অভিষেক রায়, খড়গপুর, ২ জুলাই: খড়্গপুরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি ভেঙে সেই জায়গায় বহুতল তৈরির চেষ্টার অভিযোগ উঠল। বাড়ি ভাঙার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অন্যতম অভিযুক্ত জগদীশ ঝাওয়ার। পুরপ্রধান জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
খড়গপুর পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের নিউটাউন এলাকায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (আরবান)-র একটি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে এই বাড়িটি সুজাতা হাজরার নামে বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০২১ সালে বাড়িটি তৈরি হয়। এই বাড়িটি যে জমির উপর তৈরি, সেটি দুই ভাই সুকান্ত ও সুশান্ত হাজরা বিক্রি করে দেন। ক্রেতাদের অন্যতম জগদীশ ঝাওয়ার জানান, এই জমির উপর তাঁরা ব্যবসায়িক স্বার্থে কোনও বহুতল তৈরি করবেন না। তাঁরা চার বন্ধু মিলে এই জমি কিনেছেন। এই জমির উপর নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বহুতল তৈরি করবেন। জগদীশ স্বীকার করেন, তাঁরা জমির এক কোণে থাকা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়িটি ভেঙেছেন।
এলাকার কাউন্সিলর জয়দীপ বসু বলেন, এই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ঝামেলা চলছে। ঝামেলা মেটাতে বারকয়েক দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। হঠাৎই শুনলাম, ওই জমি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। ওই জমির উপরে থাকা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়িটি ভাঙ্গা হয়েছে। খবর পেয়ে আমি এলাকায় যাই। আমি দেখতে পাই, জমির এক কোণে থাকা সরকারি বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমি বিষয়টি পুরপ্রধানকে জানিয়েছি। ২০২১ সালে বাড়িটি উপভোক্তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। জয়দীপ বলেন, আগে কেন বিষয়টি দেখা হয়নি, সেই ব্যাপারে পুরপ্রধান আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন। এতবড় ওয়ার্ডের প্রতিটি কোণে নজরদারি করা সবসময় সম্ভব হয় না।
পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (আরবান) -র নিয়ম অনুযায়ী, বাড়ি তৈরি করে উপভোক্তার হাতে তুলে দেওয়ার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত সেই বাড়ি বিক্রি করা যায় না। এই ক্ষেত্রে পাঁচ বছর হয়নি। আমরা আরও খতিয়ে দেখছি। উপভোক্তা নিয়ম অনুযায়ী না চললে পুরসভার পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি ভেঙে বহুতল তৈরির এই চেষ্টা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, পুরপ্রধান সারা শহরে অবৈধ বহুতল খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাঁর নজরে বিষয়টি এলে খুশি হব। এর আগে খড়গপুর শহরে বিশেষত ইন্দা এলাকায় বহু অবৈধ বহুতল তৈরি হয়েছে। সেদিকেও পুরপ্রধান নজর দেবেন আশা করছি।