• facebook
  • twitter
Monday, 16 September, 2024

প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, শোক প্রকাশ মমতার

তিনি প্রায় ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শাসন ক্ষমতায় ছিলেন

প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দীর্ঘ রোগভোগের পর বৃহস্পতিবার পাম এভিনিউ-এর বাসভবনে প্রয়াত হলেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মৃত্যুতে বাংলার রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আকস্মিক প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে আমি মর্মাহত। বিগত কয়েক দশক ধরেই আমি তাঁকে চিনতাম এবং গত কয়েক বছরে তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন আমি কয়েকবার তাঁকে বাড়িতে দেখতে গিয়েছি। এই মুহূর্তে আমি অত্যন্ত দু:খিত বোধ করছি। এই শোকের সময়ে মীরাদি এবং সুচেতনের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই। সিপিআই(এম) দলের সকল সদস্য-সদস্যা, সমর্থক এবং তাঁর সমস্ত অনুগামীদেরও আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’

উল্লেখ্য, জ্যোতি বসুর ২৩ বছরের শাসনের পর বাম জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি প্রায় ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শাসন ক্ষমতায় ছিলেন। ২০০০ থেকে ২০১১ সাল অবধি তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন প্রথমে তাঁকে উপ মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। পরে ২০০০ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর ২০০১ ও ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুলভাবে জয় লাভ করে তাঁর ক্ষমতা ধরে রাখেন। কিন্তু ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের গণহত্যার প্রতিবাদ ও সিঙ্গুর আন্দোলনের জেরে রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়া ওঠে। মমতার নেতৃত্বে সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানান রাজ্যের সিংহভাগ কৃষক সমাজ ও সাধারণ মানুষ। ফলে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর সরকারের পতন ঘটে। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে যথাক্রমে রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি মন্ত্রী ও পুলিশ মন্ত্রী ছিলেন।

বুদ্ধবাবু প্রথম জীবনে বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের উত্তাল খাদ্য আন্দোলনের সাথে সাথে ভিয়েতনামের যুদ্ধের সময় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যোগদান করেন। পরে তিনি গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক হন। যা পরবর্তীকালে ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন রূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭৭ সালে তিনি কাশীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। কিন্তু ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের প্রফুল্ল কান্তি ঘোষ-এর কাছে ৭৮২ ভোট পরাজিত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র পরিবর্তন করে যাদবপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই কেন্দ্র থেকে তিনি টানা ৫ বার জয়ী হন। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি এই কেন্দ্র থেকেই সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মণীশ গুপ্তের কাছে পরাজিত হন। তিনি সি. পি. আই (এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, সি. পি. আই (এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সি. পি. আই (এম) পলিটব্যুরোর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।