• facebook
  • twitter
Sunday, 10 November, 2024

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হাসি জুনের

অভিষেক রায়, খড়গপুর, ৪ জুন— মেদিনীপুরে ২৮ হাজার ৯৪ ভোটে জয়ী হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জুন মালিয়া৷ তিনি হারালেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালকে৷ দুজনের লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি৷ কিন্ত্ত শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসলেন জুন মালিয়া৷ অগ্নিমিত্রা পাল কেন হারলেন তার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা৷ মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষকে বর্ধমান দুর্গাপুর আসনে সরিয়ে তার জায়গায় প্রার্থী করা হয়

অভিষেক রায়, খড়গপুর, ৪ জুন— মেদিনীপুরে ২৮ হাজার ৯৪ ভোটে জয়ী হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জুন মালিয়া৷ তিনি হারালেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালকে৷ দুজনের লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি৷ কিন্ত্ত শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসলেন জুন মালিয়া৷ অগ্নিমিত্রা পাল কেন হারলেন তার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা৷ মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষকে বর্ধমান দুর্গাপুর আসনে সরিয়ে তার জায়গায় প্রার্থী করা হয় অগ্নিমিত্রা পালকে৷ অগ্নিমিত্রা মেদিনীপুরে আসার কয়েক দিন পরেই খড়গপুর শিল্পাঞ্চলের একটি শিল্প সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল৷ তিনি জানালেন, বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলাম৷ কিন্ত্ত উনার কথাবার্তা শুনে মনে হল উনি জিতবেন না৷ খড়গপুরে পা দেওয়ার পরেই তিনি দিলীপ ঘোষের জুতোয় পা গলানোর চেষ্টা করলেন৷ নন ইসু্য নিয়ে একের পর এক থানার সামনে অবস্থান, পুলিশের সঙ্গে উগ্র মেজাজে কথা বলা কিছু মানুষের কাছে তাকে জনপ্রিয় করলেও বড় অংশের মানুষ একজন মহিলার কাছ থেকে এই উগ্র ব্যবহার মেনে নিতে পারেননি৷ অন্যদিকে জুন শান্ত নম্র মিষ্টি স্বভাবের জন্য সহজেই মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন৷ তৃণমূলের প্রবীণ নেতা রবি শংকর পান্ডে বলেন, একজন মহিলার কাছ থেকে উগ্র ব্যবহার অনেকেই ভালোভাবে নেননি৷ ভোটের বাক্সে তার প্রভাব পডে়ছে৷ দ্বিতীয়তঃ অগ্নিমিত্রা পাল পরিচালিত হয়েছেন দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের হাতেই৷ তারা যেভাবে মানুষ চিনতে পারেননি নিয়েছেন অগ্নিমিত্রা সেই ভাবেই মানুষ চিনেছেন৷ কেউ সৎ পরামর্শ দিতে গেলেও শোনেননি৷ নিজের টিম তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ নির্ভর করেছেন দিলীপ অনুগামীদের উপরেই৷ ফলে শুধু দলেরই একটি বড় অংশ কাজ না করে বসে গিয়েছেন৷ তারা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন কিন্ত্ত বিজেপির প্রচারে সেভাবে গা লাগাননি৷ এই বিক্ষুব্ধ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় অগ্নিমিত্রা বের করে উঠতে পারেননি৷

তৃতীয়তঃ অপাত্রে দান৷ দলীয় কর্মীদের মধ্যে যারা ভোট করাবেন তাদের বঞ্চিত রেখে কিছু স্তাবক এবং চাটুকারদের পিছনে জলের মতো খরচ করা৷ এই খরচ হোমেও লাগেনি, যজ্ঞেও লাগেনি৷ চতুর্থত দলীয় অন্তর্ঘাত৷ যাদের উপর ভরসা রেখেছেন তারাই পথে বসিয়েছেন অগ্নিমিত্রাকে৷ নিজের দলের বাইরের অনেক ব্যক্তি সহায়তা না করলে অগ্নিমিত্রার পক্ষে এই মুখ রক্ষার ফল সম্ভব হতো না৷ ২০১৯ সালে হেরে গিয়ে মানস ভূঁইয়া চাঁদমারি করেছিলেন দলেরই কিছু নেতাকে৷ ৫ বছর বাদে অগ্নিমিত্রা একই রকম ভাবে দলের কিছু নেতাকে কাঠগড়ায় তুলতে পারেন৷ পঞ্চমত অগ্নিমিত্রা নির্বাচন পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত নির্ভর করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর উপর৷, শুভেন্দুর লোকজন অগ্নিমিত্রাকে চালনা করেন৷ এমন একজনকে ইলেকশন এজেন্ট করা হলো বিজেপি কর্মীদের মধ্যে যার কোন রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই৷ তার একমাত্র যোগ্যতা তিনি শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী৷ কার্যক্ষেত্রে এই এজেন্টটি মনগড়া কিছু হিসেব পেশ করে অগ্নিমিত্রাকে পথে বসিয়েছেন৷ অগ্নিমিত্রার পরাজয় প্রমাণ করেছে অন্তত মেদিনীপুরে শুভেন্দু ম্যাজিক কাজ করেনি৷ ঘাটাল এবং তমলুকে কাঁথি এবং তমলুকে অল্প ব্যবধানে জয় এবং ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, ঘাটালে বিজেপির ভরাডুবি, প্রমাণ করেছে শুভেন্দু তার সাংগঠনিক দক্ষতা হারিয়ে ফেলেছেন৷ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অপূর্ব ঘোষ বলেন, দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় লাগাতার আক্রমণ, পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের জনহিতকর প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া বিজেপিকে ব্যাকফুটে ঠেলেছে৷ সেই সঙ্গে রয়েছে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার বা স্বাস্থ্য সাথীর মতো জনমোহিনী প্রকল্প৷ যার মোকাবিলা করা অগ্নিমিত্রার পক্ষে সম্ভব হয়নি৷