• facebook
  • twitter
Thursday, 14 November, 2024

ওয়েনাড়ে কমল ভোটের হার , কারণ পর্যালোচনা কংগ্রেসের   

বহুচর্চিত কেরলের ওয়েনাড় লোকসভা উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। চলতি বছরেরই এপ্রিলে হওয়া লোকসভা ভোটে ৭৩ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পড়েছিল। তখন প্রার্থী  ছিলেন রাহুল গান্ধী। তার আগে ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রেই ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। প্রার্থী ছিলেন সেই রাহুলই। তাঁর ছেড়ে দেওয়া আসনে এবার প্রার্থী হন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। প্রশ্ন উঠেছে, গত কয়েক বারের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় ভোটের হার কেন এতটা কমে গেল ? এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরমহলেও।

বহুচর্চিত কেরলের ওয়েনাড় লোকসভা উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। চলতি বছরেরই এপ্রিলে হওয়া লোকসভা ভোটে ৭৩ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পড়েছিল। তখন প্রার্থী  ছিলেন রাহুল গান্ধী। তার আগে ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রেই ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। প্রার্থী ছিলেন সেই রাহুলই। তাঁর ছেড়ে দেওয়া আসনে এবার প্রার্থী হন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। প্রশ্ন উঠেছে, গত কয়েক বারের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় ভোটের হার কেন এতটা কমে গেল ? এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরমহলেও। কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল জানিয়েছেন, ভোটদানের হার কমে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে আলোচনায় বসবেন তাঁরা।

 
উপনির্বাচনের দিন অর্থাৎ বুধবার সকালে শুরুতে ভালোই ভোট পড়ছিল ওয়েনাড়ে। মনে করা হচ্ছিল আগের থেকে ভোটদানের হার বাড়বে। কিন্তু বেলা গড়াতেই ফিকে হতে শুরু করে সেই আশা। ভোটের হার ৫০ শতাংশ পেরোতে সময় লেগে যায় ৮ ঘন্টা। সন্ধে ৬ টায় নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত হিসেবে অনুযায়ী ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৬৪.৬৯ শতাংশ। তবে কমিশন এও জানায়, এই হিসেবে চূড়ান্ত নয়, কারণ বহু বুথেই সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোটারদের লম্বা লাইন ছিল। 
 
ওয়েনাড়ের উপনির্বাচন দিয়েই ভোটের ময়দানে অভিষেক হয়েছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর। সাধারণত উপনির্বাচনগুলিতে ভোটদানের হার কিছুটা কমই দেখা যায়। তবে ওয়েনাড়ে এবারের উপনির্বাচন ঘিরে যথেষ্ট তৎপর ছিল কংগ্রেস। প্রিয়াঙ্কাকে পাঁচ লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়েছে কংগ্রেস। ভোটদানের হার কমে যাওয়ায় সেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছন কংগ্রেসের কাছে অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে। কারণ তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে যখন ওয়েনাড়ে ৮০.৩৩ শতাংশ ভোট পড়েছিল তখনও রাহুল পাঁচ লাখ ভোটের ব্যবধানে জিততে পারেননি। সেবার রাহুলের জয়ের ব্যবধান ছিল ৪ লাখ ৩১ হাজার ভোটের। ২০২৪-এ রাহুল জেতেন সাড়ে তিন লাখের কিছু বেশি ভোটে।

কয়েক মাসের ব্যবধানে কী করে ওয়েনাড়ে ভোটদানের হার কমে গেল, তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া। স্থানীয় নেতাদের একাংশের মতে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোটদানে অনীহা তৈরি হয়েছে।  এর মধ্যে অন্যতম কারণ  ওয়েনাড়ে ভয়াবহ ধসের পর থেকে পর্যটকের সংখ্যায় অনেকটাই ভাঁটা পড়েছে। ফলে আর্থিক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন ভোটারদের একাংশ। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিয়েও ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আবার সাত মাস আগে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এখন ওয়েনাড়ে নেই।  ফলে ভোটদানের হার কমে গিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা বেনুগোপালও জানিয়েছেন, ভোটদানের হার কমে যাওয়ায় দলে উদ্বেগ থাকলেও প্রিয়াঙ্কার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। জয়ের ব্যবধানেও এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলে আশা তাঁর। কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা অবশ্য দাবি করছেন, ওয়েনাড়ে কংগ্রেসের সমর্থক ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা নিজেদের ভোট দিয়েছেন। 

কেরল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ভিডি সাথিসনের মতে, সিপিএমের প্রভাব যে জায়গাগুলিতে রয়েছে সেখানে মানুষের মধ্যে ভোট দেওয়ার উৎসাহ কম।  অন্যদিকে এলডিএফ এবং বিজেপির নেতৃত্বে গঠিত এনডিএফ এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের পাল্টা যুক্তি, কংগ্রেস এবং তার জোট দলগুলির প্রভাব যে জায়গাগুলিতে রয়েছে সেখানকার মানুষই ভোট দেননি।   ওয়েনাড়ে প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে সিপিআই প্রার্থী সত্যেন  মোকেরি। ভোটদানের সামগ্রিক হার কমলেও, এলডিএফ শিবির ঠিকঠাকই ভোট পেয়েছে বলে আশাবাদী তিনি। তাঁর কথায়, “যাঁরা ভোট দেননি তাঁরা এলডিএফের ভোটার নন। তাঁরা ইউডিএফের ভোটার।”

অন্যদিকে ত্রিচূড়ের চেলাক্কারা বিধানসভা কেন্দ্রে ৭২.৫৪ শতাংশ রেকর্ড ভোট পড়েছে। নির্বাচন কমিশন মনে করে এই হার আরও বাড়তে পারে। কারণ অনেকেই সময় শেষের পরেও লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।  উপনির্বাচন সম্পন্নও হয়েছে কড়া প্রহরায়।  

নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওয়েনাড়ে নথিভুক্ত ভোটারের সংখ্যা ১৪ লক্ষ।ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে ৭টি বিধানসভা। এই কেন্দ্রে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নতুন চ্যালেঞ্জ বিজেপির নব্যা হরিদাসের সামনেও। তবে বরাবরই কংগ্রেসের শক্ত  ঘাঁটি ওয়েনাড়ে ‘প্রিয়াঙ্কা ফ্যাক্টর’ কতটা কাজ করবে তা বলবে আগামী দিনই।