দিল্লি, ৯ মে: সুপ্রিম কোর্ট দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে বর্তমান লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের অনুমতি দেওয়ার জন্য শুক্রবার অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তৎপর ইডি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তার আবেদনের বিরোধিতা করে একটি হলফনামা দাখিল করেছে। সেই হলফনামায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বলেছে যে, আইন সবার জন্য সমান। প্রচারের অধিকার কোনও মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। এমনকি এবিষয়ে কোনও সাংবিধানিক, এমনকি কোনও বৈধ আইনি অধিকার নেই।
গত ২১ মার্চ আবগারি দুর্নীতি মামলায় আপ প্রধানকে গ্রেপ্তার করা তদন্ত সংস্থাটি উল্লেখ করেছে যে, প্রচারের জন্য কখনও কোনও রাজনৈতিক নেতাকে এর আগে জামিন দেওয়া হয়নি যে, কেজরিওয়ালকে জেল থেকে বের করে তাঁর দলের প্রার্থীদের জন্য ভোট প্রচার করতে দেওয়া হবে। সেটা করা হলে তাঁর দলের প্রার্থীর ক্ষেত্রেও একটি ভুল দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াবে।
প্রসঙ্গত দিল্লির সাতটি আসনেই আগামী ২৫ মে লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফার ভোট হবে। গত মঙ্গলবার এই মামলার আবেদনের শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল কেজরিওয়াল দিল্লির নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। এবং তিনি স্বভাবগত অপরাধী নন। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ বলেছিল, “নির্বাচন আছে… এগুলি অসাধারণ পরিস্থিতি এবং তিনি অভ্যাসগত অপরাধী নন।”
আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হলফনামায়, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে যে, এই মামলার সহ-অভিযুক্ত দিল্লির প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়ার জামিনের আবেদনের শুনানির সময় আদালত বলেছিল যে, সকল নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের জন্য দেশের আইন সমানভাবে প্রযোজ্য।
কেজরিওয়াল প্রাথমিকভাবে লোকসভা নির্বাচনে প্রচারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়েছিলেন বলে উল্লেখ করে। সংস্থাটি জমা করা হলফনামায় বলেছে যে, “এটি উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, প্রচারের অধিকার মৌলিক অধিকার বা সাংবিধানিক অধিকার নয়। এমনকি আইনি অধিকারও নয়।”
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি যুক্তি দিয়েছে যে, গত পাঁচ বছরে ১২৩টি নির্বাচন হয়েছে। এবং প্রচারের জন্য যদি অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়, তবে বছরের কাছাকাছি নির্বাচন হওয়ার কারণে কোনও রাজনীতিবিদকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখা যাবে না।
এদিন শুনানির সময় ইডি পুনরায় এই যুক্তি দিয়ে বলে যে প্রচার করা একজন রাজনীতিকের কাজের অংশ। এবং সমতার নিয়ম অনুসারে একজন ছোট কৃষক বা ছোট ব্যবসায়ীরাও তাদের কাজের দাবি পূরণের জন্য একইভাবে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চাইতে পারেন। ইডি তাদের যুক্তির সপক্ষে আরও জোর দিয়ে বলে যে, এমনকি কেজরিওয়াল বর্তমানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করছেন না।
হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, “যদি আবেদনকারীকে (অরবিন্দ কেজরিওয়াল) একজন রাজনীতিবিদ হওয়ার কারণে তাঁর দলের হয়ে সাধারণ নির্বাচনে প্রচারের উদ্দেশ্যে কোনো অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বাড়ানো হয়, তাহলে এমন নয় যে অন্য রাজনীতিবিদরা এক বা অন্য মামলায় বন্দী হবেন না। তাঁরাও একই ধরনের সুবিধা চাইবেন।”
বলা হয়েছে, কেজরিওয়ালকে জামিন দেওয়া একটি নজির স্থাপন করবে। যা “সমস্ত নীতিহীন রাজনীতিবিদদের” অপরাধ করার ছাড়পত্র দেবে। তারপরে একটি নির্বাচন বা অন্য নির্বাচনের প্রচারের উদ্ধৃতি দিয়ে তদন্ত এড়িয়ে যাবে।