নিজাম প্যালেসে অভিযান ‘অধীর বিরোধী’ গোষ্ঠীর, প্রকাশ্যে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব

আরজি কর মামলায় সিবিআইয়ের উপর চাপ বাড়াতে বুধবার দুপুরে নিজাম প্যালেসে অভিযান চালালো বড়বাজার সাংগঠনিক জেলা কংগ্রেস। এর জেরে সিবিআই দপ্তরের সামনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে আসে কংগ্রেসের অন্তর্কলহ। কর্মসূচির ডাক দেওয়ার পরেই প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তারা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোনও আন্দোলন করছেন না এবং তা সমর্থনও করছে না।

আরজি কর মামলায় দ্রুত তদন্তের দাবি তুলে সিবিআইয়ের উপর চাপ তৈরির লক্ষ্যে বড়বাজার সাংগঠনিক জেলা কংগ্রেস কমিটির তরফে নিজাম প্যালেসে অভিযানের চালানো হল। এই অভিযানের মূল স্লোগান ছিল, ‘সেটিং ছেড়ে বিচার দাও, না হলে সিবিআই ফিরে যাও।’ কংগ্রেস নেতারা জানান যে, ৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের কাছে আরজি কর কাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতির নথি পেশ করবে সিবিআই। তার আগের দিন সিবিআইকে হুঁশিয়ারি দিতে নিজাম প্যালেস অভিযান চালানো হয়েছে। কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রবীণ রাজনীতিক প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক, যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সহ-সভাপতি রোহন মিত্র সহ আরও অনেকে।

এই কর্মসূচির ডাক দেওয়ার পরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা, আপনারা জানেন আরজি কর-কাণ্ডে মহামান্য কলকাতা হাই কোর্ট এবং সর্বোপরি সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ মতো এবং তত্বাবধানে সিবিআই এই তদন্ত করছে। কলকাতা পুলিশ তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছে বলে আমরা বিশ্বাস করি, বাংলার মানুষের এখন শেষ ভরসা সিবিআই। আমরা সাম্প্রতিক ঘটনায় আশাবাদী যে, সিবিআই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করবে। তাই পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি আপাতত হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের কথা মাথায় রেখে, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোনও আন্দোলন করছে না এবং কোনও আন্দোলনকে সমর্থন করছে না।’


যদিও এদিন অভিযানে অংশ নিয়ে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রদেশ নেতৃত্ব কী বলেছে সে বিষয়ে জানি না। বড়বাজার জেলা কংগ্রেসের ডাকে এই অভিযান করা হয়েছে। সেই অভিযানেই আমরা শামিল হয়েছি। কারণ এর আগে, বহু ক্ষেত্রে সিবিআই যে সব মামলার তদন্তভার নিয়েছে তার অধিকাংশেরই কোনও সুরাহা হয়নি। আরজি করের ক্ষেত্রে যেন এরকম ঘটনা না ঘটে তাই সিবিআইয়ের উপর চাপ বাড়াতেই আজকের এই অভিযান।’

উল্লেখ্য, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে অনেকেই নিজেদের মতো করে আন্দোলনে শামিল হচ্ছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি থেকে শুরু করে রাজ্যের শাসকদলও ‘বিচার চাই’ স্বর তুলেছে। এর আগে ২১ আগস্ট অধীর বিরোধী শিবিরের কংগ্রেস নেতারা লালবাজার ঘেরাও কর্মসূচি করেছিলেন। সেই কর্মসূচিতে অধীর–ঘনিষ্ঠদের দেখা যায়নি। তবে সেই সময় প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। কিন্তু এবার নিজের দলের কর্মসূচির বিরুদ্ধেই বিবৃতি জারি করল প্রদেশ কংগ্রেস।