”১০০ বছর থাকলেও কোন বিষয় নয়”, জমি দখল মামলায় প্রধান বিচারপতি

মোল্লা জসিমউদ্দিন: বেআইনী নির্মাণ ও জমি-জায়গা জবরদখল নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। গত সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহানগর সহ সংলগ্ন এলাকায় ফুটপাত মুক্ত করতে সক্রিয় অবস্থান নিয়েছেন। কলকাতা ও জেলায়, সর্বত্র বেআইনি জমি দখল নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি জমি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলেও নবান্নের বৈঠকে সরব হয়েছিলেন মমতা। এরই মাঝে পোর্ট ট্রাস্টের জমি মুক্ত করার কাজে স্থগিতাদেশ দিল না কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

মাঝেরহাট পোর্ট ট্রাস্টের জায়গা বেআইনিভাবে দখল করার অভিযোগ উঠেছে।সেই জায়গা মুক্ত করা দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে জমি খালি করার কাজ চলছে।সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে ওই অঞ্চলের বস্তির বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি চলে ।

তবে সেই কাজে কোনও স্থগিতাদেশ দিল না ডিভিশন বেঞ্চ। শুক্রবার মামলা শুনবে ডিভিশন বেঞ্চ। অভিযোগ, বন্দরের জমিতে তৈরি হয়েছে পার্টি অফিস। আছে একাধিক দোকানও। সেখানে হাসপাতাল বানানো হবে বলে দাবি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই জমি খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা  হাইকোর্ট। সব পক্ষের কথা না শুনে কী ভাবে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ?  এমন প্রশ্ন তুলে বাসিন্দারা বলছেন, ‘আমরা ৩৫ বছরের বাসিন্দা’। এর প্রতুত্তরে কলকাতা হাইকোর্টের  প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, ‘১০০ বছর থাকলেও কোনও বিষয় নয়।’


কয়েকদিন আগে ওই জমি দখল-মুক্ত করাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় মাঝেরহাটে। জানা যায়, মাঝেরহাট স্টেশনের উল্টোদিকে ২ নম্বর হেলেন কেলার সরণিতে পোর্ট ট্রাস্টের বেশ কিছু জমি আছে। সেই জমিই দখলের অভিযোগ তুলেছিল পোর্ট ট্রাস্ট। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ মতো  দখলমুক্ত করার কাজ শুরু হয়। আইনজীবী ও পুলিশের উপস্থিতি দোকান ভাঙা হতেই সরব হন স্থানীয় বাসিন্দারা। নোটিস ছাড়া সরিয়ে দেওয়া যাবে না বলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।নোটিশ ছাড়া সরানো যাবে বলে দাবি করতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে আগেই মাঝেরহাটে পোর্ট ট্রাস্টের  জমি খালি করার দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। সিঙ্গেল বেঞ্চ সেই জমি খালি করার নির্দেশও দিয়েছিল।

তবে খালি করতে গেলেই বাঁধে বিপত্তি।সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন ওই এলাকার বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি ছিল। আপাতত জমি দখল মুক্ত করার কাজে কোনও রকম স্থগিতাদেশ দেয়নি উচ্চ আদালত।  শুক্রবার ফের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা শুনবে।অভিযোগ উঠেছে, বন্দরের জমিতে একাধিক দোকান থেকে শুরু করে পার্টি অফিস তৈরি হয়েছে। তাদের দাবি, সেখানে হাসপাতাল তৈরি করা হবে। এই আর্জির ভিত্তিতে হাইকোর্টের তরফ থেকে জমি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, সব পক্ষের কথা না শুনে কীভাবে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ নির্দেশ দিল? বাসিন্দারা বলেন, আমরা ৩৫ বছর ধরে এখানে থাকছি। সেকথা শুনে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম পাল্টা বলেন, ‘১০০ বছর থাকলেও  কোনও বিষয় নয়’।  শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।