নিজস্ব প্রতিনিধি— তৃণমূলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও নাম বাদ কুণাল ঘোষের৷ আগামী ২০ মে, লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার জন্য তারকা প্রচারকের একটি তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে শাসকদল৷ সেই ৪০ জনের তালিকায় নাম নেই কুণালের৷ তারকা প্রচারকের তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার পর কুণাল বলেন, ‘এটা দলীয় নেতৃত্বের ব্যাপার৷ তখন রেখেছিলেন, এখন রাখেননি৷ আমাকে গরমে দৌড়াদৌডি় করতে হবে না৷ আমি নিজে তৃণমূল কর্মী আছি এবং থাকব৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে প্রচার করছেন, তাতে ৩৫টির বেশি আসন পাবে তৃণমূল৷ যাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে, তাঁদের অনেকেই ভালো বক্তৃতা করেন৷ কিন্ত্ত যে দলের অর্ধেক নেতাকে শুভেন্দুকে চোর বলতে গেলে আগে তিনবার বাথরুম যেতে হয়, তাঁদের আবার কিসের লিস্ট৷ ঈশ্বর মঙ্গল করুন৷ আমার কোনও আফসোস নেই৷ আমি ধরেই নিয়েছিলাম, আমার নাম বাদ পড়বে!’
দলীয় সূত্রের দাবি, বুধবার শাস্তি ঘোষণার পরেও কুণাল যে ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দাগা জারি রেখেছেন, নাম না করেও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে যে ভাবে দলের নেতা-মন্ত্রীদের বিঁধছেন, তা একেবারেই ভালো চোখে দেখছেন না শীর্ষ নেতৃত্ব৷ লোকসভা ভোটের আবহে কুণালের এই সব কাজকর্ম দলের কাছে যথেষ্ট বিড়ম্বনারও৷ এ সব মাথায় রেখেই কুণালকে তারকা প্রচারকের তালিকা থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতৃত্ব৷
বুধবার দলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে কুণাল ঘোষকে সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল, এরপরও সুদীপের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অনড় কুণাল৷ বৃহস্পতিবার কুণাল ফের বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর থেকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেখা উচিত বিরোধী রাজনীতি কাকে বলে! কুণাল ঘোষের কথায়, শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুৎসা করছেন, তা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি৷ কিন্ত্ত এটা মানতেই হবে, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসাবে এবং বিজেপির নেতা হিসাবে শুভেন্দু পরিশ্রম করছেন৷ গোটা রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন৷ তাঁর দলের জন্য যে কাজটা করার দরকার সেটা করছেন৷ কিন্ত্ত সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় তৃণমূলের নেতা হলেও তাঁকে একবারও নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করতে শোনা যাচ্ছে না কেন? এই যে অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা বাংলায় এসে এত কথা বলে যাচ্ছেন, কেন তার পাল্টা বলছেন না সুদীপ!মাস খানেক আগেও একবার এই প্রসঙ্গ তুলেছিলেন কুণাল৷ সেই সঙ্গে ইঙ্গিত করতে চেয়েছিলেন চিট ফান্ড কাণ্ড থেকে বাঁচতেই সুদীপ মুখ বন্ধ করে রেখেছেন৷ সুদীপকে চিট ফান্ড কোম্পানির দালাল বলেও সমালোচনা করেছিলেন কুণাল৷ তার পর তাঁকে মুখপাত্র পদ থেকে সরানো হয়েছিল৷ তাঁকে পদ থেকে সরানোর ব্যাপারে কুণাল বলেন, আমি পদের পরোয়া করিনা৷ ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি কুণাল ঘোষ নামটা বললেই যেন মানুষ চিনতে পারে৷ পদের দরকার যেন না হয়৷ কিন্ত্ত এর পরেও কুণাল বলেন, ডেরেক ও ব্রায়েন পিওনের মতো কাল আমাকে চিঠি পাঠিয়েছেন৷ আমি প্রশ্ন করতে চাই, আমাকে যদি শোকজ করা হয়, তাহলে দেবকে কেন করা হবে না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে গদ্দার বলেছেন৷ কিন্ত্ত দেব বলছেন, উনি গদ্দার বলবেন না৷ তার মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চ্যালেঞ্জ করা৷ এর পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না কেন! তাঁর কথায়, দলে শৃঙ্খলার অবশ্যই দরকার আছে৷ কিন্ত্ত দেখতে হবে তা যেন শৃঙ্খল হয়ে না যায়৷