রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে কর্নাটক সরকারের অন্দরে। ইস্তফাপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কর্নাটক বিধানসভার অধ্যক্ষ রমেশ কুমারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে নালিশ জানিয়েছেন কংগ্রেস ও জেডি (এস)-এর বিক্ষুব্ধ বিধায়করা।
মুম্বইয়ের যে হােটেলে আশ্রয় নিয়েছেন দুই দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়করা সেখানে কংগ্রেসের মন্ত্রী ডি কে শিবকুমারকে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে বাধার মুখে পড়তে হয়। কোনও নেতার সঙ্গে দেখা করবেন না বলে আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন বিক্ষুব্ধরা। শিবকুমারের পথ আটকায় পুলিশ। তবে তিনি রণে ভঙ্গ দেননি, বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে দেখা না করে তিনি সেখান থেকে যাবেন না বলে জানান শিবকুমার।
কংগ্রেস নেত্রী সােনিয়া গান্ধির নির্দেশে দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবার কর্নাটকে পৌঁছেছেন কংগ্রেসের প্রবীন নেতা গুলাম নবি আজাদ এবং কপিল সিব্বল। পদত্যাগে ইচ্ছুক বিধায়কের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মত পাল্টানাের চেষ্টা করার কথা বলা হয়েছে।
মুম্বইয়ের রেনেসাঁ পাওয়াই হােটেলে রয়েছেন কংগ্রেস ও জেডি (এস) দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়করা। দলের শীর্ষ নেতারা যাতে তাঁদের ওপর চাপ তৈরি করতে না পারে সেজন্য মুম্বইয়ের নগরপালকে এই মর্মে চিঠি লিখে পাঠিয়েছিলেন দুই দলের বিধায়করা। এরই মধ্যে বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলতে বুধবার সকালে বিমানে মুম্বই পৌঁছেছেন ডি কে শিবকুমার এবং জেডি (এস) বিধায়ক শিবলিঙ্গ গৌড়া।
হােটেলে ঢােকার মুখে শিবকুমার এবং গৌড়াকে আটকায় পুলিশ। তাঁদের বিদ্রোহী বিধায়কদের ঘরে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানান নগরপাল। তাঁদের হােটেলে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা নিয়ে শিবকুমার বলেন, ‘ওদের কাজ করতে দিন। আমরা বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। রাজনীতিতে একসঙ্গে আমাদের জন্ম। রাজনীতিতে একসঙ্গে মৃত্য হবে আমাদের। ওরা আমাদের দলের কর্মী। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে হবে। আমি ওদের অপহরণ করতে আসেনি। আমার হাতে কোনও অস্ত্র নেই। চাইলে পুলিশও আমাদের সঙ্গে যেতে পারে’।
কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমারের কথায় কাজ হয়নি। ‘শিবকুমার গাে ব্যাক। স্লোগান ওঠে হােটেল চত্বরে। কংগ্রেস নেতাকে কার্যত ঘেরাও করে রাখা হয়। শিবকুমারও নিজের প্রতিজ্ঞায় অটল। বিধায়কদের সঙ্গে দেখা না করে যাবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন।
কর্নাটক কাণ্ডের আঁচ পড়েছে দেশের শীর্ষ আদালতেও। বিধানসভার অধ্যক্ষ রমেশ কুমার তাঁর সাংবিধানিক কর্তব্য পালন না করে ইচ্ছাকৃতভাবে বিধায়কদের পদত্যাগ গ্রহণে বিলম্ব করছেন, এই অভিযােগ এনে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিদ্রোহী বিধায়করা।
শুক্রবার এই মামলায় যাতে শুনানি হয় তার জন্য চেষ্টা চালানাে হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। তবে আদালতের একটি সুত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবারই আবেদনটি শুনতে রাজি হয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। বিদ্রোহী বিধায়কদের আবেদনটি সুপ্রিম কোর্টে পেশ করেছেন প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রােহতগি।
পদত্যাগে ইচ্ছুক বিধায়কদের সংখ্যা বাদ দিলে কর্নাটক বিধানসভায় সরকার ও বিরােধী দল বিজেপির সদস্য সংখ্যা প্রায় সমান। তাই অধ্যক্ষর সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অধ্যক্ষ রমেশ কুমার গতকাল জানিয়ে দেন আইনি দিক বিবেচনা করেই মিমাংসা করা হবে। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন ইতিহাসের পাতায় তা জায়গা পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবকাশ নেই।