গত ৯ সেপ্টেম্বর আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের সতর্ক করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেদিন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটার মধ্যে কাজে যোগ না দিলে রাজ্য সরকার চাইলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু আদালতের সেই রায়ের পর ৭২ ঘন্টা কেটে গেলেও জুনিয়র ডাক্তাররা ভয় না পেয়ে তাঁদের কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, তাহলে কি পড়ুয়া ডাক্তারদের এই সিদ্ধান্তে আদালত অবমাননা করা হচ্ছে? এর উত্তরে রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবীরা জানিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের এই সিদ্ধান্তে আদালত অবমাননার কোনও প্রশ্নই আসছে না। কারণ, দেশের শীর্ষ আদালতের ওই রায়ে কোথাও বলা হয়নি, ওই সময়ের মধ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে যোগ দিতেই হবে।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। সেদিন রাজ্যের শাসকদল জুনিয়র ডাক্তারদের এই সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ পেল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের তরফে বলা হতে পারে, আদালত নির্দেশ দিলেও কাজে যোগ দেননি জুনিয়র ডাক্তাররা। যদিও অনেক আইনজীবী বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, আদালত অবমাননা হয়েছে কি হয়নি, তা নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। বিষয়টি অন্য কেউ নির্ধারণ করতে পারেন না।
এদিকে আগের শুনানিতে রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়েছিল, জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ না দেওয়ার ফলে ২৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এখন সেই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ না দেওয়ার ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৬ জন। শুক্রবার সেই সংখ্যা বেড়ে ২৯জন হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।
ইতিমধ্যে গত তিনদিনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার নবান্নে গিয়েও বৈঠকে যোগ দেননি জুনিয়র ডাক্তাররা। নবান্ন সভাঘরে বসে থেকেও ফিরতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। জুনিয়র ডাক্তারদের দেওয়া ‘শর্ত’ না মানার জন্য তাঁদের প্রতিনিধিদল নবান্নের সামনে গিয়েও ফিরে এসে স্বাস্থ্যভবনের সামনে আন্দোলনে যোগ দেন তাঁরা।