নিজস্ব প্রতিনিধি— বাংলায় বামেদের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘রাজ্যের মানুষ এবং বামপন্থী কর্মী-সমর্থকদের উপর আমার ভরসা রয়েছে৷ বামফ্রন্ট বাদ দিয়েও কংগ্রেস, আইএসএফ আসবে৷ তাছাড়াও তৃণমূল এবং বিজেপির দুর্নীতি এবং বিভাজনের বিরুদ্ধে যে মানুষ রয়েছেন, তাঁরা দেশ রক্ষা করতে, সংবিধান রক্ষা করতে আমাদের সংসদে পাঠাবেন৷’ বামেরা কি পারবে চলতি লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্য থেকে খাতা খুলতে? এই প্রশ্নের উত্তরে মহম্মদ সেলিম হঁ্য বা না কোনও কিছুই বলেননি৷ তবে যেটা বললেন, তা হল, অনেক নতুন কর্মী বামেদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন৷ ভালো ফল না হলে তাঁদের কথা ভেবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের যে খারাপ লাগবে, তা অবশ্য, গোপন করেননি তিনি৷ এই প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘ক্রিকেটে কোনও দল হারলে তাদের প্লেয়ারদের দেখলে আমার খারাপ লাগে না৷ কিন্ত্ত প্রথম যাঁরা মাঠে গিয়েছেন বা টিভির সামনে বসে খেলা দেখছেন, তাঁদের মুখগুলো দেখলে খারাপ লাগে৷’ উল্লেখ্য, পরিস্থিতি কিন্ত্ত এতটা প্রতিকূল ছিল না বামেদের কাছে৷ ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্য থেকে সংসদে গিয়েছিলেন বামেদের ১৫ জন প্রতিনিধি৷ কিন্ত্ত পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকে৷
২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে সেই সংখ্যা কমে হয় ২৷ কিন্ত্ত গত লোকসভা নির্বাচনে বামেরা একজনও প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠাতে পারেনি৷ সিপিএমে সাধারণত রাজ্য সম্পাদকরা ভোটে প্রার্থী হন না৷ এক্ষেত্রে অবশ্য ব্যতিক্রমীও রয়েছে৷ সূর্যকান্ত মিশ্র সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক থাকাকালীন ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন নারায়ণগড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে৷ রাজ্য সম্পাদক পদে থেকে সেলিম এবার লড়ছেন লোকসভায়৷ সিপিএমের সাংগঠনিক দৈনতা এতটাই প্রবল যে, খোদ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদককে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে৷ কেন এমন হল? এর জন্য কি দলের সাংগঠনিক ক্ষয়িষ্ণুতাই দায়ী? এই প্রশ্নের উত্তরে সেলিম বলেন, ‘আসলে লড়াইটা সামনে থেকে লড়তে হয়৷ মাঠে নেমেই অধিনায়কত্ব করতে হবে৷ নন-প্রেয়িং ক্যাপ্লেন বলে কিছু হয় না৷’ মুর্শিদাবাদ লোকসভায় সংখ্যালঘু ভোটাররাই সংখ্যাগরিষ্ঠ৷ সে কারণেই সেলিম মুর্শিদাবাদ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন? এক্ষেত্রেও সেলিমের সাফ জবাব, ‘যখন আমি ২০০৪ সালে কলকাতা উত্তর-পূর্বে প্রার্থী হয়েছিলাম, তখন লেখা হয়েছিল, মহম্মদ সেলিম কেন কলকাতায় প্রার্থী হচ্ছেন? মুর্শিদাবাদ বা মালদায় নয় কেন? আবার আমি যখন মুর্শিদাবাদে প্রার্থী হলাম, তখন বলা হচ্ছে, কলকাতায় নয় কেন? আসলে দল দাঁড়াতে বলেছে, সে কারণেই আমি প্রার্থী হয়েছি৷’