নিজস্ব প্রতিনিধি— পুত্রবধূদের পাশে নিয়েই নির্বাচনী প্রচারের থিম সং এর উদ্বোধন! যেন নারীশক্তির আরাধনা করেই ভোটযুদ্ধের ময়দানে পা রাখছেন৷ শনিবার বিকেলে প্রাক পয়লা বৈশাখ উদযাপনের মাধ্যমে ভোট প্রচারের প্রথম পদযাত্রায় সামিল হলেন বারাসাত লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তথা তিনবারের সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার৷ সঙ্গে ছিলেন তাঁর ঘরে – বাইরের কর্মযোদ্ধা অর্থাৎ দুই পুত্রবধূ৷ থিম সং এর উদ্বোধনের পর র্যালিতে পা মেলান কাকলি৷
র্যালিটিও কোনো সাধারণ রাজনৈতিক র্যালি ছিল না৷ র্যালির মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া তো আছেই, পাশাপাশি চৈত্রকে বিদায় জানিয়ে নতুন বৈশাখকে বরণ করে নেন কাকলি৷ টাকি রোড ধরেই শুরু হয় তৃণমূল প্রার্থী কাকলির পদযাত্রা৷ এই র্যালির শুরুতেই ছিল শক্তিমান গাডি়৷ ওই গাড়িতেই ছিলেন এক সঙ্গীত শিল্পী, যাঁর কণ্ঠে শুরুতেই শোনা গেলো “এসো হে বৈশাখ — এসো হে” তারপর আরো একাধিক রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে মানুষের মন মাতালেন শিল্পী৷ পাশাপাশি কাকলির বড়ো পুত্রবধূ দিশারীকেও রবীন্দ্র সঙ্গীতের সঙ্গে গলা মেলাতে দেখা গেল৷ টাকি রোড ধরে ঘোলা কাজিপাড়ার মোড় ঘুরতেই শিল্পী গেয়ে ওঠেন “মোর বিনা ওঠে কোন সুরে বাজে”, শিল্পীর কণ্ঠে বাদ পড়েনি “আলোকেরই ঝর্না ধারায় ধুইয়ে দাও” গানটি৷ পদযাত্রার মূল আকর্ষণ ছিল ব্যাপক সংখ্যায় মহিলাদের অংশগ্রহণ৷ প্রত্যেকেই লাল পাড় – সাদা শাডি় পরিহিতা, হাতে ছিল পাখা, কুলো, এসো হে বৈশাখ এর ব্যানার৷ শাখ বাজিয়ে, ফুল ছিটিয়ে বৈশাখকে বরণ করে নেন মহিলারা৷ র্যালির মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষকে দেওয়া হয় নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা বার্তা, তেমনি বাঙালিয়ানাকেও ফুটিয়ে তোলা হয়৷ নতুন দিনের সূচনার ইঙ্গিত দেওয়া হয় সম্পূর্ণ পরিবেশনার মধ্য দিতে৷ র্যালি নিয়ে বেড়িয়ে নিজ স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই কাকলি সাধারণ মানুষদের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে, নতমস্তকে প্রণাম জানিয়ে প্রতিবার্তা দেন৷ পাশাপাশি পদযাত্রা চলাকালীন এক মায়ের কাছ থেকে তার কোলের শিশুকে নিয়ে আদরও করেন৷ সম্পূর্ণ পদযাত্রাতে কাকলির সাথেই ছিলেন তাঁর দুই পুত্রবধূও৷ কাকলির সমর্থনে তাঁর পুত্রবধূদেরও মানুষের উদ্দেশ্যে হাত নাড়তে দেখা যায় এদিন৷ টাকি রোড থেকে লঙ্কাবাগান, কামাখ্যা মন্দির, আমতলা হয়ে এই পদযাত্রাটি শেষ হয় নতুনপুকুরে এসে৷
এদিন বারাসত শহর তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরুণ ভৌমিকের হাত ধরে অনুষ্ঠিত হয় এই র্যালি৷ বারাসত পুরসভার ৩৫ টি ওয়ার্ড থেকেই তৃণমূলের সকল স্তরের কর্মী সমর্থকেরাই এদিন বিকেলে উপস্থিত হয়েছিলেন পূর্ব বারাসত আদর্শ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের মাঠে৷ সেখানেই দুই পুত্রবধূকে সাথে নিয়ে প্রথমে অডিও ভিজু্যয়াল নির্বাচনী থিম সং -এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কাকলি৷ যার নাম, “বার বার চার বার, বারাসাতের অহংকার৷ ” এই থিম সং এর নির্মাতা টলিউডের প্রখ্যাত মিউসিক ডিরেক্টর সুশান্ত মজুমদার ওরফে পুচে, বারাসাত সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি সোহম পাল এবং তাঁদের সহযোগিতায় ছিলেন কৌশিক কর্মকার৷ এরপরই শুরু হয় কাকলির পদযাত্রা৷ এদিন কাকলি বলেন, “শনিবার চৈত্র সংক্রান্তি৷ রবিবার পয়লা বৈশাখ৷ বাংলার নতুন বছরে বারাসাতবাসী সকলকেই শুভেচ্ছা জানাই৷ গত ১৫ বছর ধরে বারাসাতের মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করেছেন৷ আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ৷ মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে৷ আমি আশাবাদী এবারেও বারাসাত কেন্দ্রের মানুষ আমার পাশেই থাকবেন৷ “কর্মযোদ্ধা তথা দুই পুত্রবধূদের উদ্দেশ্যে কাকলি বলেন, “পরিবারের লোকজনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া কোন কাজ সফল হয় না৷ ওরা আমার ভোট প্রচারে অংশীদার হতেই এদিনের র্যালিতে অংশ নিয়েছে৷ ” তাঁর দুই পুত্রবধূ দিশারী এবং জয়শ্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, “মায়ের নির্বাচন দেখছি৷ উনি আমাদের কাছে মায়ের মতো৷ তাই মায়ের সঙ্গে আমরাও এসেছি নির্বাচনী পদযাত্রায় সামিল হতে৷ এদিনের মিছিল দেখে আমরা অভিভূত৷”
এদিনের র্যালিতে কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং তাঁর পুত্রবধূদের সাথে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরুন ভৌমিক, বারাসাত পৌরসভার পৌরপ্রধান অশনি মুখার্জি, পৌরপারিষদ সদস্য অভিজিৎ নাগ চৌধুরী, সৌমেন আচার্য্য, চম্পক দাস, পৌরপিতা ডাঃ বিবর্তন সাহা, সুমিত সাহা, দেবব্রত পাল৷ এছাড়াও মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বারাসাতের ৩৫টি ওয়ার্ডের অসংখ্য মহিলা নেতৃত্ব যার নেতৃত্বে ছিলেন বারাসাত শহর মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী পম্পি মুখার্জি, সহ সভানেত্রী নন্দিতা ভৌমিক৷ এছাড়াও ছিলেন বারাসাত সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি অভিজিৎ নন্দী, দেবাশীষ মিত্র,ছাত্রপরিষদের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা এবং বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ৷