‘আমাকে এবার ছেড়ে দিন’, মমতার কাছে কথাটা পাড়লেন সুব্রত বক্সী

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শুক্রবার নয়াদিল্লিতে তৃণমূলের সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে সুব্রত বক্সী মমতার উদ্দেশে হঠাৎই বলেন, এবার আমাকে ছেড়ে দাও। অনেক দিন তো হল।

তা সত্যিই অনেক দিন হল। রাজনৈতিক দলের রেকর্ড গিনেজ বুকে লেখা থাকলে সুব্রত বক্সীর নাম উঠতে পারত তাতে। তৃণমূলের জন্ম সময় থেকে এখনও পর্যন্ত দলের রাজ্য সভাপতি হলেন সুব্রত বক্সী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আস্থাভাজন বললেও তাঁকে কম বলা হয়। তৃণমূলের প্রতি এমন নিষ্ঠাবান, রুক্ষ শুষ্ক নেতা দ্বিতীয় খুঁজে পাওয়া ভার।

সূত্রের খবর, বক্সীর এ কথা শুনে যখন সবাই চুপ, তখন হেসে ফেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে বলেন, দেখো কী বলছে! ফের বক্সীর দিকে তাকিয়ে তিনি হেসে বলেন, তুমি কি আমার বিরুদ্ধে দল পাকাচ্ছো! সবাই যখন পদ চাইছে, ছেলে মেয়েকে ঢোকাতে চাইছে, তখন ইনি বলছেন কিনা পদ চাই না।


অনেকে মনে করছেন, সুব্রত বক্সীর এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। দলের প্রবীণদের উপরেও একপ্রকার চাপ তৈরি করা। এবং তা এমন একটা সময়ে করেছেন সুব্রত বক্সী, যখন দলের সংগঠনে রদবদল অনিবার্য বলেই মনে করা হচ্ছে। জেলা স্তরে সংগঠনে বদল তো হবেই। রাজ্য সংগঠনেও কিছু বদল হতে পারে। শুক্রবারের বৈঠকে আরও একটা বিষয় অনেকের নজরে পড়ে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

দেখা যায়, বৈঠকের এক সময়ে সুব্রত বক্সী উঠে গিয়ে অভিষেকের কানের কাছে গিয়ে কিছু বলছেন। অভিষেক তাতে ঘাড় নেড়ে ‘না না’ বলছেন। পরে একবার দেখা যায়, সুব্রত বক্সী অভিষেককে জড়িয়ে ধরেছেন। দলের কয়েকজন সাংসদ ঘরোয়া আলোচনায় দাবি করছেন, সুব্রত বক্সী সস্নেহে অভিষেকের বাম গালে চুমুও খান। সুব্রত বক্সী দলের মধ্যে বরাবরই কাঠকাঠ কথা বলেন। কোনও পেলব ব্যাপার নেই। সেই তিনি এতো আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন, দেখে দলের অনেক সাংসদই বিস্মিত হয়েছেন।

কালীঘাট ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, অভিষেককে জন্মাতে দেখেছেন বক্সীদা। ছোট বেলা থেকে কোলেপিঠে তুলেছেন। স্নেহ তো থাকবেই। অনেকে মনে করছেন, শুক্রবার কলকাতা থেকে দিল্লিতে যাওয়া ও শনিবার ফেরার সময়ে বিমানে দিদি ও অভিষেকের মধ্যে এ ব্যাপারে হয়তো কথা হয়েছে। শুক্রবার রাতে সাউথ অ্যাভেনিউতে অভিষেকের বাড়িতেই ছিলেন মমতা। সেখানেও কথা হয়ে থাকতে পারে। দলের একটি সূত্রের মতে, ১০ অগস্ট থেকে ১৫ অগস্টের মধ্যে কিছু একটা রদবদল ঘোষণা হয়ে যেতে পারে।