সরাসরি সংযোগরক্ষাকারী এই সড়ক ব্যবহার করে থাকে।  গুরুত্বপূর্ণ  এই সড়কের উপরে ৬০ থেকে ৭০ বছর আগে তৈরী যে ছোট-বড় মিলিয়ে বিভিন্ন নদনদী ও কাঁদরের উপরে  ৪০টির মতো সেতু রয়েছে,  সেগুলির উপর দিয়ে ৫ থেকে ১০ টনের বেশি মালপত্র বহনকারী  যানবাহন চলাচল করা  নিষিদ্ধ। কিন্তু সেতুগুলি তৈরী হওয়ার পরবর্তী   সময়ে সড়ক পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রভূত পরিবর্তন  আসার পরিপ্রেক্ষিতে  বর্তমানে এই সড়কের উপর দিয়ে  বহু সংখ্যক  ৪০ থেকে ৫০ টনের বেশি মালপত্র বহনকারী  গাড়ি চলাচল করছে। এক সময়  রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি  গোস্বামী এ ব্যাপারে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের  দৃষ্টি আকর্ষণ  করে কিছুটা মেরামতের কাজ করাতে পারলেও, পরবর্তীতে এই সেতুগুলি আর মেরামত হয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোলপুরে গীতাঞ্জলি  প্রেক্ষাগৃহে বীরভূম জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে এসে এব্যাপারে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের  দৃষ্টি আকর্ষণ  করেছিলেন।  বীরভূম কেন্দ্রের সাংসদ শতাব্দী  রায়ও বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন দফতরের মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির সঙ্গে দেখা করে এব্যাপারে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ  করা ছাড়াও সংসদেও বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। তারপর এই জাতীয় সড়কে কিছু কিছু জায়গায় পিচের প্রলেপ আর সেতুগুলির রেলিঙে রঙের প্রলেপ দেওয়া  আর  ‘দুর্বল সেতু’ বোর্ড লাগানো  ছাড়া আর কোনও কাজ-ই হয়নি।
এবার জাতীয় সড়কের এমন  ১৩ টি সেতুর ভগ্ন স্বাস্থ্য  নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ।  ১৯৬০ সালে তৈরী ব্রাহ্মণী নদীর উপরে জাতীয় সড়কের একাংশ ভেঙে শিক বেরিয়ে  পড়ায় সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় রীতিমতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।  মেরামতের জন্য সেই ভাঙা অংশ ঘিরে দিয়ে কোনক্রমে সড়ক পরিবহন  ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের  জেলা নির্বাহী বাস্তুকার জয়ন্ত গড়াই স্বীকার করে নিয়েছেন যে,  এই সেতুগুলির ভগ্ন স্বাস্থ্য  উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তাই এমন  ভগ্ন স্বাস্থ্যের ১৩ টি সেতুর স্বাস্থ্যের  হাল সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে  আগামী সপ্তাহেই  জাতীয় সড়কের পরামর্শদাতা কমিটি এখানে আসতে চলেছে। এই কমিটিই ভগ্ন স্বাস্থ্যের ১৩ টি সেতুর হাল সরেজমিনে  খতিয়ে দেখবে এবং তার রিপোর্ট  ঊর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের  কাছে পাঠাবে।  জানা যাচ্ছে যে, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা যাতে অচল হয়ে না পড়ে, সেজন্য  এইসব ভগ্ন স্বাস্থ্যের ১৩ টি সেতুর পাশে দু’লেনের সেতু তৈরী করে  সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখা হবে এবং পাশাপাশি চার লেনের সেতু তৈরী করা হবে। এই কাজ সম্পূর্ণ  হওয়ার পরে পুরনো সেতুগুলি ভেঙে দেওয়া হবে।