নিজস্ব প্রতিনিধি: অশান্ত বাংলাদেশ। পতন হয়ে গিয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের। কিন্তু সেনা নিয়ন্ত্রণ সত্বেও হিংসা অব্যাহত পদ্মাপারে। একের পর এক হামলা হয়ে চলেছে বাংলাদেশে।
এই তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেও চালু হয়ে গেল ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক। বিগত কয়েকদিন ধরেই কাঁটাতারের দু’প্রান্তে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল বাণিজ্য। যা মঙ্গলবার থেকে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে। অবশ্য বিএসএফের কড়া নজরদারি চলছে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে। সেই কড়া পাহারার মধ্যেই এদিন থেকে ঘোজাডাঙা সীমান্তে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে রফতানি চলছে। এপার বাংলার ঘোজাডাঙার ওপারেই রয়েছে বাংলাদেশের সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর। বাংলাদেশের শিল্পের জন্য ভারত থেকে কাঁচামাল যায় এই সীমান্ত দিয়ে।
সেক্ষেত্রে বুধবারও উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়িগুলোর যাতায়াত চলছে। শুধু তা-ই নয়, ভারতে কাজে আসা বাংলাদেশিরা একরাশ উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে নিজের দেশে ফিরছেন। আবার বাংলাদেশ থেকে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে এপারে আসছেন অনেকে। অবশ্য বাংলাদেশের ভেতরে এখন যাত্রীদের নিয়ে বাস চলাচল করছে না। উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তেই নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বেনাপোল হয়ে দেশে ফিরছেন তাঁরা। পেট্রাপোল সীমান্তে এদিনও কড়া নজরদারি চালিয়েছে বিএসএফ।
ওদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের হিলি সীমান্ত দিয়ে দু’দেশের মানুষের যাতায়াত চলছে। মঙ্গলবার থেকেই যাতায়াত শুরু হয়েছিল। বুধবারেও বাংলাদেশে আটকে থাকা ভারতীয় লরি হিলি সীমান্ত হয়ে দেশে ফিরছে। এদিনও একের পর এক ভারতীয় লরি বাংলাদেশ থেকে ফিরেছে। এমনকী, বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য লঙ্কা, পেঁয়াজের মতো যে সব কাঁচামাল সীমান্তে আটকে ছিল, তাও পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশে। অন্যদিকে, এদিন মালদার ইংরেজবাজারের মহদিপুর স্থল বন্দর থেকে রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। মালদা জেলায় ১৭৩ কিলোমিটার বিস্তৃত বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স।
প্রসঙ্গত, হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই একের পর এক হামলা হয়ে চলেছে বাংলাদেশে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই দেশ ছেড়েছেন পূর্বতন হাসিনা মন্ত্রিসভার একাধিক মন্ত্রী। দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশের সদ্য প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এমনকী, দেশ ছেড়েছেন হাসিনা সরকারের সদ্য প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রী, সমবায়মন্ত্রীও। শুধু তা-ই নয়, ইতিমধ্যেই হাসিনা মন্ত্রিসভার একাধিক মন্ত্রীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। গতকালই দেশ ছাড়ার সময় ঢাকা বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয় হাসিনা সরকারের সদ্য প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই বেপাত্তা ছিলেন তিনি। দেশ ছাড়তে গিয়ে আটক হন হাসিনা সরকারের ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকও।