মহুয়া মৈত্র প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে নিশানা কুনাল ও শান্তনুর

নিজস্ব প্রতিনিধি— মহুয়া মৈত্র ইসু্যকে কেন্দ্র করে সরগরম বঙ্গীয় রাজনীতি৷ শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে সেই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কটাক্ষের সুর চড়ান রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এবং রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন৷ এ প্রসঙ্গে কুনাল বলেন, সাংসদীয় সভা থেকেই মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়েছিল কারণ তিনি নরেন্দ্র মোদী তথা কেন্দ্রের দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন৷ তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি বরং এখন সিবিআই লেলিয়ে দিয়ে সেই ষড়যন্ত্রের চিত্রনাট্য চলছে৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তৃণমূলপ্রার্থী মহুয়া মৈত্রের আলিপুরের বাডি়তে শনিবার সকালেই হানা দিয়েছিলো সিবিআই৷ বাড়ি ঘেরাও করে চলছিল তল্লাশি অভিযান৷ পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বাডি় থেকে ইডি কর্তৃক নগদ ৪১ লক্ষ টাকা উদ্ধার প্রসঙ্গেও শান্তনু বলেন, ইচ্ছেকৃতভাবে নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপি ইডি, সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদলগুলিকে দমিয়ে রাখতে চাইছে৷

একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব এবং বঙ্গীয় কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দেন কুনাল ঘোষ৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, অজিত পাওয়ার প্রমুখ বিজেপিকেই ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন কিন্ত্ত যেই মুহূর্তে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিলেন, সেই দলের ‘বড়ো নেতা’ হয়ে গেলেন৷ এছাড়াও ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূলের অবস্থানকে স্পষ্ট করে তিনি বলেন, ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূল আছে কিন্ত্ত বাংলায় সিপিএম ও কংগ্রেস হলো ‘বিজেপির দালাল’ তাই বাংলায় এক ইঞ্চিও জায়গা ছাড়তে রাজি নয়৷

পাশাপাশি নির্বাচনী বন্ড প্রসঙ্গেও সরব হন কুনাল৷ তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, তৃণমূলকে কে কত টাকা দিয়েছে তা তৃণমূল নিজেই জানতো না৷ কারণ কেন্দ্রের নিয়মানুযায়ী, ড্রপবক্স থেকে পাওয়া বন্ড নিয়মমাফিক ব্যবহার করা হয়েছে৷ কোন কোম্পানি কত টাকা দিচ্ছে তা কেবল জানে বিজেপি কারণ তার কাছে ইডি, সিবিআই রয়েছে৷


“আত্মসম্মান থাকলে কোনো পুরোনো বিজেপি সমর্থক বিজেপিকে ভোট দেবে না” শুভেন্দু প্রসঙ্গে এমনটাই মন্তব্য করেন কুনাল৷ তাঁর মতে, সিবিআই এর হাত থেকে বাঁচতেই শুভেন্দু বিজেপিতে গেছেন৷ তাই পুরোনো বিজেপি সমর্থকরাই শুভেন্দু বিরোধী হয়ে উঠছেন৷ সিপিএমের ভবিষ্যৎ নিয়েও কটাক্ষের তীর ছুঁড়েছেন কুনাল৷ “সেলিমকে ভোটে লড়তে হবে, অধীর চৌধুরীর সাহায্য চাই৷ সেই জন্য সুজন চক্রবর্তীকে বলি দাও৷ সান্ত্বনা পুরস্কার দিয়ে দমদমে পাঠিয়ে দাও যেখানে সৌগত রায় বিপুল ভোটে জিততে চলেছে” এমনটাই বলেন কুনাল৷ নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যপালের তৎপরতা নিয়েও সরব হয়েছেন কুনাল৷ তাঁর মতে, নির্বাচনী নির্ঘন্ট প্রকাশিত হওয়ার পর রাজ্যপালের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তৎপরতা দেখানোর প্রয়োজনীয়তা নেই, সেটি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব৷ কেন্দ্রীয় সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়েও সরব হন কুনাল এবং শান্তনু৷

পাশাপাশি মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট চলাকালীন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতারের প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ধিক্কার জানিয়েছেন শান্তনু৷ সাংবাদিক বৈঠক থেকে অভিষেকের ‘ওপেন চ্যালেঞ্জ’ কে মনে করিয়ে দিতেও ভোলেন নি কুনাল ঘোষ ও শান্ত্তনু সেন৷