১ লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী কাকলি

নিজস্ব প্রতিনিধি – হ্যাটট্রিকেই থেমে রইলেন না, চতুর্থবারও বারাসাত জয়ের মুকুট পরলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার৷ পর পর টানা তিনবার বারাসাতের সাংসদ হয়েও কোনো বিরতি নেই৷ এইবারও একই ফর্মে রইলেন কাকলি, বরং বাড়ালেন ভোট ব্যবধান৷ মঙ্গলবার গণনার প্রথম রাউন্ড থেকেই বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদার এবং বাম প্রার্থী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় কে পেছনে ফেলে এগিয়ে ছিলেন কাকলি৷ গণনা শেষে সেই ব্যবধান দাঁড়ালো ১, ১৩, ৪৮৯৷ ব্যাপক মার্জিনে জয় প্রত্যাশিত ছিল কাকলির, এমনই দাবি তাঁর৷ জয়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি৷ খোশমেজাজে কাকলি বলেন, “উন্নয়নের কাজ অনেকটাই করেছি৷ বকেয়া কাজ বলতে বাকি নেই কিছুই৷ এবার কাজ হবে মানুষের চাহিদা মতো, বিভিন্ন ওয়ার্ডে থাকা নাগরিক সমিতির চাহিদা মতো৷ ” দেশ জুড়ে বিজেপির ভরাডুবি প্রসঙ্গে কাকলি বলেন, “গণতন্ত্রের এটাই ক্ষমতা৷ মানুষ মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন৷ ধর্মে-ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করে যেভাবে মিথ্যাচার করেছে বিজেপি, তার ফল তাঁরা পেয়েছেন৷ ” এদিন জয়ের পরই সবুজ আবির ওড়ে বারাসাত জুড়ে৷ তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো৷ ভোটযুদ্ধের লড়াইয়ে কাকলির সাথে সহযোদ্ধা হিসেবে সর্বদা তৎপর থাকেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ এবং অশোকনগরের বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী৷ বারাসাত কেন্দ্রের সাত বিধানসভা থেকেই দারুন লিড নিয়ে জয়ী হন কাকলি৷ অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদার বারাসাতের এক ছটাক জমি দখল করতেও রীতিমতো হিমশিম খান৷

উত্তর ২৪ পরগনার সর্বাধিক হাইভোল্টেজ নির্বাচনী কেন্দ্র ছিল বসিরহাট, যার অন্তর্গত সন্দেশখালি৷ সপ্তম দফার নির্বাচনের দিন বারংবার এই কেন্দ্র উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও অবাক করে দিয়ে সর্বাধিক ভোট পড়ে এই বসিরহাট কেন্দ্র থেকেই৷ ভোট গণনা প্রথম কিছু রাউন্ডে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র এগিয়ে থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে এই চিত্রটা বদলে যায়৷ শেষমেষ দেখা যায়, ব্যাপক লিড নিয়ে বসিরহাট থেকে জয়ের মুকুট পরেন হাজি নুরুল ইসলাম৷ বসিরহাট কেন্দ্র বাদুরিয়া, হারোয়া, মিনাখাঁ, বসিরহাট উত্তর, বসিরহাট দক্ষিণ, সন্দেশখালি এবং হিঙ্গলগঞ্জ এই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই তৃণমূল জয় হয়৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে টানা এই কেন্দ্রে জিতে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী৷ ২০১৯ সালে এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল নুসরত জাহানকে৷ বিপুল ব্যবধান রেখে এই কেন্দ্র থেকে জিতে আসেন নুসরত জাহান৷ সন্দেশখালি কাণ্ডের পর থেকে এই কেন্দ্রের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল কিছুটা বদলে যায়৷ এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করে হাজি নুরুল ইসলামকে৷ অন্যদিকে, সন্দেশখালি আন্দোলনের মুখ রেখা পাত্রকে প্রার্থী করে বিজেপি৷ সিপিএম এখানে প্রার্থী করে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে৷ কিন্ত্ত সবশেষে সন্দেশখালি কান্ড কে তোয়াক্কা না করে মানুষ ভোটদান করেন তৃণমূলের পক্ষেই, শেষ হাসি হাসেন হাজি নুরুল৷